আত্মহত্যার ঘটনা বাড়ছে, প্রতিরোধে ব্যবস্থা নিতে হবে

নুসরাত জাহান মুক্তা | সোমবার , ২২ মার্চ, ২০২১ at ৬:২৭ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশে আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়েছে। যা করোনা মহামারীতে মৃত্যু সংখ্যার চেয়েও বেশি। গত বছরের মার্চ থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তিনটি জাতীয় দৈনিক, পুলিশ ও হাসপাতাল থেকে সংগৃহীত তথ্য বিশ্লেষণ করে আঁচল ফাউন্ডেশন যে জরিপ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, তা এককথায় ভয়াবহ। কভিডকালে গেল এক বছরে সারাদেশে আত্মহত্যা করেছে ১৪ হাজার ৪৩৬ নারী-পুরুষ। যা ২০১৯ সালের চেয়েও ৪ হাজার বেশি।
মানুষ নানা কারণে আত্মহত্যা করে বা করতে পারে। এর মধ্যে আছে হতাশা, ব্যক্তিত্বে সমস্যা, মানসিক রোগ। তা ছাড়া মাদকাসক্তি, অপরাধ বোধ, আত্মহত্যায় প্ররোচনা, অশিক্ষা, দারিদ্র্য, দাম্পত্য কলহ, প্রেম-কলহ, অভাব-অনটন, দীর্ঘস্থায়ী রোগে ভোগা, যৌন নির্যাতন, মা-বাবার ওপর অভিমান, পরীক্ষায় খারাপ রেজাল্ট, প্রেমে ব্যর্থ ও প্রতারণার শিকার হয়ে অনেকে আত্মহত্যা করে। সবচেয়ে বেশি আত্মহত্যা সংঘটিত হয় বিষন্নতার জন্য। আবার করোনার সময় মানুষ ঘরবন্দি হয়েছে। নাগরিক জীবনে খেলাধুলার সুযোগও কম। কাজেই, ঘরবন্দি থাকায় আত্মহত্যার প্রতি ঝুঁকছে অনেকে।
আত্মহত্যা প্রতিরোধ করতে হলে প্রথমে ব্যক্তিগত পর্যায়ে কাজ করতে হবে। অভিভাবক ও পরিবারের সদস্যদের বুঝতে হবে বিষয়টি যদি কোনো সদস্য এমন করার সম্ভাবনায় থাকে। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শে চিকিৎসা করাতে হবে। আবার সমাজও কিন্তু এখানে অনেক বড় ভূমিকা পালন করতে পারে। মানসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা যদি উন্নত থাকে, তাহলে এটি প্রতিরোধ সম্ভব। ধর্মীয় শিক্ষা দিয়ে যদি বুঝিয়ে দেওয়া হয় তাহলে আত্মহত্যার মতো মহাপাপ মানুষ করবে না। আপনার আপনজনদের পর্যাপ্ত সময় দিন, বন্ধু – বান্ধবদের মন খারাপে পাশে থাকুন, হতাশা কিংবা বিপদে একটু হাত বাড়িয়ে দিন। দেখবেন, আত্মহত্যা প্রতিরোধে আমরা নিজেরাই অংশ নিয়েছি, রক্ষা করেছি একটি জীবন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রাম শাহ আমানত সেতুর টোলের নিয়ম
পরবর্তী নিবন্ধনিরাপদ পানি নিরাপদ জীবন