আটজনের বিরুদ্ধে দুদকের দুই মামলা

কাজ শেষ না করে সরকারি টাকার ক্ষতি ও ব্যাংকের টাকা আত্মসাৎ ।। চসিকের পোর্ট কানেকটিং রোড প্রকল্প

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ১১ মে, ২০২২ at ৫:৩৯ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ইমপ্রুভমেন্ট পোর্ট কানেকটিং রোড প্রকল্পের অলংকার থেকে নিমতলা পর্যন্ত সড়কের উন্নয়ন প্রকল্পের ৭ কোটি ৫৭ লাখ ১ হাজার ৩৪৭ টাকার ক্ষতিসাধন ও জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবিএল) ৪০ কোটি টাকা ঋণ গ্রহণের মাধ্যমে আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এমন অভিযোগ অনুসন্ধানে সত্যতাও পাওয়া গেছে। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছেন ইউসিবিএলের ৫ কর্মকর্তাও। প্রাথমিক অনুসন্ধানে সত্যতা পাওয়ার পর ব্যাংকের উক্ত ৫ কর্মকর্তাসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল দুদক প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. আনোয়ারুল হক মামলা দুটি করেন।

মামলার আসামিরা হলেন কুমিল্লার ঝাউতলার বাসিন্দা ও মেসার্স জাকির এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. জাকির হোসেন, ফেনী সদরের বাসিন্দা ও এস এ ট্রেডিং কর্পোরেশনের মালিক ছালেহ আহাম্মদ, ঢাকার পশ্চিম পান্থপথের মেসার্স রানা বিল্ডার্স প্রাইভেট লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোহাম্মদ আলম, ইউসিবিএল কুমিল্লা শাখার সাবেক এফভিপি অ্যান্ড হেড অব ব্রাঞ্চ এবং বর্তমানে উক্ত ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের স্পেশাল অ্যাসেটস ম্যানেজমেন্ট ডিভিশনের মো. সরোয়ার আলম, কুমিল্লা শাখার তৎকালীন অ্যাসিসট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট ও অপারেশন ম্যানেজার এবং বর্তমানে এভিপি পদে কর্মরত মো. আনিসুজ্জামান, সাবেক এভিপি অ্যান্ড ক্রেডিট ইনচার্জ এবং বর্তমানে কুমিল্লার ঝাউতলা শাখার এফএভিপি ও শাখা প্রধান ছাইফুল আলম মজুমদার, সাবেক ইও অ্যান্ড রিলেশনশিপ অফিসার এবং বর্তমানে নগরীর খুলশী শাখার সিনিয়র এঙিকিউটিভ অফিসার মকামে মাহমুদুল ইসলাম আরেফিন এবং সাবেক ইও অ্যান্ড রিলেশনশিপ অফিসার এবং বর্তমানে চট্টগ্রাম রিজিওনাল অপারেশন সেন্টারের সিনিয়র এঙিকিউটিভ অফিসার দেবু বোস।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, পরস্পর যোগসাজসে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অপরাধমূলক বিশ্বাস ভঙ্গের মাধ্যমে নিজেরা লাভবান হওয়ার ও অপরকে লাভবান করার অসৎ উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের পোর্ট কানেকটিং রোডের অলংকার থেকে নিমতলা পর্যন্ত সড়কের উন্নয়ন প্রকল্পের ক্ষতিসাধন করেছেন আসামিরা। প্রকল্পের কার্যাদেশ পাওয়ার পর নিজে কাজ না করে, অবৈধভাবে আমমোক্তার নিয়োগ করে কাজের সম্পূর্ণ দায়িত্ব অপরকে প্রদান করা হয়। এছাড়া কাজটি শেষ না করে গণভোগান্তি সৃষ্টি করা হয়। এর মাধ্যমে সরকারি ৭ কোটি ৫৭ লাখ ১ হাজার ৩৪৭ টাকার আর্থিক ক্ষতিসাধন করা হয়।

এজাহারে আরো উল্লেখ করা হয়, আসামি মো. জাকির হোসেন চসিকের উক্ত প্রকল্পের কার্যাদেশপ্রাপ্ত ঠিকাদার মোহাম্মদ আলম কর্তৃক অবৈধভাবে আমমোক্তার নিযুক্ত হন। তিনি মিথ্যাভাবে নিজেকে রানা বিল্ডার্স অ্যান্ড সালেহ আহম্মেদের ম্যানেজিং ডিরেক্টর হিসেবে উপস্থাপন করেন এবং সে অনুযায়ী সাক্ষর প্রদান করে ইউসিবিএল কুমিল্লা শাখার সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় ২০ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ করেন। আসামি মো. জাকির হোসেন রানা বিল্ডার্স অ্যান্ড সালেহ আহম্মেদ নামে হিসাব নম্বর খুলেন এবং মেসার্স জাকির এন্টারপ্রাইজ নামে লোন হিসাব নম্বর খুলে ঋণ গ্রহণ করে তা উত্তোলন করেন। তার এই কাজে ব্যাংক কর্মকর্তারা সহযোগিতা করেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়, সরকারি টাকার ক্ষতিসাধন ও ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ করে দণ্ডবিধি ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন আসামিরা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকোকেন মামলায় আরো একজনের সাক্ষ্য
পরবর্তী নিবন্ধচসিকের দুই প্রকৌশলীর অনিয়ম তদন্তে দুদক