আত্মহত্যায় সহায়তা করবে এমন থ্রিডি-প্রিন্টেড পড বানিয়েছে একটি অস্ট্রেলীয় কোম্পানি, যা তারা আগামী বছরই সুইজারল্যান্ডের বাজারে আনতে চায়। বিবিসি জানিয়েছে, এক্সিট ইন্টারন্যাশনালের এই ‘সারকো’ সুইসাইড ক্যাপসুল বা পডটি সুইজারল্যান্ডের কোনো আইন ভঙ্গ করে কিনা তা খতিয়ে দেখতে সুইস এক আইন বিশেষজ্ঞকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। যাচাই বাছাইয়ের পর তিনি আত্মহত্যায় সহায়তাকারী মেশিনটি ব্যবহারে আইনি ঝামেলা নেই বলে মত দেন। তবে অনেক আইনজীবীই তার এ মতের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। আত্মহত্যায় সহায়তাকারী সংগঠন ডিগনিটাসও সুইসাইড পডটির ‘খুব বেশি গ্রহণযোগ্যতা পাওয়ার সম্ভাবনা কম’ বলে মন্তব্য করেছে। খবর বিডিনিউজের।
সুইজারল্যান্ডে আত্মহত্যায় সহায়তা বৈধ। গত বছর দেশটিতে প্রায় এক হাজার তিনশ মানুষ স্বেচ্ছামৃত্যুর পথ বেছে নিয়েছিল। এখন সুইজারল্যান্ডে যে পদ্ধতি প্রচলিত তাতে স্বেচ্ছামৃত্যুতে আগ্রহী ব্যক্তিকে একাধিক তরল পদার্থ দেওয়া হয়, যা গলাধঃকরণ করার পর তার মৃত্যু হয়। সারকোর সুইসাইড মেশিন কাজ করবে অন্যভাবে। আত্মহত্যায় আগ্রহী ব্যক্তি পডটির ভেতর ঢোকার পর নাইট্রোজেনের প্রবাহ বাড়িয়ে দিতে পারবেন, যা দ্রুত তার শরীরের অক্সিজেনের মাত্রা কমিয়ে দেবে। এর ধারাবাহিকতায় পডের ভেতর থাকা ব্যক্তি দ্রুত জ্ঞান হারাবেন, আনুমানিক ১০ মিনিটের মধ্যে মৃত্যু হবে তার। পডটি ভেতর থেকে চালু করতে হবে; সেখান থেকে বেরিয়ে আসার জন্য একটি জরুরি ‘এক্সিট বাটনও’ থাকবে।
এই সুইসাইড মেশিনের ব্যবহারে সুইজারল্যান্ডের কোনো আইন ভঙ্গ হয় কিনা, তা দেখার দায়িত্ব পেয়েছিলেন সেইন্ট গ্যালেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক, আইন বিশেষজ্ঞ দানিয়েল হুয়েরমান। যাচাই বাছাই শেষে তিনি সবুজ সংকেত দেন। মেশিনটি যদি শেষ পর্যন্ত কর্তৃপক্ষের চূড়ান্ত অনুমোদন পায়, সে ক্ষেত্রে আগামী বছর থেকেই এর ব্যবহার শুরু হতে পারে। তবে অন্যসব পণ্য যেভাবে বিক্রি করা হয়, পডটি সেভাবে বিক্রি হবে না।
পডটির বানিয়েছেন ড. ফিলিপ নিটশকে। তার পরিকল্পনা হচ্ছে, ক্যাপসুলের নকশা বিনামূল্যে ডাউনলোডের সুযোগ করে দেওয়া, যার মাধ্যমে যে কেউই পডটি বানিয়ে নিতে পারবে।
নিটশকে দীর্ঘদিন ধরে মৃত্যুকে অধিকারের স্বীকৃতি দিতে প্রচারণা চালিয়ে আসছেন। এজন্য ‘ড. ডেথ’ নামেও তিনি পরিচিতি লাভ করেছেন। এখন সারকো পডের দুটো প্রোটোটাইপ রয়েছে, নেদারল্যান্ডসে তৃতীয়টির কাজ চলছে।