আমাদের মানবাধিকার কোথায়, প্রশ্ন শেখ হাসিনার

‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর কী করেছিলেন নেতারা’

| বুধবার , ১৭ আগস্ট, ২০২২ at ৫:২২ পূর্বাহ্ণ

জাতির পিতার খুনি রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে থাকলেও দেশটি তাকে ফেরত না দিয়ে লালন পালন করছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা মানবাধিকারের প্রশ্ন তোলে তারাই খুনিদের রক্ষা করছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, আমাদের মানবাধিকার কোথায়? তার কি জবাব আমরা পাব? খবর বিডিনিউজের।
শেখ হাসিনা বলেন, আজকে যেসব দেশ মানবাধিকারের প্রশ্ন তোলে আমাদের স্যাংশন দেয় তারা তো খুনিদের আশ্রয় দিয়ে রেখেছে। এই খুনি রাশেদ, এই রাশেদ ছিল কমান্ডিং অফিসার। মিন্টো রোডে যে অপারেশন হয়, সেই অপারেশনে কমান্ডিং অফিসার ছিল এই রাশেদ। সেই ওখানে যায়। রাশেদ এবং শাহরিয়ার এদের নেতৃত্বে সেখানে যায় এবং মাজেদ। মাজেদকে আমরা আনতে পেরেছি। কিন্তু রাশেদকে বারবার আমেরিকার সাথে আমরা কথা বলেছি। এখনো তাকে তারা দিচ্ছে না। তাকে তারা লালন-পালন করে রেখে দিচ্ছে।… আর নূর কানাডায়।
অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, এদের কাছ থেকে এখন আমাদেরকে মানবতার সবক নিতে হয়। আর আমাদেরকে মানবতার সবক শেখায় যারা সেই আমার বাবা, মা, নারী, শিশু ওদেরকে হত্যা করেছে। তাদেরকে তারা রক্ষা করে। ওরা সেই লিবিয়াতে পড়ে থাকে, মাঝে মাঝে পাকিস্তানে যায়। ডালিমের খোঁজ পাকিস্তানের লাহোরে আছে এইটুকু জানি। কিন্তু খুব বেশি খবর পাওয়া যাচ্ছে না।
নাম-পরিচয় পাল্টে ফেলায় খুনি মোসলেম উদ্দিনের কোনো খোঁজ মিলছে না জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, তবুও চেষ্টা করে যাচ্ছি। এই কয়জনকে আমরা আনতে পারিনি এখনো। বাকি সব খুনিদের একে একে আমরা নিয়ে এসেছি। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে বাধার কথা উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, যারা খুনিদের লালন-পালন করল অর্থাৎ যারা মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী, খুনি, জঙ্গি, সন্ত্রাসী তাদের মানবাধিকার নিয়ে এরা ব্যস্ত। আর বিএনপি তো এদের মদদদাতা। বিএনপি এদের লালন পালনকারী। কাজেই তাদেরকে তারা লালন-পালন করে।
জাতির পিতাকে হত্যার পর ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে লাশ পড়ে থাকলেও সংগঠনের নেতা-কর্মীরা কেন এগিয়ে প্রতিবাদ করেননি সে প্রশ্নও রেখেছেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘১৫ আগস্ট ৩২ নম্বর ওই ধানমণ্ডি। লাশগুলো তো পড়েছিল। কত স্লোগান- বঙ্গবন্ধু তুমি আছো যেখানে, আমরা আছি সেখানে। অনেক স্লোগান তো হচ্ছিল। কোথায় ছিল সেই মানুষগুলি? একটি মানুষ ছিল না সাহস করে এগিয়ে আসার? একটি মানুষ ছিল না প্রতিবাদ করার? কেন করতে পারেনি?’ দলের নেতাকর্মীদের নীরব ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘এত বড় সংগঠন, এত লোক, কেউ তো একটা কথা বলার সাহস পায়নি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার এটা প্রশ্ন, আমাদের নেতারাও তো এখানে আছেন। জাতির পিতা তো অনেককে ফোনও করেছিলেন। কী করেছিলেন তারা? বেঁচে থাকতে সবাই থাকে, মরে গেলে যে কেউ থাকে না এটা তার জীবন্ত প্রমাণ। এজন্য আমি কিছু আশা করি না। শুধু আমার একটাই কথা, এই দেশ জাতির পিতা স্বাধীন করেছিলেন, এ দেশের দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাবেন বলে।’ দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়ে ক্ষমতায় আসার পেছনে নিজের চেষ্টার কথা তুলে ধরে সরকার প্রধান বলেন, ‘তাই আমার একটাই প্রচেষ্টা, সব সহ্য করে নীলকণ্ঠ হয়ে শুধু অপেক্ষা করেছি কবে ক্ষমতায় যেতে পারব। আর এই দেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে পারব। দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পারব। তাহলেই এ হত্যার প্রকৃত প্রতিশোধ নেওয়া হবে।’

পূর্ববর্তী নিবন্ধমাকে গুলি করে হত্যা
পরবর্তী নিবন্ধসিআরবি বাঁচুক, হাসপাতাল হোক অন্যত্র