আগামী বর্ষায় জলাবদ্ধতা হলে দায় সিডিএ’র : মেয়র

১০ দিনের মধ্যে খাল-নালা পরিস্থিতির রিপোর্ট জানানোর নির্দেশ চসিকের ২৪তম সাধারণ সভা

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ৩০ জানুয়ারি, ২০২৩ at ৬:০৯ পূর্বাহ্ণ

আগামী মার্চ মাসের মধ্যে জলাবদ্ধতা নিরসনে চলমান মেগা প্রকল্পের আওতাভুক্ত খাল থেকে মাটি উত্তোলন করার জন্য সিডিএ’র প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। অন্যথায় আগামী বর্ষায় নগরবাসী জলাবদ্ধতার দুর্ভোগে পড়লে তার দায়ভার সিডিএকে বহন করতে হবে বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি। গতকাল অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) বর্তমান পর্ষদের ২৪তম সাধারণ সভায় এসব কথা বলেন মেয়র। এসময় কাউন্সিলর, পরিচ্ছন্ন বিভাগ এবং প্রকৌশল বিভাগকে যৌথভাবে আগামী ১০ দিনের মধ্যে খালনালার পরিস্থিতি রিপোর্ট আকারে জানানোর নির্দেশ দেন।

মেয়র বলেন, সিডিএ জলাবদ্ধতা হ্রাসে যে প্রকল্প পরিচালনা করছে; সেখানে রিটেনিং ওয়ালসহ নালাখাল ভরাট হয়ে যাওয়ায় চট্টগ্রামের অনেকগুলো এলাকার মানুষ খুব কষ্ট পাচ্ছে। আমি সিডিএ চেয়ারম্যান মহোদয় সহ সিডিএ’র ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বারবার বলেছি যাতে এ প্রকল্পে বর্ষার পানি চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়। সাধারণ সভায় উপস্থিত একাধিক কাউন্সিলরের সঙ্গে আলাপকালে তারা জানান, সভায় কর্মকর্তাকর্মচারীদের অবসরকালীন পেনশনের প্রস্তাব করা হয়। তবে মেয়র বিষয়টি পর্যালোচনা করে পরে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানান। এছাড়া ভ্যানগাড়িগসহ অযান্ত্রিক যানকে বারকোড সিস্টেমের মাধ্যমে লাইসেন্সের আওতায় এনে লাইসেন্স বর্হিভূত বাকি অযান্ত্রিক যানের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়। এছাড়া পেপার্কিং তথা নির্দিষ্ট স্থানে ফি এর বিনিময়ে পার্কিং চালু, যানজট নিরসনে ফ্রাইডে মার্কেট বা হকারদের নির্দিষ্ট স্থানে সপ্তাহে দুদিন শুক্র ও শনিবার ছুটির দিনে ব্যবসা করার অনুমতি দেয়া, যত্রতত্র যাত্রী উঠানামা বন্ধে যাত্রী ছাউনিগুলোতে দোকান বন্ধ এবং ফুটপাত দখল রোধের উপর জোর দেন মেয়র।

মেয়র বলেন, শহরের যানজটের জন্য ফুটপাত দখল করে ব্যবসা পরিচালনা, অনিয়ন্ত্রিত হকার ব্যবসা, অবৈধ পার্কিং সহ বেশ কিছু কারণ বের করেছি। যত্রতত্র যাত্রী উঠানামা বন্ধে যাত্রী ছাউনিগুলোতে দোকান বন্ধ এবং ফুটপাত দখল বন্ধ করব। পরিচ্ছন্ন করার জন্য বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে আধুনিকায়ন করা হচ্ছে।

মেয়র বলেন, জলাবদ্ধতা হ্রাসে বারইপাড়া খাল থেকে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত খননসহ গ্রীষ্মকালের মধ্যেই খালনালা ইত্যাদিতে জমা মাটি ও ময়লা পরিষ্কার করা হচ্ছে।

চট্টগ্রামের সৌন্দর্যবৃদ্ধিতে কাজ চলছে জানিয়ে মেয়র বলেন, চট্টগ্রাম শহরকে নান্দনিক নগরে পরিণত করতে সড়ক ও ফ্লাইওভার ডিজাইনের ক্ষেত্রে বৈচিত্র্যকে প্রাধান্য দিচ্ছি। চট্টগ্রাম শহরের যত্রতত্র বিলবোর্ড স্থাপন নিয়ন্ত্রণে থাকলেও পোস্টারের কারণে শহরের সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে। বিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে পোস্টারের জন্য নির্দিষ্ট স্থান বরাদ্দের কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। কোথাও অননুমোদিত বিলবোর্ড থাকলে তাও উচ্ছেদ করা হবে। শহরের আলোকায়ন বৃদ্ধির পাশাপাশি সাংস্কৃতিক কার্যক্রমকে বেগবান করতে এবারের একুশে বইমেলাকে আরো প্রাঞ্জল ও বৃহত্তর আকারে সাজানো হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার জন্য লড়ছেন তা বাস্তবায়নে চসিককে সম্মুখসারিতে নিয়ে যেতে চাই আমি।

কাউন্সিলর এবং সেবা সংস্থাসমূহকে সাথে নিয়ে চসিকের সেবা ও সেবার মান বাড়িয়ে চট্টগ্রামকে জলাবদ্ধতা ও যানজটমুক্ত একটি স্বাস্থ্যকর পরিচ্ছন্ন মডেল শহরে পরিণত করতে সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।

সভায় চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা চসিক শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, প্যানেল মেয়র, কাউন্সিলরবৃন্দ, সচিব খালেদ মাহমুদ, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মুহাম্মদ আবুল হাশেম সহ চসিকের বিভাগীয় প্রধান ও শাখা প্রধানগণ এবং নগরীর বিভিন্ন সরকারি সংস্থার প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআবার সুযোগ পেলে বিএনপি দশ ‘বাংলা ভাই’ বানাবে : তথ্যমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধশিক্ষা সফর নিয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষ