আদর্শ মানুষ গড়তে মহানবীর (দ.) আদর্শ অনুসরণের বিকল্প নেই

ঢাকায় ঈদে মিলাদুন্নবীর (দ.) জুলুসে পীর আল্লামা সাবির শাহ

| শনিবার , ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ at ৫:১৬ পূর্বাহ্ণ

প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও ৯ই রবিউল আউয়াল আঞ্জুমানরহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট ঢাকার উদ্যোগে পবিত্র ঈদমিলাদুন্নবীর (.) জুলুস বের করা হয়। জুলুস (র‌্যালি) পরবর্তী মাহফিলে সমাজের সত্যিকারের আদর্শবান, নৈতিকবোধ সম্পন্ন ও দেশ প্রেমিক দ্বীনদার মানুষ গড়ার জন্য প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অনুপম আদর্শ অনুসরণ করাই যথেষ্ট বলে মন্তব্য করেছেন পীর আল্লামা সাবির শাহ্‌ (.জি.)

গতকাল শুক্রবার সকাল ১০ টায় পীর হযরতুল আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবির শাহ এর নেতৃত্বে র‌্যালিটি ঢাকার মোহাম্মদপুরস্থ কাদেরিয়া তৈয়্যবিয়া আলিয়া (কামিল) মাদরাসা প্রাঙ্গণ হতে বের হয়ে শাহজাহান রোড, আওরঙ্গজেব রোড, মিরপুর রোড, আসাদগেইট হয়ে ধানমন্ডি ২৭ নং রোড, সাতমসজিদ রোড, মোহাম্মদপুর বাস স্ট্যান্ড, সাভ মসজিদ সুপার মার্কেট, শিয়া মসজিদ, রিং রোড, শ্যামলী, খিলজি রোড সমূহ প্রদক্ষিণ করে পুনরায় মাদরাসা ময়দানে গিয়ে বিশাল মাহফিলে পরিণত হয়। মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ৪১ তম আওলাদ পীর হযরতুল আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবির শাহ (.জি.)। এতে বিশেষ মেহমান ছিলেন, শাহজাদা হযরতুল আল্লামা আলহাজ্ব সৈয়্যদ মুহাম্মদ কাসেম শাহ্‌ (.জি.)। কাদেরিয়া তৈয়্যেবিয়া কামিল মাদরাসার উপাধ্যক্ষ আলহাজ্ব মুফতী আবুল কাশেম মুহাম্মদ ফজলুল হকের সঞ্চালনায় মাহফিলে পীর আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবির শাহ (.জি.) আরও বলেন, এক দিকে সন্ত্রাসবাদ অন্য দিক বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার আঘাতে বর্তমান পৃথিবী আজ দিশেহারা। শান্তির খোঁজে ছুটছে মানুষ। মৌলিক অধিকার বঞ্চিত পৃথিবীর অধিকাংশ জনগোষ্ঠী। সম্পদের পাহাড় করছে কিছু মানুষ। অন্যদিকে অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা ও বাসস্থানের অভাবে আছে বিশ্বের সংখ্যাগরিষ্ঠ জণসাধারণ। অন্যায়ভাবে যুদ্ধ চাপিয়ে প্রতিবছর শরণার্থী করা হয় অসংখ্য মানুষকে। বিশেষ করে অনেক জায়গায় মুসলিম নিধন ঘটে নীরবেনীরবে। অন্যদিকে, নৈতিক ও যথাযথ ধর্মীয় শিক্ষা ও অনুশীলনের অভাবে সমাজে খুনখারাবী, ঘুষদুর্নীতি, নারীনির্যাতন ইত্যাদি লেগেই আছে। এমন পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণের একমাত্র উপায়প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শ ও শিক্ষার পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন। এই শিক্ষার মাধ্যমে মানুষের অন্তরাত্মা পরিশুদ্ধ হয় এবং ইহলোক ও পরোলোকে শান্তি নসিব হয়। বিশেষ অতিথি শাহজাদা সৈয়্যদ মুহাম্মদ কাসেম শাহ (.জি.) বলেন, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু তাআলা আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শ থেকে বিচ্যুতির কারণেই মূলত পৃথিবীতে অশান্তি নেমে এসেছে। যারা ধর্মের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করে নবীঅলিদের প্রতি বিদ্বেষী করে তোলেহাজার বছর ধরে চলে আসা ইসলামী অনুষ্ঠানমালা যেমনঈদমিলাদুন্নবী (.), শবে বরাত, শবে মেরাজ ও ফাতেহা ইত্যাদির বিরোধিতা করে, তাদের ব্যাপারেও সতর্ক থাকা দরকার। তিনি আরও বলেন, আল্লাহ পাকের নেয়ামত সমূহের মধ্যে শ্রেষ্ঠ নেয়ামত রাসুলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সৃষ্টি। তাঁর সৃষ্টিতে ধন্য হয়েছে সমগ্র সৃষ্টিজগত। যাঁর সম্পর্কে স্বয়ং আল্লাহ বলেন ‘আপনাকে সৃষ্টি না করলে কিছুই সৃষ্টি করতাম না’। আল্লাহর রহমত ও করুণাপ্রাপ্তির কারণে খুশি উদযাপন করা কোরআনের নির্দেশ। নবীজির শুভ জন্মলগ্নে দাসীকে মুক্ত করে আনন্দ প্রকাশ করায় আবু লাহাবের মত অভিশপ্ত কাফেরও প্রতি সোমবার ভয়াবহ শাস্তি হতে কিছুটা পরিত্রাণ পায় বলে হাদিসে বর্ণিত আছে। সেক্ষেত্রে একজন মুসলমান নবীজির শুভাগমনে আনন্দিত হলে তথা ঈদমিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পালন করলে নিশ্চিতভাবে মহান রবের দরবারে উভয় জাহানে পুরস্কৃত হবেন।

মাহফিলে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আঞ্জুমানরহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট ঢাকার চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো. শহীদ উল্লাহ। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় আঞ্জুমানের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মুহাম্মদ মহসিন, সেক্রেটারি জেনারেল আলহাজ্ব মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, ঢাকা আঞ্জুমানের সেক্রেটারি মো. মিজানুর রহমান। মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় ও ঢাকা আঞ্জুমানের নেতৃবৃন্দ, প্রখ্যাত ওলামায়ে কেরাম, দেশবরেণ্য গবেষক, ইসলামী চিন্তাবিদ, শিক্ষানুরাগী এবং সরকারিবেসরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।

পবিত্র ঈদমিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের তাৎপর্য তুলে ধরে বয়ান করেন কাদেরিয়া তৈয়্যবিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ আলহাজ্ব মুফতী মুহাম্মদ জসিম উদ্দিন আলআজহারী। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ‘পাহাড় ভাঙি পড়লেও এ্যানেই আরার থাকতে হইবো’
পরবর্তী নিবন্ধআট দাবিতে চট্টগ্রামে সনাতনীদের সমাবেশ