লেবাননের রাজধানী বৈরুতের দক্ষিণাংশের শহরতলীগুলোতে ও হিজবুল্লাহর অন্য শক্তিকেন্দ্রগুলোতে চলিত বছরের সেপ্টেম্বরে কয়েক হাজার পেজার বিস্ফোরণের ঘটনায় ১২ জন নিহত এবং হাজার হাজার মানুষ আহত হন। হিজবুল্লাহ ও লেবাননিজ সরকার উভয়েই এই আক্রমণের দায় ইসরায়েলের ওপর চাপিয়েছে। মূলত হিজবুল্লাহকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যেই অভিনব এই উপায়ে হামলা চালায় ইসরায়েল। ১৭ সেপ্টেম্বর ঘটনার সময় হাজার হাজার হিজবুল্লাহ সদস্যের যোগাযোগের প্রধান অবলম্বন পেজারগুলো একসঙ্গে সঙ্কেত দিয়ে একটি বার্তা আসার ইঙ্গিত দেয় ও বিস্ফোরিত হয়। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে কেউ দূর থেকে ডিভাইসগুলোতে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে, যার ফলে আহত হয়েছেন এগুলোর আশপাশে থাকা লোকজনও।
সম্প্রতি বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ পেজার বিস্ফোরণ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে বলা হয়েছে, ইসরায়েলিদের নজরদারি এড়াতে চলতি বছরের শুরুর দিকে এই পেজারগুলো ব্যবহার শুরু করে হিজবুল্লাহ। কিন্তু নিরাপদ ভেবে ব্যবহার করা সেই পেজারগুলোই মৃত্যু ফাঁদ হয়। হিজবুল্লাহকে ধ্বংস করার ইসরাইলি ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে চলতি বছরের শুরুতে ক্রয়াদেশ অনুযায়ী লেবাননে পৌঁছানো পেজারগুলোতে বিশেষ ধরনের ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়। খবর বিডিনিউজের।
যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে মোবাইল ব্যবহার না করা হিজবুল্লাহর সদস্যদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পেজার বিক্রির জন্য প্রথমে ভুয়া অনলাইন স্টোরের পেজ তৈরি করা হয়। হিজবুল্লাহর বিশ্বাস অর্জন করতে এসব পেজ থেকে নিয়মিত পোস্টও দেওয়া হতো। হিজবুল্লাহকে ফাঁদে ফেলতে এক বছর ধরে এই কার্যক্রম চালায় ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ। তাদের যে এজেন্টরা পেজারগুলি তৈরি করেছিল তারা এমন একটি ব্যাটারি ডিজাইন করেছিল যার মধ্যে একটি ছোট খোপে শক্তিশালী প্লাস্টিক বিস্ফোরক লুকিয়ে রাখা যায়। এটি এতোটাই অভিনব কায়দায় করা হয়েছিল যেটা খালি চোখে তো নাই, এক্স–রে মেশিনও ধরা যায়নি।