‘আঁধার ভেঙে আলোর বুননের’ তিন যুগ

বোধন আবৃত্তি উৎসব

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ১০ জুন, ২০২৩ at ৪:৫৯ পূর্বাহ্ণ

ধ্বনির সম্পদ আছে আমাদের চেতনার গভীরে, যে ধ্বনিতে দীপ্ত হয় চিরচেনা প্রিয় কন্ঠস্বর’ শিরোনামে বোধন আবৃত্তি পরিষদ চট্টগ্রামের দুদিনব্যাপী আবৃত্তি উৎসবের পর্দা উঠল গতকাল শুক্রবার। তিন যুগ পূর্তিতে নগরীর জেলা শিল্পকলা একাডেমীতে ঢাকা, কলকাতাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের আবৃত্তিকারদের অংশগ্রহণে আয়োজিত হয়েছে বোধন আবৃত্তি উৎসব। গতকাল সকাল ১০টায় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনের মধ্য দিয়ে উৎসবের শুভ সূচনা ঘটে।

অতিথিদের প্রদীপ প্রজ্বলন ও বোধনের সদস্যবৃন্দের পরিবেশনায় উদ্বোধনী আবৃত্তি কবি উৎপলকান্তি বড়ুয়ার রচনায় ‘আঁধার ভেঙে আলোর বুনন’ পরিবেশিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ আবৃত্তি শিল্পী সংসদের সভাপতি একুশে পদকপ্রাপ্ত জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, বোধনের সাথে আমার আত্মিক সম্পর্ক, তা আরো দৃঢ় হচ্ছে। আমি ৫০ বছর বোধনকে দেখে যাব, আমার পুত্র কন্যারা দেখে যেতে পারবে শত বছর। বোধন দীর্ঘজীবী হোক।

বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রের মহাব্যবস্থাপক নূর আনোয়ার হোসেন (রনজু)। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলে পরিবেস্টিত। সেখানে বোধন শক্তিশালী জায়গা করে নিয়েছে। অনেক বাধা পেড়িয়ে এসেছে বোধন, বোধন যা করছে; তার জন্য শুভকামনা। উদ্বোধনী অধিবেশনে আরও বক্তব্য দেন বোধনের প্রতিষ্ঠাতা এডভোকেট বিশ্বজিৎ দাশ ভুলু, প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য অঞ্চল চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রদীপ দাশ এবং বোধনের উপদেষ্টা লিলি বড়ুয়া। বোধনের সভাপতি আবদুল হালিম দোভাষের সভাপতিত্বে উৎসব ঘোষণা পাঠ করেন বোধনের নির্বাহী সদস্য সুদীপ বড়ুয়া খোকন। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন সহসভাপতি আবৃত্তিশিল্পী শিমুল নন্দী। সম্মাননা প্রদান করা হয় বোধনের প্রতিষ্ঠাতা এডভোকেট সুভাষ বরণ চক্রবর্তী, এডভোকেট বিশ্বজিৎ দাশ ভুলু ও এডভোকেট স্বপন চক্রবর্তী এবং প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য অঞ্চল চৌধুরী, ইন্দিরা চৌধুরী, সালমা নিগার ছন্দা, পারভেজ চৌধুরী ও প্রশান্ত চক্রবর্তী। স্মারক গ্রহণ করেন বোধনের উপদেষ্টা এডভোকেট স্বভু প্রসাদ বিশ্বাস, ফজল হোসেন, লিলি বড়ুয়া, পিযুষ কান্তি বিশ্বাস, সাইফুল আলম বাবু এবং সুব্‌েহ খান বাসু। উদ্বোধনী পর্ব সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আবৃত্তিশিল্পী প্রণব চৌধুরী। বিকাল সাড়ে তিনটায় শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে বৈকালিক আয়োজন শুরু হয়। বোধনের সাবেক প্রযোজনা সম্পাদক প্রয়াত আবৃত্তিশিল্পী সুমন বিশ্বাসকে নিবেদিত ‘তারুণ্যের জয়গান’ পর্বে একক আবৃত্তি পরিবেশন করেন অনির্বাণ চৌধুরী, ঐশী পাল, উম্মে সালমা নিঝুম, বর্ষা চৌধুরী এবং মৃত্তিকা চক্রবর্তী। ‘নয়ন তোমায় বড্ড হারায়’ পর্বে গান ও আবৃত্তি পরিবেশন করেন প্রশান্ত চক্রবর্তী ও পপলী চক্রবর্তী। ‘নানা জনপদের কথা’ পর্বে একক আবৃত্তি পরিবেশন করেন সংগীতা চৌধুরীঢাকা ,সুকান্ত গুপ্তসিলেট, মাহবুবুর রহমান টুনুসিলেট, চিংলামং চৌধুরীখাগড়াছড়ি এবং অরুণা দত্তচট্টগ্রাম। ‘মিলন হলো দোঁহে’ শিরোনামে দ্বৈত আবৃত্তি পরিবেশন করেন মেজবাউর মোকাম রাবিন ও পলি পারভীন (ঢাকা) এবং মিলি চৌধুরী ও ফারুক তাহের ( চট্টগ্রাম)। এরপর সুমন্ত্র সেনগুপ্ত, চন্দন মজুমদার, পার্থপ্রতিম পান ও জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় প্রযোজিত এবং পলাশ দাসের সহপ্রযোজনা ও পরিচালনায় আবৃত্তি সাধক উৎপল কুন্ডুর জীবন ও আবৃত্তি চর্চার ওপর নির্মিত তথ্যচিত্র ‘অতএব উৎপল’ প্রদর্শন করা হয়। তথ্যচিত্রটি সম্পর্কে বলেন ডাঃ পার্থ প্রতিম পান। এরপর মোমবাতি হাতে বোধনের সকল সদস্য ও দশর্কদের অংশগ্রহণে সমবেত আবৃত্তি পরিবেশিত হয় কবি উৎপল কান্তি বড়ুয়ার রচনায় ‘আঁধার ভেঙ্গে আলোর বুনন’। ‘প্রিয়তম পদাবলী’ পর্বে একক আবৃত্তি পরিবেশন করেন মাসকুরসাত্তারকল্লোল (ঢাকা), ইন্দিরা চৌধুরী, সালমা শবনম এবং আয়েশা হক শিমু।

বোধনের সাবেক সভাপতি রণজিৎ রক্ষিত স্মরণে কবি ফাউজুল কবিরের কবিতা ‘মন ভালো হলে চলে এসো’ পরিবেশন করেন শিমুল নন্দী, প্রনব চৌধুরী, জাভেদ হোসেন এবং মাইনুল আজম চৌধুরী। পর্বটি সঞ্চালনা করেন রাজিউর রহমান বিতান।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনায়ক ফারুকের আসনে নৌকার মাঝি আরাফাত
পরবর্তী নিবন্ধঅনলাইনে নারীর প্রতি সহিংসতা ও হয়রানি বাড়ছে