পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তেহরিক–ই–ইনসাফ (পিটিআই) দলের চেয়ারম্যান ইমরান খানের ‘জুডিসিয়াল রিমান্ড’ আরও ১৪ দিন বাড়িয়েছে পাকিস্তানের একটি আদালত। ইমরান ও অন্যান্যদের বিরুদ্ধে অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট এর অধীনে হওয়া মামলাগুলোর (সাইফার মামলা) শুনানির জন্য সমপ্রতি গঠিত বিশেষ আদালত গতকাল ইমরানকে ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কারা হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বলে তার আইনজীবী জানিয়েছেন। খবর বিডিনিউজের।
আইনজীবী নাঈম পাঞ্জুথা জানিয়েছেন, ইমরান যে কারাগারে বন্দি আছেন সেই অ্যাটক কারাগারেই সাইফার মামলার শুনানি করবে বিশেষ আদালত। মঙ্গলবার রাতে এক ঘোষণায় পাকিস্তানের আইন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কারাগারে এ মামলার বিচার চালানো নিয়ে আইন ও বিচার মন্ত্রণালয়ের ‘কোনো আপত্তি’ নেই।
গতকাল বিশেষ আদালতের বিচারক আব্দুল হাসনাত মুহাম্মদ জুলকারনাইন এ মামলার শুনানির জন্য অ্যাটক কারাগারে গেছেন, সেখানে কারাগারের ডেপুটি সুপারের দপ্তরে এ শুনানি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ইমরানকে বুধবার সাইফার মামলার শুনানির জন্য হাজির করার নির্দেশ দিয়েছিল বিশেষ আদালত।
ইসলামাবাদের জেলা বিচারিক আদালত ৫ আগস্ট তোষাখানা মামলার রায়ে ইমরানকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়ার পর থেকে এই অ্যাটক কারাগারেই আছেন পিটিআই চেয়ারম্যান। মঙ্গলবার ইসলামাবাদ হাই কোর্ট (এএইচসি) এই সাজা স্থগিত করে বলেছে, ইমরানকে জামিনে মুক্তি দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট এর অধীনে রিমান্ডে থাকায় ইমরান (৭০) কারাগার থেকে বের হতে পারছেন না।
পাকিস্তানের প্রভাবশালী সামরিক বাহিনীর সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ার পর ২০২২–এর এপ্রিলে পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে হেরে ক্ষমতা হারান ইমরান। ক্ষমতা হারানোর পর তিনি যখন তার সমর্থকদের নিয়ে সমাবেশ করার চেষ্টা করছেন তখন তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা দায়ের করা হয়। ক্ষমতায় থাকাকালে তিনি কোনো অন্যায় করেননি বলে দাবি ইমরানের। তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে সবই রাজনৈতিক বিদ্বেষপ্রসূত বলে অভিযোগ তার। ইমরানের সমর্থকদের বিশ্বাস, পাকিস্তানের রাজনীতির ওপর সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণমূলক প্রভাব নিয়ে চ্যালেঞ্জ জানানোর সাহস দেখানোর জন্যই তাদের নেতাকে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে আর তাকে আগামী নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে আদালতকে ব্যবহার করা হচ্ছে। চলতি বছরের নভেম্বরে পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা ছিল, কিন্তু বিভিন্ন জটিলতায় তা আগামী বছরের প্রথম দিক পর্যন্ত পেছাতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তোষাখানা মামলায় পাওয়া সাজা স্থগিত হলেও রায় বাতিল হয়নি, তাই পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামার ক্ষেত্রে ইমরানের বিরুদ্ধে পাঁচ বছরের যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তা তুলে নেওয়ার কোনো কারণ দেখছে না।












