আঁখি এখন সন্তানের পাশে, দেখা হলো না দুজনার

এমন মৃত্যু দুঃখজনক, বললেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী

| সোমবার , ১৯ জুন, ২০২৩ at ৫:১০ পূর্বাহ্ণ

অস্ত্রোপচার ছাড়াই সন্তান জন্ম দিতে চেয়েছিলেন মাহবুবা রহমান আঁখি, সেই আশায় ভরসা চাইছিলেন চিকিৎসকের কাছে। কিন্তু চিকিৎসায় ‘অবহেলায়’ আঁখি হারিয়েছেন নবজাতক, শেষমেশ নিজেও চিরবিদায় নিয়েছেন। দেখা হলো না মাসন্তানের। এখন তারা পাশাপাশি, ময়নাতদন্তের জন্য দুজনের প্রাণহীন দেহ রাখা হয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে। গতকাল রোববার দুপুরে মা আঁখির মৃত্যুর পর বিকালে ধানমণ্ডি থানা পুলিশ দুইজনের মরদেহ মর্গে এনে রেখে যায়। আজ সোমবার তাদের ময়নাতদন্ত হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে। খবর বিডিনিউজের।

নবজাতকের মৃত্যুর পর থেকেই মরদেহ সেন্ট্রাল হাসপাতালের মরচুয়ারিতে ছিল জানিয়ে ধানমণ্ডি থানার ওসি পারভেজ ইসলাম বলেন, আঁখির অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় নবজাতকের লাশ তার বাবা ইয়াকুব আলী সুমনের অনুরোধে ময়নাতদন্তের জন্য না পাঠিয়ে হিমঘরে রাখা হয়। আঁখি মারা যাওয়ার পর তার এবং নবজাতকের মরদেহ একসাথে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হসপাতালের মর্গে নেওয়া হয়েছে। কুমিল্লার তিতাসের বাসিন্দা মাহবুবা রহমান আঁখি গর্ভে সন্তান আসার পর থেকে ঢাকার সেন্ট্রাল হাসপাতালের প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সংযুক্তা সাহার চিকিৎসা নিয়েছেন। প্রসবব্যথা উঠলে গত ৯ জুন মধ্যরাতে কুমিল্লা থেকে সেন্ট্রাল হাসপাতালে তাকে নিয়ে আসে তার পরিবার। ইয়াকুব আলীর ভাষ্য, তার স্ত্রীকে ভর্তির সময় ডা. সংযুক্তা হাসপাতালেই আছেন বলা হলেও আসলে তিনি ছিলেন না। সেই রাতে ওই চিকিৎসকের সহকারীরা প্রথমে স্বাভাবিকভাবে বাচ্চা প্রসবের চেষ্টা করেন। সে সময় জটিলতা তৈরি হলে অস্ত্রোপচার করা হয়। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে জন্ম নেওয়া শিশুটি ওইদিনই মারা যায়। সংকটাপন্ন অবস্থায় আঁখিকে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল রোববার দুপুরে তার মৃত্যু হয়।

এই ঘটনাকে ‘দুঃখজনক’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক। গতকাল বিকালে তিনি বলেন, এ ধরনের মৃত্যু অপ্রত্যাশিত। আমাদের আশা থাকে বেসরকারি হাসপাতালে মানসম্মত সেবা দেবে। এ ধরনের অবহেলাজনিত মৃত্যু দুঃখজনক।

আইসিইউ ও জরুরি সেবার মান সন্তোষজনক না হওয়ায় সেন্ট্রাল হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারের কার্যক্রম ইতোমধ্যে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। গাইনি ও প্রসূতি বিভাগের চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. সংযুক্তা সাহা ওই হাসপাতালে আপাতত কোনো বিশেষজ্ঞ সেবা দিতে পারবেন না বলেও নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ এনে ধানমণ্ডি থানায় মামলা করেছেন আঁখির স্বামী ইয়াকুব। সেই মামলায় ডা. সংযুক্তা সাহার দুই সহযোগী ডা. শাহজাদী মুস্তার্শিদা সুলতানা ও ডা. মুনা সাহাকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

আঁখির চাচাতো ভাই শামীম গতকাল রোববার সন্ধ্যায় বলেন, সন্তান হওয়ার সময় অজ্ঞান ছিল আঁখি। আর তারপর থেকেই সংকটাপন্ন ছিল। সন্তানের মুখ আর দেখতে পেল না।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ২০০০ টাকা ন্যূনতম কর সব টিআইএনধারীর জন্য নয় : পরিকল্পনামন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধবাজেট নিয়ে সিপিডির সংলাপে উত্তাপ ছড়ালেন মান্নান-খসরু