অরুণ দাশগুপ্ত : জ্ঞানে পাণ্ডিত্যে অসাধারণ ব্যক্তিত্ব

নেছার আহমদ | শুক্রবার , ১০ ডিসেম্বর, ২০২১ at ৬:৪৬ পূর্বাহ্ণ

অরুণ দাশগুপ্ত একাধারে কবি, সাংবাদিক, সঙ্গীতজ্ঞ, বুদ্ধিজীবী ও সমাজসংস্কারক। একজন মনীষী। তাঁর ঋষিতুল্য জীবনাচার বিগত সময়গুলোতে চট্টগ্রামের সংস্কৃতি অঙ্গনের অনেককেই আকর্ষণ করেছে। তাঁর সততা এবং সাহিত্যের জগত তাঁর দক্ষতা এবং লেখক তৈরির কারিগর হিসেবে তাঁর নিরলস প্রচেষ্টা বিগত শতাব্দীর শেষের দশকগুলোতে সকলকে ভীষণভাবে প্রণোদিত ও প্রভাবিত করেছে। তাঁর কবিতা, গদ্য, আর বক্তৃতামালা সকল পর্যায়ের লোকদেরকে আচ্ছন্ন করে রেখেছে। তিনি চট্টগ্রামের নবীন ও প্রবীণ সকল লেখকের কাছে সাধকপুরুষ। কবিদের কবি, লেখকদের লেখক, চিন্তকদের চিন্তাবিদ এবং নির্লোভ এক মানব হিসেবে খ্যাত অরুণ দাশগুপ্ত।
চট্টগ্রামের বিপ্লবতীর্থ পটিয়ার ধলঘাটে ১৯৩৬ এর ১ জানুয়ারী প্রখ্যাত জমিদার বংশে অরুণ দাশগুপ্ত জন্মগ্রহণ করেন। পিতা অবিনাশচন্দ্র দাশগুপ্ত ও মাতা হেমপ্রভা দাশগুপ্ত। পটিয়ার ধলঘাটের স্থানীয় পাঠশালায় অরুণ দাশগুপ্তের শিক্ষা জীবনের হাতেখড়ি। উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের উদ্দেশ্যে পরবর্তীতে কলকাতা চলে যান, সেখানে কালাধন ইনস্টিটিউশন সাউদার্ন থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা পাস করেন এবং স্কটিশ চার্চ কলেজ, কলকাতা হতে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করেন। উচ্চ মাধ্যমিক পাসের পর পরবর্তীতে বিশ্বভারতীতে লোকশিক্ষা সংসদের ছাত্র হিসেবে বিদ্যার্জন করেছেন। কলকাতার দৈনিক লোকসেবক পত্রিকার মধ্যে দিয়ে সাংবাদিকতার জীবন শুরু।
ছাত্রকালীন তরুণ বয়সে বাম ধারার রাজনীতি ও ভাবাদর্শ তাঁকে অসাধারণ সাহস ও ত্যাগের মন্ত্রে উদ্দীপ্ত করেছে। তারুণ্যের সময় বিগত শতকের ষাট বা সত্তর দশকে তিনি গ্রামীণ জনপদে শিক্ষাবিস্তারের লক্ষ্যে আন্দোলন করতে গিয়ে শিক্ষকতার পেশায় সম্পৃক্ত হয়েছেন। জমিদার পরিবারের সন্তান হয়েও ধন সম্পদ কখনো তাঁকে আকর্ষণ করতে পারেনি, বরং সাম্যবাদী প্রগতিশীল দর্শন তাকে ত্যাগ ও ঋষিত্বের এক অনন্য উচ্চতায় আসীন করেছে। তিনি মুক্তিযুদ্ধের মৌলচেতনা প্রতিষ্ঠায় বিগত সময়গুলোতে প্রতিটি প্রগতিশীল আন্দোলন সংগ্রামে সামনের সারিতে থেকে সকলকে সাহস জুগিয়েছেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর, পাকিস্তান জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে ফজলুল কাদের চৌধুরীকে পরাজিত করে যিনি সমগ্র পাকিস্তানে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন এবং স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়ন কমিটির অন্যতম সদস্য হিসেবে কাজ করেছেন তিনি হলেন অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ। অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদের ঘনিষ্ঠ সহচর হিসেবে দেশের স্বাধীনতা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে স্বৈরাচার ও সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামের সহযাত্রী হলেন অরুণ দাশগুপ্ত। স্বাধীন বাংলাদেশে প্রাথমিকভাবে মানুষ গড়ার কারিগর শিক্ষকতাকেই পেশা হিসেবে গ্রহণ করেছেন। পরবর্তীতে অপ্যাপক মোহাম্মদ খালেদের হাত ধরে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পত্রিকা দৈনিক আজাদীর সাথে যুক্ত হয়ে কাজ শুরু করেন সহ-সম্পাদক হিসেবে। সেই ১৯৭৩ সাল থেকে সহ সম্পাদক হিসেবে শুরু। তিনি দৈনিক আজাদীর সাহিত্য সম্পাদক হিসেবে আমৃত্যু দায়িত্ব পালন করেছেন।
চট্টগ্রাম শহর কেন্দ্রিক লেখক তৈরী ও মানসগঠনের ক্ষেত্রে অনেকগুলো আড্ডার কথা ইতিহাস হয়ে রয়েছে। চট্টগ্রাম শহরে যে কয়টি আড্ডা, লেখালেখি এবং সংস্কৃতি চর্চার নিয়ামক ভূমিকা রেখেছে তার একটি হল বৌদ্ধ মন্দির সংলগ্ন “কল্যাণী” যেটি কবি ও সাংবাদিক অরুণ দাশগুপ্তের বাসার আড্ডা। এ আড্ডায় চট্টগ্রামের নবীন ও প্রবীণ প্রায় সকলেই উপস্থিত হতেন। দৈনিক আজাদীর প্রয়াত সম্পাদক অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ, ড. অনুপম সেন, ড. হরেন দে, কবি শামসুর রাহমান, আসাদ চৌধুরী, মুহম্মদ নুরুল হুদা, আবু বকর সিদ্দিক, মনিরুজ্জামান থেকে শুরু করে আমার মতো নবীনরাও এবং মুক্তবুদ্ধির চর্চাকারী সকলেই ছিলেন এ আড্ডার আড্ডারু।
তিনি লেখালেখি করেছেন প্রচুর। প্রবন্ধ লিখতেন তিনি। এক্ষেত্রে তাঁর পছন্দের বিষয় ছিল রবীন্দ্রনাথ। কলকাতায় অবস্থানকালীন সময়ে রবীন্দ্রসংগীতে তালিম নিয়েছিলেন গুণী শিল্পীদের কাছে। মাঝে মধ্যে ছোট পরিসরের আড্ডায় রবীন্দ্রসংগীত গেয়েও শোনাতেন। চট্টগ্রামে রবীন্দ্রসংগীত প্রতিযোগিতায় বিচারকের দায়িত্বও পালন কাজও করেছেন বহুবার। আজাদীর প্রয়াত সম্পাদক অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ তাঁকে অনুজের মতো স্নেহ এবং বিশ্বাস করতেন।
অধ্যাপক খালেদ যতদিন বেঁচে ছিলেন অরুণ দাশগুপ্তের পরামর্শ ছাড়া কোন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত সহজেই নিতেন না। দীর্ঘদিন নিউজ ডেস্কে কাজ করার পর তিনি এডিটেরিয়াল সেকশনে যোগ দেন। নিউজ ডেস্কে থাকার সময় থেকেই তিনি আজাদীর সাহিত্যপাতা সম্পাদনা করছেন। কাজটা করে তিনি খুবই আনন্দ পেতেন।
লেখালেখির বয়স দীর্ঘ হলেও তাঁর বইয়ের সংখ্যা খুবই কম, যা তাঁর অনুরাগীদের পীড়ার কারণ। তিনি সৃষ্টিতে ছিলেন যেমন উদার হস্ত কিন্তু বই প্রকাশের ছিলেন ততটা অনাগ্রহী। মাত্র দুটি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে তাঁর। বইগুলো ১. রবীন্দ্রীনাথের ছয় ঋতুর গান ও অন্যান্য, ২. যুগপথিক কবি নবীনচন্দ্র সেন।
অরুণ দাশগুপ্তের লেখা ‘রবীন্দ্রনাথের ছয় ঋতুর গান ও অন্যান্য’ গ্রন্থটির ভূমিকায় শিক্ষাবিদ ড. অনুপম সেন লিখেছেন, ‘রবীন্দ্রনাথের ঋতুর গান ও কবিতা সীমাহীন সুন্দর। সুর বাণীতে এবং বাণী ও সুরে মিলেমিশে আমাদের দেখা বিভিন্ন ঋতুর দিনগুলো অন্তরের চোখে ও কানে অপরূপ রূপে ও মাধুর্যে মূর্ত হয়েছে তার গানে; কীভাবে, তা-ই বর্ণনা ও ব্যাখ্যা করেছেন কবি অরুণ দাশগুপ্ত তাঁর এই ঋদ্ধ গ্রন্থে।’
অরুণ দাশগুপ্ত নিজে লিখেছেন, ‘রবীন্দ্রনাথের গান বাঙালির মূল্যাতীত সম্পদ। অনন্য সংগীতস্রষ্টাতিনি। রবীন্দ্রনাথের তুল্য কম্পোজার পৃথিবীর সংগীতের ইতিহাসে বিরল। সংগীতস্রষ্টা হিসেবে তিনি বিটোফেন ভাগনার, মোজার্ট, সেবাস্টিয়ান বাখ, হ্যান্ডেল, চাইকফস্কির সঙ্গে তুলনীয় হলেও সংগীতের নৈর্ব্যত্তিক চরিত্রকে ব্যক্তিক করেছেন তিনি। সংগীতের বিমূর্ততাকে মূর্ত করা ও সুরের মানবায়ন ঘটানোতে তার তুল্য কোনো সংগীতস্রষ্টা খুঁজে পাওয়া দুষ্কর রবীন্দ্রনাথ অত্যুৎকৃষ্ট সুর ও অত্যুৎকৃষ্ট কবিতাকে মিলিয়ে দিয়েছেন। তার মতে সংগীতের মানবায়ন আর কেউ ঘটাতে পেরেছেন কিনা সন্দেহ। রবীন্দ্রনাথের ঋতুর গানগুলোর দিকে নজর দিলে আমরা সেটা অনেকটা বুঝতে পারি। গানের বাণী ও সুরের এমন যুগল সম্মিলন রীতিমতো বিস্ময়কর।’
যুগপথিক কবি নবীনচন্দ্র সেন অরুণ দাশগুপ্তের দ্বিতীয় গ্রন্থ। গ্রন্থ বিষয়ে তিনি বলেছেন, ‘বাংলা কবিতায় ঊনবিংশ শতাব্দীর বাঙালি রেনেসাঁসের নান্দীপাঠ করেন মাইকেল মধুসূদন দত্ত, রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়, হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় ও নবীনচন্দ্র সেন। মধুসূদনের সাহিত্যে ঊনিশ শতকের রেনেসাঁসের যে ঢেউয়ের দোলা এসে লেগেছিল এবং তাঁর ফলে তাঁর সাহিত্যে যে নতুন জীবনবোধ ও চেতনার রূপায়ন ঘটে চট্টগ্রামের কবি নবীনচন্দ্র সেন তারই উত্তর সাধক।’ বর্ণিত প্রবন্ধ গ্রন্থ দু’টি আমাদের প্রকাশনা ও প্রবন্ধ সাহিত্য অঙ্গনে অমূল্য সম্পদ হিসেবে বিবেচিত।
সব কিছুর বাইরে তাঁর অনেক পরিচয়ের মধ্যে মূল পরিচয় হলো তিনি কবি। অজস্র কবিতা লেখা হলেও কবিতার কোনো বই তাঁর বের হয়নি। যদিও তাঁর কবিতা অন্য অনেকের চেয়ে আলাদা ও মর্যাদাসম্পন্ন। আত্মগত ভাবনা আর অন্তর্গত বেদনার ছায়াচিত্র তাঁর কবিতার অবয়বে ধরা দিয়েছে। অরুণ দাশগুপ্ত কবি, কবিদের কারিগর, তিনি মূলত কবি অন্তর্লোক অবলোকন করেন কবিতায়। তাঁর ভাষারীতি ও আঙ্গিক ধ্রুপদ মার্গেও কথা স্মরণ করিয়ে দেয় প্রতিমুহূর্তে। শব্দ ও বোধ যোজনের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ভিন্নস্বরের কাব্যকলা নির্মাণে সচেষ্ট থেকেছেন তিনি।
বাংলাদেশ সাহিত্য পরিষদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন ছাড়াও তিনি চট্টগ্রাম চলচ্চিত্র কেন্দ্রের সাথে সম্পৃক্ত থেকে কাজ করেছেন। অরুণ দাশগুপ্তের ‘রবীন্দ্রনাথের ছয় ঋতুর গান ও অন্যান্য’ গ্রন্থ নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে ড. অনুপম সেন লিখেন, ‘অরুণ দাশগুপ্তের রবীন্দ্রনাথের ছয় ঋতুর গান ও অন্যান্য’ বইটি আমাদের রবীন্দ্রসংগীতের সীমাহীন সুন্দর ভুবনে নিয়ে যাওয়ার পথপ্রদর্শী এক অমূল্য গ্রন্থ। তাঁর এই গ্রন্থের প্রথম প্রবন্ধে রবীন্দ্রসংগীতের অন্তহীন সৌন্দর্যের সন্ধান দিয়ে তাঁর বৈশিষ্ট্য কোথায়, কীভাবে তা ভারতীয় সংগীতকে বিশ্বসংগীতের আসরে নিয়ে গেছে, কীভাবে তা প্রাচ্য ও পশ্চাত্যের দুই সুরধারার সম্মিলন ঘটিয়ে এক নতুন আধুনিক সুরধারার সৃষ্টি করেছে যা আধুনিক হলেও ভারতীয় মার্গ সংগীতের ঐতিহ্যেই প্রোথিততা অত্যন্ত গভীরভাবে, কিন্তু সরল ভাষায় তিনি ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি দেখিয়েছেন, রবীন্দ্রনাথের সংগীতে ভারতীয় সংগীত ও বিশ্ব সংগীতের বিভিন্ন ধারা ও স্রোতের এক অপূর্ব মিলন ঘটেছে এবং এই মিলন এক সীমাহীন অতলান্ত সুর-সমুদ্রের সৃষ্টি করেছে যা অমৃত পিপাসু মানুষের তৃষ্ণা মেটাবার এক অসামান্য উৎস। ব্যাখ্যা করে তিনি দেখিয়েছেন, অষ্টাদশ শতকে বাঙালি তার ঐশ্বর্যমণ্ডিত সঙ্গীত ঐতিহ্য- যার মূলে রয়েছে চর্ষাপদ, পদাবলী কীর্তন, লোকসংগীত, বাউল ও রামপোসাদী ইত্যাদি তা থেকে পথ হারিয়ে খেউর, হাফ, আখরাই, তর্জা, পক্ষীগান ইত্যাদি রুচি বিগর্হিত চটুল ও লঘু গানে বিভোর হয়েছিল। এর কারণ তিনি খুঁজে পেয়েছেন অষ্টাদশ শতকের রাজনৈতিক সামাজিক প্রেক্ষাপটে।
বাঙালি সামাজিক অবক্ষয় ও সংগীত ঐশ্বর্যের এই বিপর্যয়ের সময়ে অরুণ দাশগুপ্ত জানিয়েছেন, তাকে রক্ষা করতে এগিয়ে এসেছিলেন নতুন ইংরেজি শিক্ষায় শিক্ষিত ক্ষুদ্র এক সংগীতসাধক গোষ্ঠী। এদের মধ্যে রয়েছেন সৌরীন্দ্রমোহন ঠাকুর, ক্ষেত্রমোহন গোস্বামী, কৃষ্ণধন বন্দ্যোপাধ্যায় ও যতীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রমুখ। এদের যৌথ প্রয়াসে বাঙালি সংগীতে এক নতুন স্বরলিপির সৃষ্টি করে।’
সত্যিকার অর্থে বলতে গেলে অরুণ দাশগুপ্ত একজন সাংবাদিক, নিষ্ঠাবান প্রাবন্ধিক, মেধাবী গবেষক, বিরলপ্রজ কবি ও গুণী সাহিত্য সম্পাদক, জ্ঞানে পাণ্ডিত্যে অভিজ্ঞতায় একজন অসাধারণ ব্যক্তিত্ব। সৃজনশীল ও মননশীল জগতের একজন অনুকরণীয় পুরুষ। শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি, সংগীত, রাজনীতি, দর্শন, ইতিহাস, ঐতিহ্য এমন কোন দিক নেই যে তিনি জানতেন না। সব বিষয়ে তাঁর সমান অবগত ও আগ্রহ। অরুণ দাশগুপ্ত ২০১৫ সালে দৈনিক আজাদী হতে অবসরে গেলেও দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম. এ মালেক তাঁকে ধরে রেখেছিলেন নিজের কাজের সঙ্গে, সর্বোপরি আজাদীর সঙ্গে। সে হিসেবে জীবনের শেষের দিকে অসুস্থ অবস্থায় তিনি গ্রামের ধলঘাটে অবস্থান করলেও তিনি সেখান থেকে তদারকি করতেন। দৈনিক আজাদী কর্তৃপক্ষ এবং আজাদী সম্পাদক এম. এ মালেক অরুণ দাশগুপ্তের প্রতি যে সম্মান প্রদর্শন করেছেন তা এক কথায় প্রশংসনীয়। আজাদী কর্তৃপক্ষের শ্রদ্ধাশীল মনোভাবের কারণে আমরও নাত হই শ্রদ্ধায়।
অরুণ দাশগুপ্ত সবাইকে অকাতরে যেভাবে দিয়েছেন তেমনি পেয়েছেন সবার ভালোবাসা ও সম্মান। লেখক হিসেবে তিনি যতটা খ্যাতিমান, এ জনপদে লেখক সৃষ্টিতে তিনি ছিলেন ততটা উদার। লেখকদের প্রাণিত করতে এবং লেখায় নিবেদিত কর্র্মীদের উৎসাহিত করতে তিনি ছিলেন অতুলনীয়। চট্টগ্রামে একটি ‘সাহিত্যমানসম্পন্ন সমাজ’ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে তার অসামান্য অবদান আমরা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি। চট্টগ্রামের সাহিত্য ও সংস্কৃতি অঙ্গনের মধ্যমণি ‘দাদামণি’ খ্যাত ‘অরুণ দাশগুপ্ত’ সারাজীবন অকৃতদার ছিলেন। তাঁর হাতে প্রতিষ্ঠিত নবীন প্রবীন লেখক, কবি, সাহিত্যিকরাই ছিল তাঁর পরিবার।
সাহিত্যপ্রিয় সাধক চট্টগ্রামের সাংবাদিকতা জগতের প্রিয় মুখ অরুণ দাশগুপ্ত ১০ জুলাই ২০২১ শনিবার নিজ গ্রামের বাড়ি ধলঘাটে ইহলোক ত্যাগ করেন। তাঁর মৃত্যু চট্টগ্রামের সাহিত্যঙ্গনে বিশাল শূন্যতা সৃষ্টি করেছে। সূত্র : দৈনিক ভোরের কাগজের বিশেষ সংখ্যা ০৯ জুলাই ২০২১ এবং দৈনিক আজাদীতে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রবন্ধ।
লেখক: সম্পাদক, শিল্পশৈলী।

পূর্ববর্তী নিবন্ধজুম্‌’আর খুতবা
পরবর্তী নিবন্ধতরুণ উদ্যোক্তা গড়তে পোর্ট সিটি ভার্সিটিতে কর্মশালা