বাংলাদেশ বিশ্বের ঘনবসতিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে একটি। প্রাণের স্পন্দন বাংলাদেশে আমাদের বসবাস। কিন্তু আমরা আজীবন দুঃখী থেকে গেলাম। বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে শিশুদের নিয়ে আগেও অনেক আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশ শিশু দিবস, শিশু আইন পালন করা হয়। তবুও বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে পথ শিশুদের জীবন অবহেলায় বিচরণ করছে আজো। শহরের প্রতিদিনের দৃশ্য- থালা হাতে ছোট শিশু কেঁদে কেঁদে বলে ‘একটা টেহা দ্যান, খাই নাই কিছুই সক্কাল থাইয়া’। অথচ শিশুরাই হচ্ছে আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। কিন্তু অযত্নে অবহেলায় পথে পথে ঘুরে বেড়াচ্ছে অন্ন জোগানোর জন্য। কেউ সকালে পত্রিকা হাতে নিয়ে বলছে একটা পত্রিকা নেন না, কেউ সংসারে অসুস্থ মায়ের ওষুধ কেনার জন্য বস্তা হাতে নেমে পড়েছে ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলে। শিশু নাম পরিবর্তন করে হয়ে গেছে রাস্তার টোকাই। যারা ‘টোকাই’ নামে পরিচিত। যে বয়সে হাতে কলম থাকার কথা, পাঠশালায় যাওয়ার সময়, ভবিষ্যতের লক্ষ্যে পৌঁছাতে হবে সে সময়ে পরিবারের হাল ধরতে পথে নেমে পড়ে শিশু। যাদের আমরা পথ শিশু বলে জানি। এই পথচারী শিশুদের ভবিষ্যৎ স্বপ্ন শূন্যে বেলুন ভাসার মতো। যার কোন গন্তব্য নেই। শিশুরা হচ্ছে ভালোবাসার প্রতীক, ভবিষ্যতের ফুল। শিশু সুরক্ষা প্রত্যেকেরই দায়িত্ব। শিশু নির্যাতন থেকে রক্ষা করাও আমাদের সকলের কর্তব্য। দরিদ্র ও অশিক্ষিত মানুষের অপরিকল্পিত ভাবে সন্তান জন্মদান দিন দিন বেড়েই চলেছে। দারিদ্র বিমোচন করতে পরিবারের পিতা মাতারা সন্তানদের নামিয়ে দিচ্ছে পথে। কেউ ফুল বিক্রি করে, কেউ ঠেলা ঠেলে, কেউ কাগজ কুঁড়ায়, কেউ বাসা বাড়িতে কাজ করে না হয় কেউ ইট ভাঙে। কোন কোন কাজ খুঁজে নেয় শিশুরা জীবিকা নির্বাহ করতে। এইভাবে চলতে থাকলে পথ শিশু দিন দিন বেড়েই যাবে। আর দিন দিন পথচারী শিশু বৃদ্ধি পাওয়ার মূল কারণ দারিদ্র ও অশিক্ষিত পরিবার।পথচারী শিশু অর্থাৎ যে শিশুদের কোন গন্তব্য নেই তাদের জন্য আইনের পাশাপাশি পারিবারিক ও সামাজিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। শিশুদের জন্য প্রধান বিবেচ্য বিষয় হবে মৌলিক বিষয়গুলো নিশ্চয়তা করা। তবেই শিশুরা যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে সক্ষম হবে। প্রত্যেক শিশুই সম্ভাবনার যোগ্য। তাই কোনো শিশুর মধ্যে বৈষম্য রাখা যাবে না।