‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’

স্থিতধী বড়ুয়া | শনিবার , ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ at ১০:২৭ পূর্বাহ্ণ

এই মাস মহান ভাষা আন্দোলনের মাস। বাঙালির জাতীয় জীবনে গুরুত্বপূর্ণ দিনের মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রধান তিনটি দিনের মধ্যে একটি ৫২’র একুশে ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মাতৃভাষা দিবস। অপর দু’টি ৭১’র ২৫ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস এবং ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস। একুশে ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস-আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মাতৃভাষা দিবস এমনিতে হয়নি। তৎকালীন পাকিস্তানের পূর্ব ভূ-খণ্ডের পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক রাজধানী ঢাকার রাজপথে পুলিশের গুলিতে নিহত ছাত্রদের রক্তের বিনিময়ে হয়েছে। ১৯৫২ সালের এইদিন পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসংখ্যা অধ্যুষিত পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের মায়ের ভাষা বাংলা ভাষা রাষ্ট্রভাষা হিসেব স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য রাজপথে আন্দোলনরত ছাত্রদের মিছিলের উপর পুলিশের গুলিতে রফিক, সালাম, বরকত, জব্বারসহ আরো অনেক ছাত্র প্রাণ হারায়। পুলিশের নির্বিচারে গুলিতে আরো ২০-২৫ আহত হয়। ক্ষমতাসীন মুসলিম লীগ সরকার শাসিত তৎকালিন পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক মুখ্যমন্ত্রী নুরুল আমিনের নির্দেশে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্রদের উপর বিনা উস্কানিতে গুলি চালানো হয়। গুলি চালানোর ফলে আন্দোলন প্রশমিত হওয়ার পরিবর্তে অগ্নি স্ফুলিঙ্গের মতো চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। এখনকার মতো উন্নত প্রযুক্তিগত টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা ও উন্নত যাতায়াত ব্যবস্থা না থাকা সত্ত্বেও এই মর্মান্তিক হৃদয়বিদারক হত্যাকাণ্ডের খবর দ্রুতগতিতে সারা পূর্ব পাকিস্তানের শহরাঞ্চল সহ গ্রামে-গঞ্জে ছড়িয়ে পড়ে। ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে ২২ ও ২৩ তারিখ সারা পূর্ব পাকিস্তান ব্যাপী মারাত্মক হরতাল পালিত হয়। ২২ তারিখ পুলিশের গুলিতে শফিউরসহ অনেকে হতাহত হয়। সর্বত্র ছাত্র সমাজ প্রতিবাদমুখর হয়ে রাস্তায় নেমে আসে। আপামর জনসাধারণ ছাত্রদের সাথে প্রতিবাদ মিছিলে সংহতি প্রকাশ করে। আমি তখন চট্টগ্রাম মিউনিসিপ্যাল মডেল হাইস্কুলে ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র হিসেবে প্রতিবাদ মিছিলে অন্যান্য ছাত্রদের সাথে অংশগ্রহণ করি। ডিসি হিলে চট্টগ্রামে জেলা প্রশাসক সাহেবের বাসভবনে ঘেরাও কর্মসূচিতে বড়দের সাথে আমরা স্কুলের ছাত্ররাও যোগদান করি। গ্রামাঞ্চলে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীও ছাত্রদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে। স্বতঃস্ফূর্তভাবে এ হরতাল সারা পূর্ব পাকিস্তানে পালিত হয়। সব শ্রেণিপেশার মানুষ এতে সামিল হন। পাকিস্তান সরকার বাঙালির ন্যায্য প্রাণের দাবি রাষ্ট্রভাষা ‘বাংলা’কে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিবর্তে আন্দোলন দমনের জন্য বিভিন্ন পন্থায় চেষ্টার কোনো ত্রুটি রাখেনি। সরকার এই আন্দোলন ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য সোজা পথ পরিহার করে বক্র পথ অবলম্বন করতেও দ্বিধাবোধ করেনি। পূর্ব বাংলার পাকিস্তানের ধর্মভীরু মুসলমানদের ইসলামের পবিত্র ভূমি সৌদি আরবের আরবী ভাষার প্রতি সহজাত দুর্বলতার সুযোগের সদ্ব্যবহার করে আরবী হরফে বাংলা লেখা প্রবর্তনেরও চেষ্টা করা হয়। বাঙালির জাতীয় সংহতি দুর্বল করে দেওয়ার উদ্দেশ্যে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী আরবী হরফে বাংলা লেখার এই উদ্যোগ গ্রহণ করে। এই ব্যাপারে প্রখ্যাত ভাষাবিদ ড. মুহাম্মদ খুদরত-ই-খোদাকে কাজ করার জন্য প্রস্তাব দিলে তিনি এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। যার কারণে সর্বজন শ্রদ্ধেয় প্রখ্যাত এই ভাষাবিদকে দেশদ্রোহীতার অপবাদ দিতেও তৎকালীন ক্ষমতাসীন মুসলিম লীগ সরকার কুণ্ঠাবোধ করেনি। পরিশেষে পাকিস্তান সরকার নৈতিক পরাজয় স্বীকার করে ১৯৫৬ সালে ২৯ ফেব্রুয়ারি উর্দুর সাথে বাংলাকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হয়।
এখানে উল্লেখ করতে হয় যে, ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট দ্বিজাতির তত্ত্বের ভিত্তিতে মাঝখানে প্রজাতান্ত্রিক ভারত রাষ্ট্র দ্বারা ১২০০ মাইল দূরত্বের ব্যবধানে শুধুমাত্র ধর্মের ভিত্তিতে উপমহাদেশের দু’টি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চল নিয়ে পাকিস্তান নামক রাষ্ট্রের জন্ম হয়। উভয় অংশের মধ্যে একমাত্র ধর্ম ছাড়া সাংস্কৃতিক, ভৌগোলিক ও ভাষাগত দিক থেকে মৌলিক অনেক পার্থক্য ছিল। পাকিস্তানের জনক মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ্‌ ১৯৪৮ সালের ১৯ মার্চ পূর্ব পাকিস্তান সফরে আসেন। পাকিস্তানের উভয় অংশের মধ্যে এত মৌলিক পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও তিনি ঢাকা রেসকোর্স ময়দানের (বর্তমান সোহ্‌রাওয়ার্দী উদ্যান) জনসভায় এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে ছাত্র সমাবেশে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে উর্দুকে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা প্রদান করেন। তাঁর এই ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে এর প্রতিবাদ করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ছাত্রনেতা শেখ মুজিবুর রহমান (জাতির পিতা) এই প্রতিবাদে নেতৃত্ব দেন।
১৯৪৮ সালে জিন্নাহ’র ঢাকা সফরের সময় উর্দু রাষ্ট্রভাষা হিসেবে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের উপর চাপিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলনের যে বীজ রোপিত হয়েছিল- ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ওই বীজ অঙ্কুরিত হয়। পরবর্তীতে ৬২’র শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬ সালের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলন ও পাকিস্তানের উভয় অংশের মধ্যকার সমস্যা সমাধানকল্পে ঐতিহাসিক ৬ দফা কর্মসূচি ঘোষণা সহ আইয়ুব বিরোধী আন্দোলন ৬৯-এ গণ অভ্যুত্থানের রূপ গ্রহণ করে। যার প্রেক্ষিতে পাকিস্তানের পরম পরাক্রমশালী রাষ্ট্রনায়ক ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খাঁন ৭০-এর ২৫ মার্চ ইয়াহিয়া খানের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে নীরবে সরে যেতে বাধ্য হন। ইয়াহিয়া খাঁনের আমলে ১৯৭০ এর সাধারণ নির্বাচনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রে ও প্রাদেশিক পরিষদে সংখ্যাগরিস্ট আসন পাওয়া সত্ত্বেও সংখ্যাগরিষ্ঠ পার্টির দলনেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিকট ক্ষমতা হস্তান্তর না করে ক্ষমতালিপ্সু উচ্চাভিলাসী এই আর্মি জেনারেল গণহত্যার পথ বেছে নেন। এরই প্রেক্ষিতে ৭১’র ২৫ মার্চ কালোরাতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা প্রদান করেন। প্রায় দুই লক্ষ মা-বোনের ইজ্জত এবং লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে ৯ মাসব্যাপী রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে ১৯৭১ এর ১৬ ডিসেম্বর পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশের অভ্যূদয় ঘটে।
যে মাতৃভাষার জন্য বাঙালির এত আত্মত্যাগ, সেই বাঙালি এখন আকাশ সংস্কৃতির আগ্রাসন সহ নানাবিধ কারণে বাংলাভাষা এবং বাঙালি সংস্কৃতি ভুলতে বসেছে। এখন হিন্দি, উর্দু এবং ইংরেজির প্রতি বাঙালির আকর্ষণ বেশি। এক শ্রেণির হঠাৎ গজিয়ে উঠা ধনাঢ্য ব্যক্তিদের মধ্যে এই প্রবণতা বেশি দেখা যাচ্ছে। রাজধানী ঢাকা এবং বন্দর নগরী চট্টগ্রামের তথাকথিত অভিজাত এলাকায় রাস্তায় এখন অনেককে বাংলাভাষায় কথা বলার পরিবর্তে হিন্দি, উর্দু এবং ইংরেজির সংমিশ্রণে কথা বলতে দেখা যায়। এইসব এলাকা মূল বাংলা মায়ের মাটির সাথে সম্পর্কবিহীন আলাদা ভূ-খণ্ডের বাসিন্দাদের নিবাসস্থল মনে হয়। সরকারের নির্দেশ সত্ত্বেও স্বাধীন বাংলাদেশে এখনো সর্বস্তরে বাংলাভাষার প্রচলন শুরু হয়নি। অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বাংলা পড়ানো হয় না। একটি জাতির জন্য সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক ও বেদনাদায়ক। বাঙালি একটি বিস্মৃতি প্রবর জাতি- যারা গৌরবোজ্জ্বল সংগ্রামী সোনালী অতীত ভুলতে দেরি করে না। ৫০ ও ৬০ দশকের বাঙালি জাতীয়তাবাদের যে উন্মেষ ঘটেছিল তা এখন স্থিমিত হয়ে পড়েছে বলে অনুভূত হয়।
আমরা যারা ব্রিটিশ ভারতে জন্মগ্রহণ করে যৌবনে পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠীর শাসন-শোষণ প্রত্যক্ষ করেছি এবং বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আনুগত্য স্বীকার করে মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করেছি নির্দ্বিধায় বলতে পারি পাকিস্তান আমলে পূর্ব বাংলার বাঙালিরা বাংলাভাষা তুলনামূলক বেশি চর্চা করতো। এখন যেন দিন দিন বাংলাভাষা চর্চা হারিয়ে যাচ্ছে। এখন আমরা যতটুকু না বাঙালি তারচেয়ে বেশি বিদেশি। আমাদের অনেকেই এখন ইংরেজি ও বাংলার সংমিশ্রণে একটি নূতন ‘বাংলিশ’ ভাষায় কথা বলতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। দৈনিক প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক সারফুদ্দীন আহমদ গত ১২/০২/২১ তারিখ প্রথম আলোর অনলাইনে বাঙালির ইংরেজিয়ানা মতামত কলামে লিখেছেন বাংলাভাষার পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গেছে। ঢাকার চিপাচাপা গলিতে টাঙানো টিনের সাইনবোর্ডে ভুলভাল ইংরেজি কথা থাকে বাংলা অক্ষরে। আর গুলশান, বনানী অভিজাত এলাকায় আলিসান ভবনে ডিজিটাল সাইনবোর্ডে ইংরেজি কথার পাশে বাংলা হরফে থাকে না, থাকে রোমান হরফে। ৬০ দশকের শেষের দিকে উত্থাল গণআন্দোলনের সময় গণসঙ্গীতসহ ৫২ এর ভাষা শহীদদের উদ্দেশ্যে প্রখ্যাত সাংবাদিক ও লেখক আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরী ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’ গানটি তখন প্রায় সবার মুখে মুখে শোনা যেতো। এখন একুশে ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস ছাড়া এই গান গাইতে শোনা যায় না। ৬০ দশকের প্রখ্যাত চলচ্চিত্র অভিনেতা আনোয়ার হোসেন এবং আনোয়ারা অভিনীত ‘নবাব সিরাজদ্দৌলা’ এবং জহির রায়হানের ‘জীবন থেকে নেয়া’ দু’টি সাদাকালো চলচ্চিত্রে বাঙালি জাতীয়তাবাদের যে চিত্র তখন ফুটিয়ে তোলা হয়েছিল, এখন ঐ ধরনের ছবি তৈরি হচ্ছে না বললেই চলে। এখন লালু পাঞ্জু মার্কা, মারামারি, কাটাকাটি সম্বলিত কাহিনী বিবর্জিত ছাড়া আর কোনো চলচ্চিত্র তৈরি হয় না। চলচ্চিত্র, দেশপ্রেম এবং জাতীয় সংহতি ও চেতনা উন্মেষের একটি শক্তিশালী হাতিয়ার। আমাদের পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র ভারতে কিন্তু এ ধরনের চলচ্চিত্র তৈরি হয়। আমাদের দেশে কিন্তু হচ্ছে না। আমাদের দেশে দেশপ্রেম সম্বলিত চলচ্চিত্র তৈরি না করাটা সত্যিই দুঃখজনক।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে প্রায় একযুগ চাকরির সুবাদে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে প্রায় প্রতি বছর একুশে ফেব্রুয়ারিতে আমাকে শহীদ মিনারে ডিউটি করতে হয়েছে। ঐদিন ভোরের আলো ফোটার সাথে সাথে ঢাকা মহানগরীর প্রায় সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন সংগঠন ও সর্বস্তরের জনগণ সারিবদ্ধভাবে খালি পায়ে প্রভাতফেরিতে অংশগ্রহণ করে ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’ গানটি গাইতে গাইতে শহীদ মিনারে শহীদদের বেদিতে শ্রদ্ধাবনত চিত্তে পুষ্পাঞ্জলি অর্পণ করতো তখন উপস্থিত কারো পক্ষে অশ্রু সম্বরণ করা সম্ভবপর হতো না। কালজয়ী এই গানটি এখন কমই শোনা যায়।
আকাশ সংস্কৃতির অবাধ তথ্য প্রবাহের এই যুগে আমাদের ছেলেরা এখন বাংলা গানের চেয়ে হিন্দি, উর্দু এবং ইংরেজি গান বেশি পছন্দ করে। এই প্রজন্মের ছেলে-মেয়েরা বাঙালি জাতীয়তাবাদ থেকে উদ্ভূত ভাটিয়ালি, ভাঁওয়াইয়াসহ স্বাধীনতার আগে ও পরে রচিত দেশাত্ববোধক গান গাইতে ও শুনতে চায় না। তাদের প্রাত্যাহিক জীবন ছোট্ট মোবাইল সেটের বন্দী হওয়ার কারণে গান শোনা ও গাওয়ার সময় কোথায়?। তারা হিন্দি, উর্দু এবং ইংরেজি গান ছাড়া আর কিছুই পছন্দ করে না। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এখন লারে লাপ্পা মার্কা বেসুরা হিন্দি এবং বাংলা গানের প্রচলন বেড়েছে। বিজাতীয় সংস্কৃতির ডিজে পার্টির পেছনে এখন সবাই ভূতের মত দৌড়াচ্ছে। ২১ ফেব্রুয়ারি প্রভাতফেরিতে ভবিষ্যতে একদিন হয়তো দেখা যাবে- ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’ মর্মস্পর্শী বাংলা গানটি হিন্দি, উর্দু এবং ইংরেজির সংমিশ্রণে গাওয়া হচ্ছে। এখন থেকে সাংস্কৃতিক বোদ্ধাদের সচেতন হওয়া উচিত যাতে এ ধরনের অঘটন না ঘটে। তা না হলে রাষ্ট্রভাষা বাংলার জন্য যারা প্রাণ দিয়েছেন তাঁদের বিদেহী আত্মা কষ্ট পাবে।

লেখক : প্রাবন্ধিক, কলামিস্ট; অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা

পূর্ববর্তী নিবন্ধভাষার জাদু বাংলাতে
পরবর্তী নিবন্ধমাওলানা সৈয়দ শফিউল বশর মাইজভাণ্ডারী (কঃ) এর জীবন চরিত