আরও ১২ লাখ ডোজ টিকা উপহার দিচ্ছে ভারত

আজাদী ডেস্ক | শুক্রবার , ২৬ মার্চ, ২০২১ at ৭:৩৫ পূর্বাহ্ণ

সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার রপ্তানি সাময়িকভাবে স্থগিত করা হলেও ভারত আরও ১২ লাখ ডোজ টিকা উপহার পাঠাচ্ছে বাংলাদেশে, যা আজ শুক্রবার পৌঁছাবে বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আজ স্বাধীনতা দিবসেই ঢাকা আসছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিকালে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডের অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি থাকবেন তিনি। ভারত সরকার এর আগেও ২০ লাখ ডোজ করোনাভাইরাসের টিকা উপহার হিসেবে দিয়েছিল বাংলাদেশকে। খবর বিডিনিউজের।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এনসিডিসির লাইন ডিরেক্টর এবং মুখপাত্র অধ্যাপক মোহাম্মদ রোবেদ আমিন গতকাল বৃহস্পতিবার বলেন, শুক্রবার সকাল ৮টার ফ্লাইটে এবারের উপহারের ১২ লাখ ডোজ টিকা ঢাকায় পৌঁছাবে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তারা জানতে পেরেছেন। এটা গিফ্‌ট হিসেবে আসছে। আমাদের কেনা যে টিকা, এর সঙ্গে এই টিকার কোনো সম্পর্ক নাই। এটা কাল আসবে বলে আশা করা যায়। এটা গ্রহণ করার প্রস্তুতি চলছে।

সেরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে তিন কোটি ডোজ করোনাভাইরাসের টিকা কিনতে গতবছর নভেম্বরে যে চুক্তি হয়েছিল, তার মধ্যে দুই চালানে ৭০ লাখ ডোজ ইতোমধ্যে বাংলাদেশ হাতে পেয়েছে। ভারত সরকার উপহার হিসেবে যে ২০ লাখ ডোজ টিকা এর আগে দিয়েছিল, সেটাও ছিল সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অঙফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা, যা তারা বাজারজাত করছে কোভিশিল্ড নামে। টিকার প্রথম চালান হাতে পাওয়ার পর গত ৭ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে গণ টিকাদান শুরু হয়। প্রায় দেড় মাসে ৫০ লাখের বেশি মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে, যা মোট জনসংখ্যার ৩ শতাংশের মত।
নভেম্বরের চুক্তি অনুযায়ী প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ করে ছয় মাসে তিন কোটি ডোজ টিকা পাওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশের। কিন্তু বিপুল চাহিদা আর বিশ্বজুড়ে টিকার সরবরাহ সঙ্কটের মধ্যে ফেব্রুয়ারির চালানে বাংলাদেশ ২০ লাখ ডোজ পেয়েছে। এর পরের চালান ২৬ মার্চ বা তার পর আসতে পারে বলে এর আগে জানিয়েছিলেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নান। কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে থাকায় নিজস্ব চাহিদার কথা বিবেচনা করে ভারত সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অঙফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার রপ্তানি সাময়িকভাবে স্থগিত রেখেছে বলে খবর এসেছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা রোবেদ আমিন বলেন, আমাদের কেনা যে টিকা, তাতে প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ করে আসার কথা ছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত এসেছে ৭০ লাখ ডোজ। ফেব্রুয়ারির চালানের বাকি ৩০ লাখ এবং মার্চের চালানের ৫০ লাখ টিকার বিষয়ে এখন পর্যন্ত নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না। এই ৮০ লাখ ডোজ টিকার ব্যাপারে এখনও ক্লিয়ার না। আসার কথা ছিল, তা এখনও পাইনি।
টিকা রপ্তানি সাময়িকভাবে স্থগিত করার বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, সংক্রমণ যেহেতু বাড়ছে, সামনের দিনগুলোতে টিকার চাহিদাও বাড়বে। ফলে ভারতের নিজেরই ওই টিকা লাগবে। কর্মকর্তারা বলছেন, এটি একটি সাময়িক পদক্ষেপ। এর ফলে টিকার রপ্তানি আগামী এপ্রিলের শেষ পর্যন্ত বিলম্বিত হতে পারে। কোভ্যাঙের আওতায় যে ১৮০টি দেশ টিকা পাওয়ার কথা, তাদের ক্ষেত্রে ভারতের এ সিদ্ধান্ত প্রভাব ফেলবে। তবে এ বিষয়ে ভারত সরকারের বা সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ার আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি এখনও আসেনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসীতাকুণ্ডে ইউছুপ আলী জামে মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন
পরবর্তী নিবন্ধরাজশাহীতে জয় পেল চট্টগ্রাম