এবারের বিশ্বকাপে দু’দলের শুরুটা একই। যদিও হার দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করলেও দ্বিতীয় ম্যাচেই বাংলাদেশকে হারিয়েছিল ইংল্যান্ড। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া হেরেছে টানা দ্বিতীয় ম্যাচে। তবে এরপর অসিরা ঘুরে দাড়ালেও ইংলিশরা পারেনি। একের পর এক হেরেই চলেছে গত আসরের চ্যাম্পিয়ণরা। অস্ট্রেলিয়া এরই মধ্যে সেমিফাইনালের পথে অনেক দূর এগিয়ে গেছে। অপরদিকে ইংলিশরা এখন শেষ আটে থাকার লড়াই করছে। নাহয় চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলা হবেনা তাদের। আজ তাই দ্বিতীয় জয়ের লক্ষ্যে মাঠে নামবে ইংল্যান্ড। অপরদিকে অস্ট্রেলিয়ার লক্ষ্য টানা পঞ্চম জয় তুলে নেওয়া। এমনই এক গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে সর্বশেষ অ্যাশেজের তাজা স্মৃতি নিয়ে আজ পুরানো শত্রু ইংল্যান্ডকে হতাশাজনক ওয়ানডে বিশ্বকাপ অভিযানের ইতি টানতে চায় অস্ট্রেলিয়া। টানা চার জয়ের স্বাদ পাওয়া অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বিশ্বের বৃহত্তম ক্রিকেট স্টেডিয়াম আহমেদাবাদে খেলতে নামবে ইংল্যান্ড। ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে। দশ দলের চলমান বিশ্বকাপে ৬ ম্যাচে ১টি জয় ও ৫টি হারে মাত্র ২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তলানিতে আছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। গাণিতিকভাবে অলৌকিক কিছু ঘটলেই কেবলমাত্র সেমিফাইনালে খেলার সম্ভাবনা আছে জশ বাটলারের দলের। আর অসিদের কাছে হারলে ২ ম্যাচ বাকি থাকতেই টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিশ্চিত হবে ইংল্যান্ডের। দলের দুই প্রধান খেলোয়াড় গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ও মিচেল মার্শকে ছাড়াই মাঠে নামবে পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। লক্ষ্নৌতে বিশ্বকাপে নিজেদের সর্বশেষ ম্যাচে স্বাগতিক ভারতের কাছে ১শ রানের বড় ব্যবধানে হেরেছে ইংল্যান্ড। ঐ হারের পর দলের বাজে ব্যাটিং লাইন–আপ এবং ড্রেসিংরুমের অস্থিরতার বিষয়ে প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছিলেন ইংলিশ কোচ ম্যাথু মট। তবে মটকে নিয়ে করা সমালোচনার সাথে একমত নন ইংল্যান্ডের ওপেনার ডেভিড মালান। তিনি মনে করেন বিশ্বকাপ অভিযান শেষ হয়ে গেছে ২০১৯ চ্যাম্পিয়নদের। টানা হারে আত্মবিশ্বাসে চিড় ধরেছে খেলোয়াড়দের। বিবিসিকে মালান বলেন শুধুমাত্র কোচের উপরই দায়িত্ব বর্তায় না। আমরা যখন খেলতে নামি তখন খেলোয়াড় হিসেবে আমাদেরই পুরো দায়িত্ব নিতে হয়। পারফর্ম করার জন্য যা যা করা দরকার সব কিছুই আমাদের দেওয়া হচ্ছে। সুযোগ–সুবিধা এবং কাজ, সবকিছু আগের মতোই দেওয়া হয়েছে। এটা সত্যি যে আমরা এই মুহুর্তে কোন ছন্দ বা ভালো অবস্থায় নেই। আমরা এমন পরিস্থিতিতে অভ্যস্ত নই। বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের একমাত্র জয়টি এসেছে বাংলাদেশের বিপক্ষে। আফগানিস্তানের কাছে হারের পর সর্বশেষ দুই ম্যাচে ব্যাট হাতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয় ইংলিশরা। শ্রীলংকার বিপক্ষে ১৫৬ এবং ভারতের বিপক্ষে ১২৯ রানে গুটিয়ে যায় বাটলার–রুটরা। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হারলে শুধুমাত্র বিশ্বকাপ সেমিফাইনালের দৌড় থেকেই ছিটকে যাবে তা কিন্তু না। সে সাথে ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলার সুযোগ হারানোর ঝুঁকিতে পড়বে ইংল্যান্ড। ওয়ানডেতে এখন অবধি ১৫৫ ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে অস্ট্রেলিয়া–ইংল্যান্ড। ৮৭টিতে জিতেছে অসিরা। ৬৩টিতে জয় আছে ইংলিশদের। বিশ্বকাপের মঞ্চেও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এগিয়ে অস্ট্রেলিয়া। ৯বারের লড়াইয়ে অসিদের জয় ৬টিতে ও ইংলিশদের জয় ৩টিতে। গত বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের। ম্যাচটি ৮ উইকেটে জিতে ফাইনালে উঠেছিলো ইংলিশরা। শেষ পর্যন্ত প্রথমবারের মত বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ পেয়েছিল ইয়োইন মরগানের দল। তাই আজকের ম্যাচে জয় ছাড়া আর কিছু ভাবছেনা অস্ট্রেলিয়া। যদিও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দলের দুই সেরা খেলোয়াড়কে পাচ্ছে না অস্ট্রেলিয়া। গলফ খেলতে গিয়ে ইনজুরিতে পড়েন ম্যাঙওয়েল এবং ব্যক্তিগত কারণে দেশে ফিরে গেছেন মার্শ। দলটির মিডল অর্ডার ব্যাটার লাবুশেন জানিয়েছেন, ইংল্যান্ড এখনও ‘বিপজ্জনক’ দল এবং এই মুহূর্তে তারা কেমন পারফরমেন্স করছে সেটি দেখে নিশ্চিন্ত হবার উপায় নেই। ৬ ম্যাচে ৪ জয়ে ৮ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তৃতীয়স্থানে আছে প্যাট কামিন্সের অস্ট্রেলিয়া। সেমিফাইনালের টিকিটের জন্য বেশ ভালো অবস্থায় রয়েছে অসিরা।