ইংরেজী মাধ্যমে ডিজিটাল বিদ্যাপীঠ এসএসবিএইচ

| মঙ্গলবার , ২৮ নভেম্বর, ২০২৩ at ৫:৫৯ পূর্বাহ্ণ

নতুন শিক্ষাক্রমে মূল্যায়নের ক্ষেত্রে থাকছে না কোনো প্রতিযোগিতামূলক নম্বর বা জিপিএভিত্তিক শিখন যাচাই প্রক্রিয়া৷ পরীক্ষাকেন্দ্রিক সনদের পরিবর্তে পারদর্শিতার সনদের ওপর গুরুত্ব দেবার ফলে শিখনকালীন মূল্যায়নের মাধ্যমে বিষয়ভিত্তিক জ্ঞানের পাশাপাশি শিক্ষার্থীর দক্ষতা, মূল্যবোধ এবং দৃষ্টিভঙ্গির কী পরিবর্তন হলো সেটি সামস্তিকভাবে পরিমাপের নির্দেশক নির্ধারণ করা হয়েছে৷

নগরীর অভিজাত পাঁচলাইশ এলাকায় প্রতিষ্ঠিত ইংরেজী ভার্সনে (ন্যাশনাল কারিকুলাম, প্লে থেকে নবম শ্রেণি) ডিজিটাল বিদ্যাপীঠ স্কুল অব সায়েন্স, বিজনেস এন্ড হিউমেনিটিজ (SSBH) সময়ের এই পরিবর্তনের পরিক্রমায় সুপরিকল্পিত ব্যবস্থাপনা ও নতুন কারিকুলামে প্রশিক্ষিত শিক্ষকমন্ডলীর মাধ্যেমে সার্থক পাঠদানের সকল আয়োজন সম্পন্ন করেছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক অনুমোদিত(EIIN-137766) স্কুলটি কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফলের মাধ্যমে অভিভাবকদের কাছে ইতোমধ্যে আস্থার প্রতীকে পরিণত হয়েছে। স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেছেন আন্তর্জাতিক মানের ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ সেন্টার এক্সিকিউটিভ’স কেয়ার-এর প্রতিষ্ঠাতা বিশিষ্ট শিক্ষাউদ্যোক্তা মেহরাব মাসুক এমবিএ (আইবিএ)।

আনন্দের মাঝে শিক্ষা : একজন অভিভাবক সন্তানের ভবিষ্যত গড়তে কেন SSBH-কে বেছে নেবেন? এই প্রশ্নের জবাবে অভিজ্ঞ প্রধান শিক্ষিকা মমতাজ বেগম বলেন, ছোট্টমণিরা শিখবে প্রকৃতি থেকে এবং তা তাদের সহজাত খেলাধূলোর আনন্দে। তাই স্কুল ক্যাম্পাস ঘিরে প্রশস্ত খেলার মাঠ, সবুজ গাছপালার সমারোহের মাঝে আনন্দময় ও সৃজনশীল পরিবেশে হাতেখড়ির সকল আয়োজন রয়েছে এখানে। শিশুবান্ধব সব উপকরণ দিয়ে সাজানো হয়েছে আমাদের প্রতিটি ক্লাসরুম।

ছোট্ট মণিদের কাছে সবচেয়ে মজার হলো মাল্টিমিডিয়ার সাহায্যে ডিজিটাল স্ক্রিনে দারুণসব ছড়া, গান, ছবি ও ডকুমেন্টারি উপভোগ করা। রং ঝলমল নানা এ্যানিমেশান, পাজল ও ভিডিও ক্লিপের সাহায্যে সে শিখে নিচ্ছে চোখের সামনে জীবন্ত হয়ে ওঠা বর্ণমালা ও সংখ্যার নানা পাঠ। পাঠ্য বিষয়কে হৃদয়গ্রাহী করতে বিজ্ঞান ভিত্তিক ও সামাজিক ফিল্ম এবং ডকুমেন্টরী প্রদর্শনের ব্যবস্থা রেখেছি আমরা। রয়েছে অত্যাধুনিক সাউন্ড সিস্টেম, মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরসহ ডিজিটাল শিক্ষার সব উপকরণ। বাস্তবমুখী শিক্ষালাভের লক্ষ্যে আমরা শিশুদের জন্য প্রতি সপ্তাহে ফ্রুট ডে, টয় ডে, ড্রেস ডে ইত্যাদি নামের বিশেষ ক্লাস রেখেছি যেখানে ফল বা খেলনাটি সম্পর্কে সবাই কিছু বলবে।

গেলো বছরে প্রথম শ্রেণির পর এবছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে নুতন কারিকুলামের প্রচলন হতে যাচ্ছে। নতুন কারিকুলামে শিশুদের জন্য রয়েছে মজার মজার সব তথ্য ও শ্রেণিকার্যক্রম।
নুতন এই শিখন কার্যক্রমকে সফল করতে প্রয়োজনীয় সকল উপকরণ ও পরিবেশ আমাদের স্কুলে রয়েছে। আশা করছি এ বছর গত বছরের চাইতেও উৎসাহ ও আনন্দের সাথে ছোট্টমণিরা তাদের পাঠকে উপভোগ করবে।ফলে মুখস্থবিদ্যার প্রচলিত গন্ডী হতে মুক্তি পেয়ে আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠবে প্রতিটি শিশু যা পরিণত বয়সে তাকে নিয়ে যাবে সাফল্যের শিখরে।

দক্ষ ও মেধাবী শিক্ষক : প্রতিষ্ঠাতা মেহরাব মাসুক জানান, এখানে রয়েছেন প্রথম লেভেলে দক্ষ ও মেধাবী তরুণ শিক্ষক এবং দ্বিতীয় লেভেলে দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞ প্রবীন শিক্ষক। মেধাবী তারুণ্যের স্ফুরণে শিক্ষার্থীরা পাচ্ছে জ্ঞানের গতিপথ। আর প্রবীণ শিক্ষকের দিকনির্দেশনায় আরোহণ করবে সাফল্যের চূড়ায়। পঠিতব্য বিষয়ের উপর প্রস্তুতকৃত পাঠপরিকল্পনা ও পাঠ উপকরণের সমন্বয়ে পাঠদান করেন শিক্ষক। যেমন- গাছের পাতা পড়াতে শিক্ষক সত্যিকারের সবুজ একটি পাতা বা চুম্বক পড়াতে লোহার একটি চুম্বক নিয়ে ক্লাসে প্রবেশ করেন। মোট কথা পুরো ক্লাসটা থিওরী নির্ভর না হয়ে হয় প্র্যাকটিক্যাল ওরিয়েন্টেড। মাল্টিমিডিয়া ক্লাসে অডিও ভিডিও ক্লিপের মাধ্যমে তুলে ধরা হচ্ছে পাঠে কী কী আছে। ফলে সাধারণ মানের শিক্ষার্থীর কাছেও দুর্বোধ্য বলে কোন পাঠ থাকেনা। অপেক্ষাকৃত অনগ্রসর ছাত্র-ছাত্রীদের অতিরিক্ত ক্লাসের মাধ্যমে আত্মবিশ্বাসী করে তোলা হয়। তাই শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়তে হয় না ।

নতুন কারিকুলামের চ্যালেঞ্জ : এসএসবিএইচ স্কুলের অধ্যক্ষ শেখ মো. আব্দুস সেলিম এ প্রসংগে বলেন, আমরা প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই অডিওভিজ্যুয়াল শিখন পদ্ধতি অনুসরণ করে এসেছি যাতে রয়েছে- মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর ব্যবহার করে সহজ এবং গবেষণালব্ধ পদ্ধতিতে এনিমেশন, গেমস, পাজল, স্টোরীর মাধ্যমে পাঠদান, ছাত্র-ছাত্রীদের সৃজনশীল প্রতিভা বিকাশের পাশাপাশি আত্মবিশ্বাসী করে গড়ে তুলতে গ্রুপ ওয়ার্ক, ছাত্র-ছাত্রীরা কতটুকু অর্জন করল তা যাচাই বাছাই করতে ফিডব্যাক ক্লাস, শিক্ষার্থী তাদের অর্জিত জ্ঞান ক্লাসরুমে সকলের সামনে উপস্থাপন করতে প্রেজেন্টেশন ক্লাস। ব্যতিক্রমী এই শিখন পদ্ধতির সুফল ভোগ করে আসছে আমাদের ছাত্রছাত্রীরা।

প্রথমবারেই আমাদের শিক্ষকগণ নতুন কারিকুলামের উপর সরকারী প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন।যেহেতু বর্তমানপাঠক্রম একটি দক্ষতা-ভিত্তিক পাঠ্যক্রম। তাই নতুন শিখন অভিজ্ঞতা অর্জন করাতে গিয়ে নতুন শিখন কৌশল রপ্ত করতে হয়েছে শিক্ষকদের।

খেলাধুলা ও সৃজনশীল কার্যক্রমের মাধ্যমে শিক্ষা প্রদানে উৎসাহ দেওয়ার পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা যেন ক্লাসের পাঠ ক্লাসেই শেষ করতে পারে, যাতে করে বাড়ির কাজ বা হোমওয়ার্ক কমানো সম্ভব হয়,তাও নিশ্চিত করি আমরা।সবশেষে প্রায়োগিক দক্ষতা কতটুকু লাভ করলো তা মূল্যায়ন করেন অভিজ্ঞ শিক্ষকবৃন্দ।আমাদের প্রতিটি ক্লাসে ৩০ থেকে ৪০ জন শিক্ষার্থী থাকায় দলগত কাজ বা মূল্যায়ন সেশন অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়।
আইসিটি ও বিজ্ঞান শিক্ষক বলেন, নতুন এই শিক্ষাক্রমে মুখস্থনির্ভর লেখাপড়ার চর্চা থেকে বেরিয়ে আসবে শিক্ষার্থীরা।শিক্ষাক্রমে তথ্য মনে রাখার ক্ষমতার চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে শিক্ষার্থীর তথ্য বিশ্লেষণ করার ক্ষমতা এবং তথ্য ব্যবহার করে সমস্যা সমাধানের ক্ষমতার উপর। আমরা বিজ্ঞানের প্রতিটি ক্লাসে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট তথ্য তুলে ধরি এবং প্রাসংগিক উপকরণ প্রদর্শন করি।একক ও দলগত কাজে হাতে কলমে বিভিন্ন প্রকল্প উপস্খাপনের মাধ্যমে যে কোন জটিল বিষয় অত্যন্ত উপভোগ্য ও সহজবোধ্য হয়ে ওঠে।

সহশিক্ষা কার্ক্রম : ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডকে প্রচন্ড গুরুত্ব দেয় SSBH। সপ্তাহের প্রতিদিন বিভিন্ন শ্রেণীর জন্য রয়েছে কালচারাল ক্লাস। সংস্কৃতি বিষয়ক শিক্ষকের তত্বাবধানে আবৃত্তি, বিতর্ক, উপস্থিত বক্তৃতা, গান, নাটক ইত্যাদি বিবিধ শিল্পকলার চর্চা করছে ছাত্র-ছাত্রীরা। প্লে গ্রাউন্ডে চলে নিয়মিত ক্রীড়া চর্চা। রয়েছে বাস্কেটবল, ভলিবল ও ব্যাডমিন্টন গ্রাউন্ড।অবসর সময়টুকুতে ফুটবল ও ক্রিকেট খেলায় মেতে উঠে শিশুকিশোররা। ইনডোর গেমসে রয়েছে পুল, কেরম, দাবা, টেবিল টেনিস ইত্যাদি।রয়েছে বয়স্কাউট ও গার্লসগাইড কার্যক্রম। মহান একুশে, স্বাধীনতা ও বিজয় দিবস,শেখ রাসেল দিবস,জাতীয় শোক দিবস,পহেলা বৈশাখ ও বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা সাড়ম্বরে উদযাপনসহ দেশীয় সংস্কৃতির আবহে গড়ে তোলা হয় নুতন প্রজন্মকে। আর মাতৃভাষা বাংলা ও সংস্কৃতি চর্চার উপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয় যাতে নিজের শেকড়কে ভুলে না যায়।

রোবো ও ল্যাংগুয়েজ ক্লাব : কেবল পাঠ্য বিষয়ই নয় নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের গ্লোবাল সিটিজেনরূপে গড়ে তুলতে ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের IELTS,TOEFL, SAT ভূক্ত প্রয়োজনীয় কোর্স সমূহ করিয়ে দেয়া হয় যাতে ভবিষ্যতে দেশ বিদেশে উচ্চশিক্ষার পথ সুগম হয়। এছাড়াও রয়েছে ডিবেট ক্লাব, সায়েন্স ক্লাব ইত্যাদি।
বিশেষ করে রোবোটিকস ক্লাব এখন SSBHএর সেরা আকর্ষণ।ছাত্রছাত্রীরা এখানে নিয়মিত হাতেকলমে দক্ষ প্রশিক্ষকের কাছে রোবট প্রস্তুতির কৌশল শিখছে।

নৈতিক শিক্ষা : SSBH এ নৈতিক এবং ধর্মীয় শিক্ষার উপর বিশেষ জোর দেয়া হয়। ক্লাস ওয়ানে উঠার আগেই আরবির সকল পাঠ শিশুদের শিখানো হয়। সকল ধর্মাবলম্বী ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ধর্মদর্শনপূর্ণ নৈতিকতার পাঠ সিলেবাসভুক্ত রয়েছে।
পরিশেষে স্কুল অধ্যক্ষ শেখ মো. আব্দুস সেলিম বলেন, এটি বন্দর নগরীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ একটি বিদ্যাপীঠ যেখানে অত্যন্ত দক্ষ এবং প্রাজ্ঞ শিক্ষকগণ বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে নিষ্ঠার সাথে পাঠদান করেন নিয়মিত কোর্স প্লান , হোম ওয়ার্ক, অ্যাসাইনমেন্ট, প্রজেক্ট ওয়ার্ক ইত্যাদির মাধ্যমে । মূল্যায়নের জন্য নেয়া হয় ক্লাস টেষ্ট, চ্যাপটার টেস্ট ও মান্থলি টেস্ট। সকল ফলাফল সার্বক্ষণিক জানতে পারেন অভিভাবক। ফিজিক্স,কেমিস্ট্রি ও বায়োলজী ল্যাবে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্য স্বতন্ত্র মাইক্রোস্কোপ, এ্যাপ্রোন, গ্লাভস, বায়োলজিক্যাল স্পেসিমেন সত্যিই বিরল। ইন্টারনেট সংযোগসহ অত্যাধুনিক কম্পিউটার ল্যাব তথ্য প্রযুক্তির সাথে সম্পৃক্ত হতে বিশেষ সহায়ক হবে।তাই আন্তরিক ও নিবিড় পর্যবেক্ষণে পরিপূর্ণ শিক্ষার ফলে SSBH এর শিক্ষার্থীরা আদর্শ মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন উপযুক্ত নাগরিক হয়ে গড়ে উঠবে বলে আমার বিশ্বাস।” প্লে গ্রুপ থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত(ন্যাশনাল কারিকুলাম, ইংরেজী মাধ্যম) ভর্তির বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানতে ২২,পাঁচলাইশ, (চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেইন গেইটের বিপরীতে)- এই ঠিকানায় , fb-School of Science Business & Humanities এবং ০১৮৮১-৫৬৪৪৪০,০১৭১১-০৩৯০৭০ ফোন নম্বরে যোগাযোগ করা যাবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমনোনয়নপত্র নিলেন ৩২ প্রার্থী
পরবর্তী নিবন্ধখাগড়াছড়িতে সরকারি চালবাহী ট্রাকে দুর্বৃত্তের আগুন, চালক দগ্ধ