শোকগাথা গল্পের ট্রাজিক উল্লাসের নাম সীতাকুণ্ড বি এম ডিপো। স্তব্ধ চট্টগ্রামবাসী। চোখের পলকে দেখলাম, কর্ণ কুহুরের যা বার বার ভেদ করে আতঙ্কিত করে এক ভয়াবহ অবর্ণনীয় বিষাদের কারবালা। আগুন আগুন ধ্বনিতে ঝালাপালা বুকে সামলাতে না পেরে মানবকুল যে যেভাবে আছে তারই হিম্মত তলবে নেমে পরে আগুনের ভয়ানক লেলিহান থামাতে। আমরা সবাই মানুষ, মানুষকে বাঁচাতে আমাদের অবারিত কর্তব্য নিষ্ঠায় লড়ে যাব শেষ সামর্থটুকু দিয়ে। তারপর ও থামাতে পারিনি আগুনের জ্বলন্ত কুণ্ড। জ্বলছে আগুন। ধোয়াই একাকার।
বিষাদের হোলিতে দেখেছি মানবের দুঃসহ পথ পাড়ির এক অনবদ্য রজনী। কেউ আগুনে দগ্ধবিদ্ধ জনকে নিয়ে ছুটছে হাসপাতালে জরুরি বিভাগে, কেউ ছুটছে মৃত্যু পদযাত্রীর শবদেহ সংরক্ষণে, কেউ ছুটছে রক্ত প্রদানে, কেউ ছুটছে সেবক হয়ে অগ্নিদাহ্য জনের সেবক হয়ে সাহায্য সহযোগিতায়। যেখানে যা কমতি তা পুরনে জনতার এক অবিনাশী কার্যক্রম ছিল দেখার মত। মুগ্ধতায় সিক্ত হয়ে খোদার দরবারে শুকরিয়া শুকরিয়া করে ধ্বনিতে দেখলাম অন্যরকম চট্টল জনতাকে। যা ভুলা যায় না। অবিশ্বাস্য মনে হলেও এটাই সত্য গাড়ির ড্রাইভার ভাই বন্ধুরা বিনা পয়সায় রোগীর জন্য পানি ঔষধ সরবারহে নিজেদের সম্পুক্ত করেছেন। এমনকি চট্টগ্রাম সিএমএইচ– গিয়ে ফায়ার বিগ্রেড ফাইটার বন্ধুদের জন্য রক্ত দান করেছেন নিজ দায়িত্বে, মানবের জন্য আকুল মমত্বে।
সত্যিই এমন বিরল কর্মের যোগ্যতা নিরুপনে শুধু এটুকু বলতে পারি। মানুষ মানুষের জন্য। এমন কর্মকাণ্ডের তুলনা হয় না, হবে না কোনোদিন। সবই যেন বিদগ্ধ জনের পাশে এক কাতারে একাকার।
চট্টগ্রামে এরকম আরো সতেরটি ডিপো আছে বলে বিভিন্ন সুত্র মারফত জানা যায়। তাই বিপর্যয়ের নেতিবাচক ভাবমূর্তি কাটিয়ে চাই শিল্প খাত উত্তরণের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা। স্তব্ধ চট্টগ্রামবাসী বিচার চাই। শিল্প যেন হয়ে না উঠে মুনাফা অর্জনের হাতিয়ার। কারখানা হোক, ডিপো হোক তবে সর্বোচ্চ থাকতে হবে কর্মচারী কর্মকর্তাদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা। থাকতে হবে সর্ব নিয়মের ব্যতয়। জনগণ অধ্যুষিত এলাকায় এমন ডিপো কার্যক্রম না থাকা উত্তম। যারা বেঁচে আছেন, তারা আমার আত্মার স্বজন। সোনালী দিন আনতে প্রসারিত করুন ভালোবাসার সুমিষ্ট হাত। সবাই সুস্থ হয়ে ফিরে পাক নবজীবন। আকাশের সমুহ তারার মত জ্বলে উঠুক ভালোবাসার মানুষগুলো। হে দয়াময় সুমতি দাও! মানুষের পাশে মানুষের অবস্থান কে সুদৃঢ় করো। বিধাতা তুমি সহায়। ডিপো কর্তৃপক্ষ সদয় হোন। মানুষ কে মানুষ ভাবুন।