ইস্টার্ন রিফাইনারিতে অগ্নিকাণ্ড

অল্পের জন্য বড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা ঘটনা তদন্তে সাত সদস্যের কমিটি

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ১৬ অক্টোবর, ২০২২ at ৫:৩৫ পূর্বাহ্ণ

নগরীর পতেঙ্গায় দেশের একমাত্র তেল শোধনাগার ইস্টার্ন রিফাইনারিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে প্রতিষ্ঠানটির পাইপ লাইনে আগুন লাগে। রিফাইনারির নিজস্ব অগ্নিনির্বাপণ কর্মী, নৌবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের সমন্বিত চেষ্টায় দুপুর পৌনে ১টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। অগ্নিকাণ্ডে তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে। যদিও একটু অবহেলা হলেই বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যেত জানিয়ে ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক (ডিএডি) আবদুল হামিদ মিয়া আজাদীকে বলেন, আগুন লাগার স্থান থেকে আনুমানিক ২০০ গজ দূরেই তেলের বিশাল বড় বড় ট্যাংক। একটু অবহেলা হলেই বড় ধরনের বিপদের আশঙ্কা ছিল। তবে আল্লাহর অশেষ কৃপায় বড় ধরনের বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া গেছে। এদিকে, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তদন্তে সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে ইস্টার্ন রিফাইনারি কর্তৃপক্ষ। আজ তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা রয়েছে।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আগুন লাগার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের বন্দর, পতেঙ্গা, ইপিজেড, আগ্রাবাদ এই ৪টি ইউনিটের কর্মীরা ৭টি গাড়িযোগে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। এর আগে রিফাইনারির নিজস্ব কর্মীদের পাশাপাশি দুটি গাড়িযোগে নৌবাহিনীও আগুন নির্বাপনের কাজে নামে। সমন্বিত প্রচেষ্টায় ১২টা ২৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে জানিয়ে ঘটনাস্থলে যাওয়া ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক আবদুল হামিদ মিয়া বলেন, আর ১২টা ৪৫ মিনিটে আগুন পুরোপুরি নির্বাপন সম্ভব হয়। যেখানে আগুন লেগেছিল, ওই অংশে একসাথে ৭০-৮০টা ছোট ছোট পাইপ ছিল। এটা একটা জংশনের মতো। পাশেই তেলের একটা পিটে আগুন লাগে। তবে ক্ষয়ক্ষতি ও আগুনের কারণ তদন্ত সাপেক্ষ বলে জানান ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা। ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. লোকমান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, মিটারিং সেকশনের পাশের একটি পিটে আগুন লাগে। আগুনে তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। অল্প সময়ের মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। জিএম (অপারেশন্স অ্যান্ড প্ল্যানিং) রায়হান আহমাদকে প্রধান করে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তদন্তে সাত সদস্যের একটি কমিটি করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন পেলেই কেন-কীভাবে আগুন লেগেছিল, তা জানা যাবে।
অগ্নিকাণ্ডের পর দুপুরে ইস্টার্ন রিফাইনারি পরিদর্শন করেন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন-বিপিসি’র পরিচালক (অপারেশন্স ও পরিকল্পনা) খালিদ আহম্মেদ। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, সিসিটিভি আছে এখানে। অন্যান্য যারা প্রত্যক্ষদর্শী আছেন, এখানে তাদের সাথে কথাবার্তা বলে দ্রুততম সময়ের মধ্যে কারণ উদঘাটন করে আমাদের জানাবে। আমরা জানলে আপনাদের জানাব।
ওয়েল্ডিংয়ের কাজের সময় আগুন লাগে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি ইআরএলে এর মূল স্থাপনায় কোনো আগুন নয়। এটি এসপিএম প্রজেক্টে পাইপলাইন টার্মিনাল ফ্যাসিলিটিজ যেটা, ওটার ডেভেলপমেন্ট কাজ চলছিল। টেকনিক্যাল নলেজ যাদের আছে, তারা দেখবেন কেন আগুন লেগেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর কুলিং করার জন্য সার্বক্ষণিক পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে, যাতে উত্তাপজনিত কারণে আবার কোনো ঘটনা না হয়। ইআরএলের কার্যক্রম স্বাভাবিক আছে জানিয়ে খালিদ বলেন, একটা পিটে আগুন লাগে। পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেড এবং ইআরএল এর ফেন্সিং এর মাঝামাঝি অংশে আগুন লাগে। মূল প্ল্যান্ট থেকে অনেক দূরে ঘটনাস্থল।
আগুনে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি জানিয়ে তিনি বলেন, ইআরএল এর নিজস্ব ফায়ার সেফটি ব্যবস্থা খুবই আধুনিক। যখনই কোনো কাজ হয় ইন্টারনাল ফায়ার ফাইটাররা প্রস্তুত থাকেন। ঘটনা ঘটার সাথে সাথে তারা ব্যবস্থা নিয়েছে। ফলে একেবারেই ন্যূনতম ক্ষয়ক্ষতিতে বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে।
প্রসঙ্গত, আমদানি করা জ্বালানি তেল পতেঙ্গায় স্থাপিত সরকারি এই শোধনাগারে পরিশোধনের পর সারাদেশে সরবরাহ করা হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধতিন মাস হাঁকডাক করে ফ্লপ সমাবেশ করেছে বিএনপি
পরবর্তী নিবন্ধমহাকাশে সবচেয়ে উজ্জ্বল আলোর ঝলকানি বিস্মিত জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা