আমদানি করা হচ্ছে ১৩ লাখ টন চাল ও গম

পর্যাপ্ত মজুদ থাকার পরও আগামী বছরের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে উদ্যোগ ।। খুচরা বাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়ার আশা

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ১০ নভেম্বর, ২০২২ at ৫:৫৮ পূর্বাহ্ণ

দেশে চালের পর্যাপ্ত মজুদ থাকলেও প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ টন চাল এবং সাড়ে সাত লাখ টন গম আনা হচ্ছে। দেশের চলতি বছরের পাশাপাশি আগামী বছরের খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে সরকার বিভিন্ন দেশ থেকে চাল এবং গম আমদানি করছে। সরকারিভাবে আমদানিকৃত এসব চাল এবং গম দিয়ে ওএমএস, কাজের বিনিময়ে খাদ্য, বিধবা ভাতাসহ বিভিন্ন গণমুখী কার্যক্রম পরিচালিত হবে। চালের এই বিশাল মজুদ খুচরা বাজারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে।

সূত্র জানিয়েছে, দেশে চালের বাজার অস্থির গত বেশ কিছুদিন ধরে। রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধসহ বৈশ্বিক সংকট চালের বাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এর পাশাপাশি আগামী বছরের দুর্ভিক্ষের শঙ্কার কথাও বাজারে প্রভাব ফেলে। সবকিছু মিলে দেশে পর্যাপ্ত উৎপাদন এবং মজুদ থাকলেও বাজারের অস্থিরতা কাটছে না। বর্তমানে দেশে শুধুমাত্র সরকারি গুদামেই প্রায় ১৬ লাখ টন খাদ্য শষ্য মজুদ রয়েছে। এর মধ্যে ১৩ লাখ ৬৪ হাজার টনেরও বেশি চাল। সরকারি গুদামে এই বিপুল মজুদ গত দুই বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ বলেও সূত্র জানায়।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, দেশে খাদ্য শস্যের মজুদ ১৫ লাখ ৮১ হাজার ১৬৬ টন। এর মধ্যে চাল ১৩ লাখ ৬৪ হাজার ৫৮৩ টন, গম দুই লাখ ১০ হাজার ৫৯৮ টন এবং ধান ১২ হাজার ৭৪ টন। এই মজুদকে অত্যন্ত সন্তোষজনক বলে উল্লেখ করে খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তারা বলেছেন, সরকারি গুদামের বিশাল এই মজুদের পাশাপাশি মানুষের ঘরে এবং বিভিন্ন বেসরকারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও গুদামে প্রচুর চালের মজুদ রয়েছে।

সূত্র বলেছে যে, ২০২১ সালের এ সময়ে ১৫ লাখ ৪৭ হাজার ৩৫০ টন খাদ্য শস্যের মজুদ ছিল। ওই সময় চাল ছিল ১৩ লাখ ৪৯ হাজার ৭২০ টন, গম এক লাখ ৯৪ হাজার ৭০০ টন এবং ধান চার হাজার ৫২০ টন। ২০২০ সালের এ সময়ে খাদ্যশস্যের মজুদ ছিল ১০ লাখ ৪২ হাজার ৯৭০ টন। চাল ছিল সাত লাখ ৫৪ হাজার ১৩০ টন, গম দুই লাখ ৮১ হাজার ১২০ টন এবং ধান ১১ হাজার ৮৯০ টন। বিশাল এই মজুদের কারণে দেশে চালের সংকট হওয়ার কোন শঙ্কা নেই বলেও সূত্রগুলো মন্তব্য করেছে। সরকারি বেসরকারি পর্যায়ে যে পরিমাণ চালের মজুদ রয়েছে তাতে অনায়াসে চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেছেন, দেশে সংকট হবে না কিংবা পর্যাপ্ত মজুদ থাকার পরও আগামী বছরের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার আরো ৫ লাখ ৩০ হাজার টন চাল এবং সাড়ে ৭ লাখ টন গম আমদানি করছে। এর মধ্যে মিয়ানমার থেকে ২ লাখ টন আতব, ভারত থেকে এক লাখ টন সিদ্ধ, থাইল্যান্ড থেকে ২ লাখ টন সিদ্ধ এবং ভিয়েতনাম থেকে ৩০ হাজার টন আতব চাল আমদানি করা হচ্ছে। এসব চালের কিছু অংশ ইতোমধ্যে দেশে পৌঁছেছে, বাকি চালও পাইপ লাইনে রয়েছে। চালের পাশাপাশি সরকার রাশিয়া থেকে ৫ লাখ টন গম আনছে। এছাড়া বুলগেরিয়া এবং ইউক্রেন থেকেও আনা হচ্ছে আরো আড়াই লাখ টন গম। দেশে বর্তমানে চাল এবং গমের কোন সংকট নেই এবং সামনের দিনগুলোতেও সংকট হবে না বলে মন্তব্য করে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ একজন কর্মকর্তা গতকাল বলেছেন, খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়টি সরকার অত্যন্ত সতর্কতার সাথে মনিটরিং করছে। এতো মজুদ থাকার পরও বাজারের অস্থিরতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, চালের বাজার দর আরো কঠোরভাবে মনিটরিং করারও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রধানমন্ত্রীর জনসভার স্থান পলোগ্রাউন্ড পরিদর্শনে নেতৃবৃন্দ
পরবর্তী নিবন্ধসাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে আইএমএফ, প্রাথমিক সমঝোতা