তায়েব সালেহ – সুদানের শ্রেষ্ঠ কথাসাহিত্যিক এবং আরব বিশ্বের আলোচিত লেখক। প্রধানত লেখালেখি করেছেন আরবিতে। তাঁর রচিত বিখ্যাত উপন্যাস ‘মাওশিম আল হিজরা ইলাশশিমাল’ ত্রিশটিরও বেশি ভাষায় অনূদিত হয়েছে। ইংরেজি অনুবাদটির নাম ‘সিজন অব মাইগ্রেশন টু দ্য নর্থ’। ।
তায়েব সালেহর জন্ম ১৯২৮ সালের ১২ জুলাই সুদানের আল দাব্বাহ শহরের নিকটবর্তী গ্রাম কারমাকোলে। তাঁর পূর্বপুরুষরা কৃষিকাজ করতেন। কেউ কেউ ধর্মীয় শিক্ষকতার সাথে যুক্ত ছিলেন। শৈশবে সালেহ ধর্মীয় শিক্ষা গ্রহণ করেন। পরবর্তী সময়ে কৃষিবিজ্ঞানে লেখাপড়া করেন খার্তুমের গর্ডন মেমোরিয়াল কলেজে। এই কলেজটিই খার্তুম বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হয়। সালেহ বরাবরই ছিলেন প্রতিভাবান ও মেধাবী। ১৯৫২ সালে তিনি লন্ডনে পড়তে যান এবং সেখানেই স্থায়ী হন। লন্ডনে সালেহ অর্থনীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও শিক্ষাবিজ্ঞানে পড়াশোনা করেন। কর্মজীবনের শুরুতে ইংল্যান্ডে লন্ডনভিত্তিক আরবি পত্রিকা ‘আল মাজালা’য় লিখতেন তিনি। পরবর্তী সময়ে বিবিসি’র আরবি বিভাগ, কাতারের দোহায় তথ্য মন্ত্রণালয়ের ডিরেক্টর জেনারেল এবং ইউনেস্কোর প্রতিনিধি হিসেবে উপসাগরীয় অঞ্চলে কাজ করেন। তবে মূলত স্থায়ী ছিলেন ব্রিটেনে। তায়েব সালেহর লেখালেখির শুরু ছোটগল্প দিয়ে। প্রথম প্রকাশিত উপন্যাস ‘উরস-আল-জাইন’ – একটি সরস উপন্যাস। সুদানে উপন্যাসটি নিষিদ্ধ করা হলেও সারা বিশ্বে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। সালেহর বন্ধুরা একটি কমিটি গঠন করে তাঁকে সংবর্ধনা দেয় এবং সম্মাননা হিসেবে সালেহকে বিশ হাজার ইউএস ডলার প্রদান করে। পুরো টাকাটাই সালেহ সুদানের শিল্প সাহিত্য উন্নয়নে ব্যয়ের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তাঁর অন্যান্য প্রকাশিত রচনার মধ্যে উল্লেখযোগ্য : ‘সিজন অব মাইগ্রেশন’, ‘দ্য নর্থ’ ইত্যাদি। ২০০৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি প্রয়াত হন তায়েব সালেহ। সুদানে প্রতি বছর ‘আল তায়েব সালিহ প্রাইজ ফর ক্রিয়েটিভ রাইটিং’ নামে কথাসাহিত্য ভিত্তিক একটি পুরস্কার প্রদান করা হয়।