বর্তমান সমাজে ‘ইগো’ বহুল পরিচিত একটি শব্দ। আর এই শব্দটির সাথে আমরা কমবেশি সবাই পরিচিত। শব্দটি মূলত ইংরেজি হলেও বাংলায় মোটামুটি প্রচলিত হয়ে গেছে। কেউ যদি জীবনের যে কোনো কাজে কারো তুলনায় সফলতার সিঁড়ি দিয়ে দ্রুত এগিয়ে যায় তখন তারমধ্যে এক ধরনের অহংকারবোধ জাগ্রত হয়। যা তাকে প্রবলভাবে প্রভাবিত করে। যদি কারো মনে বিন্দুমাত্র হিংসা জন্ম নেয় তাহলে আমরা বুঝে নিতে পারব তার ইগো প্রবলেম আছে। ইগো সামাজিক ব্যাধিও বটে। নিজের উপর বড়ত্বের একটি অস্বাভাবিক বিশ্বাস যার সাথে মিশে থাকে অতি অহংকার, গর্ববোধ, আত্মকেন্দ্রিক ও স্বার্থপর উচ্চাকাঙ্ক্ষা। প্রতিটি মানুষের মাঝে ইগো কাজ করে, তবে সেই ইগো যদি মাত্রাতিরিক্ত হয় তাহলে তা নিয়ন্ত্রণে আনা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। ধারণা করা যায় যে, নিজের প্রতি অস্বাভাবিক ও অবাস্তব উঁচু ধারণা একজন মানুষের সাফল্যের যাত্রাকে পুরোপুরি থামিয়ে দিতে পারে। এমনকি জীবনের উপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয় যা ঐ ব্যক্তির মস্তিষ্কের উপর দারুণভাবে প্রভাব ফেলে। যেসব মানুষের মাঝে প্রবল ইগো কাজ করে সেসব মানুষ কোনো কাজে ভুল করলে তা স্বীকার করতে চায় না অনেক সময় নিজের ভুল বুঝতে পারলেও তার জন্য বিন্দুমাত্র অনুতপ্ত হয় না। পাছে যদি কারো কাছে ছোট হয়ে যায়। মানুষের মধ্যে অহংকার আত্মমর্যাদা এসব থাকবে এটাই স্বাভাবিক। তবে তা যদি হয় আত্মকেন্দ্রিক তখন সেখানে সফলতার চেয়ে ব্যর্থতার গ্লানিটাই বেশি ভোগ করতে হয়। ইগো কখনো সুন্দর সম্পর্ককে যথার্থতা দিতে পারে না বরং সেই সম্পর্কের মাঝে ফাটল তৈরি করে যা কখনোই জীবনের জন্য কাম্য নয়। আসুন আমরা প্রত্যেকে আমাদের ইগো সংযত করি। প্রতিটি সম্পর্কের সঠিক মর্যাদা দেই। বিনয়ী হই। সুন্দর মনোভাব, ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে নিজেদের বিচক্ষণতার পরিচয় ফুটিয়ে তুলি। তবেই দেশ জাতি সমাজ আলোয় আলোকিত হয়ে উঠবে।