ইত্তেফাক ও আজাদী স্বাধীনতার অবিচ্ছেদ্য অংশ

চট্টগ্রামে দৈনিক ইত্তেফাকের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে বক্তারা

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ২৫ ডিসেম্বর, ২০২১ at ৫:৪১ পূর্বাহ্ণ

দৈনিক ইত্তেফাকের ৬৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় বক্তারা বলেছেন, দৈনিক ইত্তেফাক এবং দৈনিক আজাদী স্বাধীনতার অবিচ্ছেদ্য অংশ। এই দুইটি পত্রিকাকে বাদ দিয়ে দেশের স্বাধীনতার ইতিহাস লেখা যাবে না। বাংলাদেশ যতদিন থাকবে, মহান মুক্তিযুদ্ধসহ সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলন সংগ্রামে এই এই দুইটি পত্রিকার ভূমিকা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে। বক্তারা বলেন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, ছয় দফার পক্ষে জনমত সৃষ্টি এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে জাতিকে উদ্বুদ্ধ করার ক্ষেত্রে দৈনিক ইত্তেফাক এবং দৈনিক আজাদী যেভাবে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে তা অতুলনীয়। গতকাল শুক্রবার সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে ৬৯ বছরে দৈনিক ইত্তেফাকের পদার্পণ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বাঙালির মুক্তি সংগ্রাম, স্বাধীনতা ও স্বাধীন দেশে স্বাধীনতা রক্ষার প্রতিটি অধ্যায়ে দৈনিক ইত্তেফাক এবং দৈনিক আজাদী এদেশের গণমানুষের কথা বলেছে। মূলধারার সাংবাদিকতায় সত্যনিষ্ঠকে সমুন্নত রাখতে ইত্তেফাক এবং দৈনিক আজাদী কখনো আপোষ করেনি। নানামুখী নির্যাতন এবং বহু লোভ লালসার ঊর্ধ্বে উঠে মানিক মিয়া এদেশের মুক্তির জন্য নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে মহানায়ক হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে ইত্তেফাকের অপরিসীম ভূমিকা ছিল বলেও বক্তারা উল্লেখ করেন। তারা বলেন, ষাটের দশকের বিভিন্ন সময় যারা ছিলেন তরুণ-কিশোর, তাদের বোধের উন্মোচন হয়েছে বঙ্গবন্ধু, ইত্তেফাক, মানিক মিয়া, সোহরাওয়ার্দী এইসব নাম শুনে। সংবাদপত্রে বস্তুনিষ্ঠতা নয় সত্যনিষ্ঠতাই বড় কথা, এই সত্যনিষ্ঠ যে সংবাদপত্রের উপর পাঠকের আস্থা বাড়ায় ইত্তেফাক তার প্রমাণ। বক্তারা বলেন, দৈনিক ইত্তেফাকের সাথে সকল প্রজন্মের নিবিড় সংযোগ বিরাজমান। স্বাধীনতা পূর্বকাল থেকে ইত্তেফাক পাঠ করে আসছেন এমন প্রবীণরা এখনও সকালে তাদের চায়ের টেবিলে দিন শুরু করেন এই সংবাদপত্র পাঠের মাধ্যমে। তারা বলেন, স্বাধীনতা উত্তরকালে দেশের সমাজ-সংস্কৃতি, বিনোদন, গবেষণা ও চলতি জীবনধারার সাথে অভ্যস্থ দেশের নতুন প্রজন্ম সময়ের বাঁকে বাঁকে ইত্তেফাকের সংবাদসহ বিভিন্ন পাতার একনিষ্ঠ পাঠকে পরিণত হয়েছে। তাদের জীবন চালচিত্র ইত্তেফাকের পাতায় এদেশের বাঙালি জীবনের বৈচিত্র ও সৌন্দর্য নিয়ে প্রকাশ পাচ্ছে। ফলে ঐসব প্রজন্মের আধুনিকতার রুচিকেও ইত্তেফাক বিশ্বস্ততার সাথে ধারণ করে আসছে। অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে দৈনিক ইত্তেফাক এবং মানিক মিয়া যেভাবে জড়িয়ে রয়েছেন তা জাতি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ রাখবে। চট্টগ্রামের দৈনিক আজাদীও একইভাবে দেশের ইতিহাসের অংশ হয়ে রয়েছে। এই দুইটি পত্রিকা পাকিস্তানি শোষণ বঞ্চনার বিরুদ্ধে যেভাবে জাতিকে উদ্বুদ্ধ করেছিল তা অতুলনীয়। তিনি বলেন, চট্টগ্রামের মানুষ সকালে এক কাপ চা এবং বেলা বিস্কুট নিয়ে দৈনিক আজাদী নিয়ে বসেন। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সংবাদপত্র দৈনিক আজাদী দেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে উজ্জ্বল এক নাম বলেও তিনি মন্তব্য করেন। দৈনিক ইত্তেফাক চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান ও চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি সালাহউদ্দিন মো. রেজার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন, দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক, চবি উপাচার্য ড. শিরীণ আখতার, উপ-উপাচার্য (একাডেমি) ড. বেণু কুমার দে, বিজিএমইএ-এর প্রথম সহ-সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, নয়াবাংলা সম্পাদক জিএম এনায়েত উল্লাহ হিরু, সুপ্রভাত বাংলাদেশ সম্পাদক রুশো মাহমুদ, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব সভাপতি আলী আব্বাস, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, সাংবাদিক ম. সামশুল ইসলাম, ওমরগণি এমইএস কলেজের অধ্যক্ষ আ ন ম সরোয়ার আলম, আমরা একুশ চবির সদস্য সচিব মহিউদ্দিন বাদল, বাফা ও বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট এসোসিয়েশনের পরিচালক খায়রুল আলম সুজন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন দৈনিক ইত্তেফাকের চট্টগ্রাম অফিসের স্টাফ রিপোর্টার ড. সৈয়দ আবদুল ওয়াজেদ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনির্যাতন থেকে শিশু সুরক্ষা বিষয়ে কর্মশালা
পরবর্তী নিবন্ধইংরেজদের সাজানো রেঙ্গুনে