আপাতত কারাগারেই থাকতে হচ্ছে মীর নাছিরকে

জামিন আবেদন মুলতবি

আজাদী অনলাইন | সোমবার , ১৬ নভেম্বর, ২০২০ at ৩:১২ অপরাহ্ণ

আপাতত কারাগারেই থাকতে হচ্ছে দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত সাবেক বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মীর মো. নাছির উদ্দিনকে। আগামী ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত তার জামিন আবেদনটি মুলতবি (স্ট্যান্ডওভার) রাখায় কারাগারে থাকতে হচ্ছে এ বিএনপি নেতাকে।
প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন চার বিচারকের ভার্চুয়াল আপিল বেঞ্চ আজ সোমবার (১৬ নভেম্বর) তার আবেদন মুলতবি রাখার আদেশ দেয়। বিডিনিউজ
আইনজীবীরা বলছেন, মীর নাছির জামিন পাবেন কি পাবেন না, তা ১৪ ডিসেম্বরের পর জানা যাবে।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী, সুপ্রিম কোর্ট বারের সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস কাজল। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।
জরুরি অবস্থার সময় অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের মামলায় মীর নাসির তার ছেলে মীর হেলাল উদ্দিনের সাজা বহাল রেখে তাদের নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলেছিল হাইকোর্ট কিন্তু তা না করে তারা আপিল আবেদন করায় প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ভার্চুয়াল আপিল বেঞ্চ গত ১৫ অক্টোবর তাদের লিভ টু আপিল খারিজ করে দেয়।
এরপর গত ৮ অক্টোবর ঢাকার ২ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করেন মীর নাছির। সেদিন বিচারক এ এস এম রুহুল ইমরান তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এরপর আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করার পাশাপাশি জামিন চেয়ে আবেদন করেন মীর নাছির। রবিবার তার জামিন আবেদনের ওপর শুনানি শেষ হলে সোমবার আদেশের জন্য রাখে আপিল বিভাগ।
আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, “আপিল বিভাগ মীর নাছিরের জামিন আবেদনটি ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত মুলতবি করে রেখেছেন। আশা করি তিনি জামিন পাবেন।”
দুদকের আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান বলেন, “মীর নাছিরকে জামিন দেয়নি আপিল বিভগ। তার আবেদনটি মুলতবি রাখা হয়েছে।”
এ অবস্থায় আপিল বিভাগে মীর নাছিরের জামিন হওয়ার সম্ভাবনা থাকছে কি না, জানতে চাইলে দুদকের আইনজীবী বলেন, “এটি ১৪ ডিসেম্বরের পর বোঝা যাবে। তবে সেই পর্যন্ত তাকে কারাগারেই থাকতে হচ্ছে।”
এদিকে একই মামলায় দণ্ডিত মীর নাছিরের ছেলে মীর হেলাল উদ্দিন গত ২৭ অক্টোবর আত্মসমর্পণ করলে আদালত তাকেও কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়।
এরপর হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন মীর হেলাল। সঙ্গে জামিনও চান।
সেই আবেদনের শুনানি নিয়ে চেম্বার বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান গত ১ নভেম্বর মীর হেলালকে জামিন দেন। আগামী বছরের ৩১ মে পর্যন্ত তাকে জামিন দেওয়া হয়। লিভ টু আপিলটি ওই দিনই শুনানির জন্য রাখা হয়েছে।
মীর হেলালের আইনজীবীদের ভাষ্য, ৩ বছরের দণ্ডে মীর হেলাল এখন পর্যন্ত এক বছর ৪ মাস ১০ দিন জেল খেটেছেন।
জরুরি অবস্থার সময় অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে মীর নাসির ও তার ছেলে মীর হেলালের বিরুদ্ধে ২০০৭ সালের ৬ মার্চ গুলশান থানায় দুদক মামলা করে।
এ মামলায় বিশেষ জজ আদালত একই বছরের ৪ জুলাই রায়ে মীর নাছির উদ্দিনকে ১২ বছর এবং মীর হেলালকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেয়।
সেই রায়ের বিরুদ্ধে তারা হাইকোর্টে আপিল করেন। হাইকোর্ট ২০১০ সালের ১০ আগস্ট মীর নাছিরের এবং একই বছরের ২ আগস্ট মীর হেলালের সাজা বাতিল করে রায় দেয়।
হাইকোর্টের ঐ রায় বাতিল চেয়ে দুদক সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল আবেদন করে। আপিল বিভাগ ২০১৪ সালের ৩ জুলাই হাইকোর্টের রায় বাতিল করে পুনরায় হাইকোর্টেই বিচার করার নির্দেশ দেয়।
এ নির্দেশে পুনরায় শুনানি শেষে গত বছরের ১৯ নভেম্বর রায় দেয় হাইকোর্ট। তাতে মীর নাছির ও তার ছেলে মীর হেলালকে নিম্ন আদালতের দেওয়া সাজা বহাল রাখা হয়।
চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায়টি প্রকাশ করা হয়। ১৫৯ পৃষ্ঠার এ রায়ে রায়ের অনুলিপি পাওয়ার তিন মাসের মধ্যে তাদের নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকরোনায় চট্টগ্রামে নতুন আক্রান্ত আরও ১৮১
পরবর্তী নিবন্ধদশ সপ্তাহের মধ্যে সবচেয়ে বেশি করোনা রোগী