আমার ভাষা আমার অহংকার

সাইফুল্লাহ কায়সার | সোমবার , ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ at ৮:৪৭ পূর্বাহ্ণ

ভাষা সতত বহতা নদীর মতোই প্রবাহমান। সে থামে না। প্রতিকূলতার মধ্যেও সে আপন চলার পথ খুঁজে নেয়। জিন্নাহ যখন রাষ্ট্রভাষা উর্দু করার পায়তারা করে তখন তার প্রতিবাদে বায়ান্নর একুশে ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রভাষা বাংলা করার দাবিতে রাজপথ আমার ভাইয়ের রক্তে রঞ্জিত হয়। আর তারই সূত্র ধরে আমাদের স্বাধীনতা। জন্ম নেয় বাংলাদেশ নামে রাষ্ট্র। ভাষা একটি জাতির পরিচয় বহন করে। আর সে ভাষাটি যদি রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয় তার গুরুত্ব অনেক বেশি। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত পায় আমাদের প্রিয় মাতৃভাষা। একুশে ফেব্রুয়ারির এই দিনটি আন্তজার্তিক ভাষা দিবস হিসেবে পালিত হয় সারাবিশ্বে। স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতি সংঘের অধিবেশনে বাংলায় বক্তব্য রেখে এক নজির স্থাপন করেছেন। তিনি ছিলেন মনে-প্রাণে বাঙালি। বাঙালি চেতনা তাঁর শিরা-উপশিরায় বিদ্যমান। তাইতো তিনি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি।
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন, ‘আগে চাই বাংলা ভাষার গাঁথুনি, তারপর ইংরেজি শিক্ষার পত্তন। ‘ শিশুদের সঠিক ও শুদ্ধভাবে বাংলা শেখার ক্ষেত্রে পাঠ্যবই, শিক্ষক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। দুঃখজনক ব্যাপার হলো বর্তমানে আমাদের অনেকে সঠিকভাবে অনেক বাংলা শব্দ লিখতে পারি না। কিন্তু ইংরেজিতে শব্দ লিখতে পারদর্শী। আমার দৃষ্টিতে সাধারণত এর জন্য দায়ী আমাদের অবিভাবকরাই। ছোটবেলা থেকেই তারা আমাদের ভাষার চেয়েও ইংরেজি ভাষার উপর বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। শিক্ষক রেখেছেন ইংরেজি ভাষা শেখার জন্য। ইংরেজি ভাষা জানা দোষের কিছু নয়। তার আগে নিজের ভাষাকে আগে মূল্যায়ন করতে হবে। আসুন আমার ভাষা আমার অহংকার এই শ্লোগানকে হৃদয়ে লালন করে শুদ্ধভাবে লেখা ও বলা পাকাপোক্ত করি। তাহলেই আমরা বিশ্বের বুকে বাঙালি হিসেবে গর্বিত হবো।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবাংলা ভাষার মূল্যায়ন চাই
পরবর্তী নিবন্ধছেলেহারা শত মায়ের অশ্রু গড়া এ ফেব্রুয়ারি