আশা জিইয়ে রাখল বাংলাদেশ

ক্রীড়া প্রতিবেদক | বুধবার , ২০ অক্টোবর, ২০২১ at ৭:২২ পূর্বাহ্ণ

স্কটল্যান্ডের কাছে হেরে বাংলাদেশের টিকে থাকার ম্যাচ ছিল স্বাগতিক ওমানের বিপক্ষে। স্নায়ুচাপ ছিল টাইগারদের উপর। সে চাপ থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছে তারা। আর তাতে করে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম পর্বের গ্রুপ ‘বি’-তে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ওমানকে ২৬ রানে পরাজিত করতে সমর্থ হয়েছে তারা। আর এতে করে সুপার টুয়েলভের আশাও বাঁচিয়ে রাখতে পারলো বাংলাদেশ। গতকাল প্রথমে ব্যাট করা বাংলাদেশের ১৫৩ রানের বিপক্ষে ওমান ৯ উইকেট হারিয়ে ১২৭ রান তুলতে পারে।
ব্যাটিংয়ের মতো বাংলাদেশের বোলিং সূচনাও হয়েছে বড্ড বাজেভাবে। বাজে বোলিংয়ে প্রথম ওভারে ১২ রান খরচ করেন তাসকিন আহমেদ। একটা উইকেট মিললেও দ্বিতীয় ওভারটা ছিল আরও দৃষ্টিকটু। এই ওভার শেষ করতে ১১টি ডেলিভারি করতে হয় মোস্তাফিজুর রহমানকে। পাঁচটি ওয়াইড দেন তরুণ পেসার। কিন্তু এরপরই যেন পথ হারান বাংলাদেশের বোলাররা। মোস্তাফিজ-মাহমুদউল্লাহ গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ক্যাচ মিস করেন। ১১ ওভারে ওমানের স্কোর ছিল ২ উইকেটে ৮০। এমন অবস্থা থেকে ওমানের জয় খুবই সম্ভব মনে হচ্ছিল। ১২তম ওমানি অধিনায়ক জীসান মাকসুদকে (১২) ফিরিয়ে স্বস্তি আনেন মোস্তাফিজ। পরের ওভারে সাকিব আল হাসান দুর্দান্ত খেলতে থাকা যতিন্দর সিংকে (৪০) ফেরালে ম্যাচের গতিপথ পরিবর্তন হয়ে যায়। এরপর একের পর এক উইকেট তুলে নিয়ে ওমানকে মাথা তুলে দাঁড়াতে দেননি সাকিব, মোস্তাফিজ। স্পিনিং অলরাউন্ডার মেহেদি হাসান গতকাল ভালো বোলিং করেছেন। ওমানের মিডল ও লোয়ার অর্ডার এই তিনজনের বিপক্ষে রীতিমতো ভেঙে পড়ে। তাদের পক্ষে কেশব প্রজাপতি ২১ এবং মো. নাদিম অপ. ১৪ রান করেন। শেষ দিকে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানো ওমান ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১২৭ রানে থামে। বাংলাদেশের হয়ে মোস্তাফিজুর রহমান ৪ ওভারে ৩৬ রান খরচায় নিয়েছেন চার উইকেট। সাকিব চার ওভারে ২৮ রান খরচায় নিয়েছেন তিন উইকেট। মেহেদি একটা উইকেট পেলেও চার ওভারে খরচ করেছেন মাত্র ১৪ রান। তাসকিন ৩১ রান খরচ করে কোন উইকেট পাননি। মো. সাইফুদ্দিন ১৬ রান দিয়ে পান ১টি উইকেট। ব্যাটে ৪২ রান এবং ২৮ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা হন বাংলাদেশের সাকিব আল হাসান।
এর আগে ওমানের বিপক্ষে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করতে নামা বাংলাদেশ শুরুটা ভালো করতে পারেনি। শুরুতেই দুই উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে তারা। কিন্তু তৃতীয় উইকেটে সাকিব আল হাসান ও নাইম শেখের ৮০ রানের দুর্দান্ত জুটি স্বপ্ন দেখাচ্ছিল বাংলাদেশ। যদিও স্বপ্ন শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। মাত্র ৫১ রানে শেষ ৮ উইকেট হারিয়ে ১৫৩ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। ওপেনার লিটন দাস জীবন পেয়েছিলেন। কিন্তু তারপরও সুবিধা করতে পারেননি। ৭ বলে ৬ রান করে যখন ফিরলেন বাংলাদেশের রান তখন ১১। পাওয়ার প্লেতে দ্রুত রান তোলার ছক কষে স্পিনিং অলরাউন্ডার শেখ মাহেদি হাসানকে নামানো হয়েছিল তিনে। মেহেদি সফল হতে পারেননি। ৪ বল খেলে কোন রান না করেই ফিরেছেন। তারপরের জুটিটাই বাংলাদেশকে দেড়শর ওপারে নিয়েছে। তরুণ ওপেনার নাইম শেখ ও সাকিব আল হাসান তৃতীয় উইকেটে ৫৩ বলে তোলেন ৮০ রান। এই দুজন ক্রিজে থাকার সময় বড় সংগ্রহ খুবই সম্ভব মনে হচ্ছিল। কিন্তু দুর্দান্ত খেলতে থাকা সাকিব ১৪তম ওভারে রান আউট হওয়ার পরই পাল্টে যায় ইনিংসের গতিপথ। সাকিব আল হাসান ২৯ বল খেলে ৬টি চারে ৪২ রান করেন। নাইম ৫০ বলে ৩টি চার ৪টি ছয়ে ৬৪ রান করেন। দ্রুত রান তোলার লক্ষ্যে ব্যাটিং অর্ডারের তোয়াক্কা করেনি বাংলাদেশ। মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের আগে পাঠানো হয় নুরুল হাসান সোহান (৩) ও আফিফ হোসেন ধ্রুব (১)। দুজন উইকেটে নেমেই হিট করতে চেয়েছেন। কিন্তু সফল হতে পারেননি একজনও, দুজনই সীমানায় ধরা পড়েছেন। এরপর মুশফিকের (৬) আউটটি ছিল একদমই দৃষ্টিকটু। ফায়াজ ভাটের এক নির্বিষ স্লোয়ারে খোঁচা দিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন তিনি। সাকিব-নাইম জুটি ভাঙার পর বাকিদের কেউই সুবিধা করতে পারেননি। এই দুজন ছাড়া দুই অঙ্কের কোটা পেরুতে পেরেছেন কেবল অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। ১০ বলে একটি করে চার ছয়ে ১৭ রান করেন তিনি। সাইফুদ্দিন কোন রান করতে পারেননি। শেষ দিকে ২ রান করে আউট হন মোস্তাফিজ। ৫২ রানে শেষ আট উইকেট হারিয়ে নির্ধারিত ওভারের শেষ বলে ১৫৩ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। ওমানের হয়ে তিনটি করে উইকেট পেয়েছেন বেলাল খান ও ফায়াজ ভাট। প্রথম রাউন্ডে বাংলাদেশের পরবর্তী ম্যাচ আগামী ২১ অক্টোবর পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে। বাংলাদেশ সময় বিকাল ৪টায় এ খেলা শুরু হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধজুলুস যাবে যে পথে
পরবর্তী নিবন্ধদুদিন পর সেন্টমার্টিন ছাড়লেন আড়াইশ পর্যটক