ঈদ পর্যন্ত চলবে ওএমএস কর্মসূচি

শুকলাল দাশ | বৃহস্পতিবার , ৬ এপ্রিল, ২০২৩ at ৫:১২ পূর্বাহ্ণ

রমজানে চালের বাজার স্থিতিশীলতা রাখতে সরকার খাদ্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে নগরী ও জেলায় চালু রেখেছে ওএমএস কর্মসূচি। রমজানে গরীব ও অসহায় মানুষের কষ্ট লাঘবে এই কর্মসূচি ঈদ পর্যন্ত চলবে বলে খাদ্য অধিদপ্তর থেকে জানানো হয়েছে। প্রতি বছর রমজানে ওএমএস কর্মসূচি বন্ধ থাকলেও এ বছর সরকার চালের বাজার স্থিতিশীলতা রাখতে খাদ্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে সারাদেশের মতো চট্টগ্রামেও খোলা বাজারে চাল ও আটা বিক্রি চালু রেখেছে। নগরীতে একজন ক্রেতা ট্রাক কিংবা ডিলারের নির্দিষ্ট দোকান থেকে ৩০ টাকা দামে ৫ কেজি চাল ও ২৪ টাকা দামে ৫ কেজি আটা ক্রয় করতে পারছেন বলে জানান চট্টগ্রাম জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আবদুল কাদের।

জেলা খাদ্য অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে, প্রতিদিন নগরীতে ট্রাক ও দোকানে ৫৯ মেট্রিক টন চাল ও ২১ মেট্রিক টন আটা বিক্রি করা হচ্ছে। অপরদিকে প্রতিদিন ১৫ উপজেলায় ৫৯ মেট্রিক টন চাল বিক্রি করা হচ্ছে। এই কর্মসূচি উচ্চ মূল্যের বাজারে ব্যাপক প্রভাব রাখছে।

নগরী ও জেলায় প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে চাল ও আটা বিক্রি করা হলেও কিছু কিছু পয়েন্টে দেখা যাচ্ছে চাল ও আটার পরিমাণ থেকে ক্রেতা বেশি। ট্রাকের পয়েন্টগুলোতে সকাল থেকে সাধারণ ক্রেতাদের দীর্ঘ ভিড়। বাজার মূল্যের চেয়েও অর্ধেকের কম দামে ভালো মানের চাল ও আটা পাওয়ায় ক্রেতাদের এই ভিড় বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

এই ব্যাপারে চট্টগ্রাম জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আবদুল কাদের আজাদীকে বলেন, চট্টগ্রাম মহানগরী ও জেলায় রমজানেও ন্যায্যমূল্যের বিশেষ ওএমএসের চাল এবং আটা বিক্রি কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এই কার্যক্রমের আওতায় প্রতি ট্রাকে ২ মেট্রিক টন করে প্রতিদিন নগরীতে ১৪টি ট্রাকের মাধ্যমে ২৮ মেট্রিক টন চাল বিক্রি করা হচ্ছে। পাশাপাশি আমাদের নির্ধারিত ডিলারের মাধ্যমে নগরীর ১৯টি পয়েন্টে দোকানে দেড় মেট্রিক টন করে চাল এবং ১ মেট্রিক টন করে আটা বিক্রি করা হচ্ছে। একজন ক্রেতা খোলা ট্রাক থেকে ৩০ টাকা দামে ৫ কেজি চাল কিনতে পারছেন। এছাড়া ডিলারের দোকান থেকে ৩০ টাকায় ৫ কেজি চাল ও ২৪ টাকায় ৫ কেজি আটা কিনতে পারছেন। একই কর্মসূচি পৌরসভা এবং উপজেলাগুলোতেও চলমান আছে। উপজেলা পর্যায়ে প্রতিটিতে ৫৯ মেট্রিক টন চাল বিক্রি করা হচ্ছে।

প্রতিদিন নগরীতে ১৬ হাজার পরিবার ও জেলায় ১২ হাজার পরিবারসহ মোট ২৮ হাজার পরিবার ন্যায্যমূল্যের বিশেষ ওএমএসের চাল এবং আটা পাচ্ছেন। চাল এবং আটার বাজারে খবর নিয়ে জানা গেছে, ওএমএস কর্মসূচির আওতায় যে চাল প্রতি কেজি ৩০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে সেই চাল খোলা বাজারে ৬০ টাকা। অপর দিকে ওএমএস কর্মসূচির আওতায় ২৪ টাকার আটা খোলা বাজারে ৬৩ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজার মূল্য থেকে অর্ধেকেরও কম দামে ভালো মানের আটা ও চাল বিক্রির কারণে ওএমএসের ট্রাক ও দোকানে ক্রেতাদের ভিড় বাড়ছে বলে জানান ডিলাররা।

সরেজমিনে নগরীর বেশ কয়েকটি পয়েন্টে গিয়ে দেখা গেছে, ওএমএস কর্মসূচির চাল ও আটা কিনতে মানুষের সেই ভোর থেকে অপেক্ষা শুরু হয়। দিন দিন সরকারের এই ন্যায্যমূল্যের চাল ও আটা কিনতে খোলা ট্রাকের সামনে গরীবসাধারণ মানুষের লাইন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। ৩০ টাকা কেজির চাল এবং ২৪ টাকা কেজির আটা কিনতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকছেন মানুষ। প্রতিটি ট্রাকে ২ মেট্রিক টন (২ হাজার কেজি) চাল বিক্রি হচ্ছে। একজন ক্রেতা ৫ কেজি করে চাল নিলে প্রতি ট্রাক থেকে ৪শ জন ক্রেতা চাল পাচ্ছেন। তারপরও কিছু কিছু মানুষকে ফিরতে হচ্ছে খালি হাতে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রাইভেট কারে যমজ সন্তানের জন্ম!
পরবর্তী নিবন্ধধ্বংসস্তূপে দিনভর ভালো কাপড় ও পোড়া লোহার খোঁজ