আগাম আনারসে বাজিমাত

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি | শনিবার , ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ at ৫:০৫ পূর্বাহ্ণ

খাগড়াছড়িসহ পার্বত্য এলাকায় আগাম আনারস উৎপাদন করে বাজিমাত করেছেন কৃষকেরা। বর্তমানে মৌসুমের চেয়ে চারগুণ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে তাদের উৎপাদিত আনারস। জানা গেছে, হরমোন প্রয়োগ করে এসব আনারস উৎপাদন করা হয়েছে। আর উৎপাদন পদ্ধতিও বিজ্ঞানসম্মত বলে জানিয়েছেন কৃষিবিদরা।
কৃষকরা জানান, মৌসুমে প্রতিটি আনারসের দাম থাকে ২-৩ টাকা। কিন্তু বর্তমানে প্রতিটি আনারস বাগানেই বিক্রি হচ্ছে ১২-১৪ টাকায়। তারপর পৌঁছে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মানিকছড়ি ছাড়াও জেলার মহালছড়ি মুবাছড়ি ইউনিয়নে বিস্তৃত জায়গা জুড়ে রয়েছে আনারস বাগান। প্রতিটি বাগানই আনারসে ভরা। বেশিরভাগ বাগানের আনারসে দেখা যায় পরিপক্কতাও।
বর্তমানে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ফল ব্যবসায়ীরা এসব আনারস নিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া নৌপথেও আনারস ভিড়ছে মহালছড়ির ঘাটে। আগাম আনারস চাষ করা কৃষকদের একজন আলোক দ্বীপ চাকমা।
মুবাছড়ির মধ্য আদাম এলাকার এই কৃষক বলেন, নিজের ২ বিঘা জমিতে ১৫ হাজার আনারস গাছ লাগিয়েছি। আনারসের আগাম ফলনের জন্য হরমোন দিতে হয়। হরমোন প্রয়োগের ২৮ দিন পর প্রতিটি গাছে ফুল আসে। তার ৭ মাস পর আনারস বিক্রয় উপযোগী হয়। ব্যবসায়ীরা বাগানে গিয়ে আনারস কিনে নেয়ায় পরিবহনের ঝামেলা পোহাতে হয় না বলেও জানান তিনি।
একই এলাকায় আনারস চাষ করেছেন কৃষক ধনমনি চাকমা। তিনি বলেন, ওষুধ প্রয়োগের চেয়েও ক্ষেতে শ্রমিকের মজুরি বেশি। তবে আগের তুলনায় ভালো লাভ পাচ্ছি।
ব্যবসায়ী মো. সোহেল বলেন, মহালছড়ির বিভিন্ন বাগান থেকে আগাম ৫ লাখ আনারস কিনে রেখেছি আমরা। প্রতিটি আনারস কিনেছি ১৪ টাকা দরে। এসব আনারস ঢাকা, কুমিল্লা ও নোয়াখালীতে পাঠানো হচ্ছে। তবে এখন আনারসের চাহিদা কম। কৃষকরা লাভবান হলেও ব্যবসায়ী লাভবান হচ্ছে না।
আনারসে হরমোন প্রয়োগের ব্যাপারে জানতে চাইলে খাগড়াছড়ি পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মুন্সী রশীদ আহ্‌মদ বলেন, পার্বত্য এলাকায় আগাম আনারস চাষের প্রবণতা রয়েছে। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট আনারস উৎপাদনের প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে। এটি ব্যবহার করে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। তিনি জানান, বয়স ৮ মাস হলে ইথরিল হরমোন প্রয়োগ করলে হানিকুইন জাতের আনারস গাছে ফুল আসে। এতে ফল প্রাপ্যতা নিশ্চিত হয়। ইথরিল হরমোন মানবদেহের ওপর ক্ষতিকর কোনো প্রভাব ফেলে না।
ড. মুন্সী রশীদ বলেন, হরমোন প্রয়োগে আনারসের পুষ্টিমান ও স্বাদ নষ্ট হয় না। তবে অতিরিক্ত হরমোন প্রয়োগ করলে গুণমান নষ্ট হয়ে যায়। এ ব্যাপারে কৃষক ও ভোক্তাদের সচেতন হতে বলেন তিনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা
পরবর্তী নিবন্ধনগরে এবার বইমেলা হবে?