অব্যাহত আছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজনের আলোচিত কর্মসূচি ‘নগরসেবায় ক্যারাভান’। কর্মসূচির ৬ষ্ঠ দিনে গতকাল বুধবার বিকলে নগরীর ২নং গেইট থেকে বায়েজিদ হয়ে অক্সিজেন পর্যন্ত স্কুটি চালিয়ে নাগরিক বিভিন্ন সমস্যা পরিদর্শন করেন তিনি। এসময় চিহ্নিত সমস্যাগুলোর তাৎক্ষণিক সমাধানও করা হয়। এসময় কয়েক জায়গায় ভাঙা রাস্তা দেখে তা সংস্কার ও পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন কার্যক্রমে গতি বৃদ্ধিতে নির্দেশ দেন চসিকের কর্মকর্তা–কর্মচারীদের। পাশাপাশি জনগণকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে উদ্বুদ্ধ করার জন্য মাস্কও পরিয়ে দেন। এছাড়া যাত্রাপথে বিভিন্ন অব্যবস্থাপনা দেখে সাথে সাথে সমাধান করার নির্দেশ দেন। সড়কে অলস বসে থাকা গাড়ি ও অবৈধ গাড়ি পার্কিং দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন সুজন। এসময় তিনি রাস্তায় অলস কোনো গাড়ি থাকতে পারবে না বলে ঘোষণা দেন। কর্মসূচি চলাকালে উৎসুক লোকজন ভিড় করেন। এসময় অনেকে সুজনের প্রশংসা করেন। তাদের বলতে শোনা যায়, নগরবাসীর কষ্ট অনুধাবনে স্কুটি চড়ে নগরে ঘুরে বেড়ানো দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। নগরবাসীর প্রতি আন্তরিক না হলে এটা সম্ভব হতো না। প্রশাসক স্বয়ং নাগরিক সমস্যাগুলো দেখলে মানুষের দুর্ভোগ কিছুটা হলেও লাঘব হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তারা।
এর আগে গত ২৪ আগস্ট কর্মসূচির প্রথম দিন বহদ্দারহাট মোড় আরাকান সড়ক হয়ে কাপ্তাই রাস্তার মাথা পর্যন্ত, ২ সেপ্টেম্বর ফিরিঙ্গিবাজার থেকে নজরুল ইসলাম সড়ক, সদরঘাট রোড, স্ট্র্যান্ড রোড হয়ে মাঝিরঘাট হয়ে রশিদ বিল্ডিং মোড় পর্যন্ত, ৯ সেপ্টেম্বর কোতোয়ালী মোড় থেকে আশরাফ আলী রোড হয়ে নতুন ব্রিজ পর্যন্ত এবং ১৬ সেপ্টেম্বর আগ্রাবাদ ব্যাংকক–সিঙ্গাপুর মার্কেট–বেপারীপাড়া হতে শুরু করে বড়পোল– নিমতলা পর্যন্ত এবং ২৩ সেপ্টেম্বর আন্দরকিল্লাহ থেকে সিরাজদ্দৌলা রোড, চকবাজার, জামালখান ও চেরাগী পাহাড় হয়ে পুনরায় আন্দরকিল্লা পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালিত হয়। এদিতে গতকাল কর্মসূচি চলাকালে খোরশেদ আলম সুজন বলেন, ক্যারাভান দখলবাজ এবং উন্নয়ন কর্মকান্ড সম্প্রসারণে বাঁধা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে এক কঠিনবার্তা। অবৈধ দখলদার যতই ক্ষমতাবান কিংবা প্রভাবশালী হোক না কেন কাউকে তিল পরিমাণ ছাড় দেয়া হবে না। তাদের সকল অবৈধ স্থাপনা গুড়িয়ে দেয়া হবে। তিনি ওই এলাকায় অবৈধ মাদক বেচাকেনার আস্তানাগুলোতে অভিযান চালানোর জন্য আইন শৃক্সখলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, অবৈধ মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করতে হবে। এই সব মাদকের আস্তানাগুলো সন্ত্রাস ও অনাচারের উৎপত্তি স্থল। তিনি অক্সিজেন মোড়ে যানজট সম্পর্কে বলেন, এই সমস্যা অনেক পুরনো। এগুলোর সমাধানে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন। এজন্য ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা যাতে যুগোপযোগী করা যায় সে লক্ষ্যে আমাদের কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করতে হবে।
জলাবদ্ধতা নিরসনে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, পানি নিষ্কাশন পথগুলো যারা বন্ধ করে রেখেছে তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে। ফুটপাতের উপর নির্মাণ সামগ্রী থাকলে সেগুলো বাজেয়াপ্ত করা হবে। ফুটপাত জনগণের হাঁটা চলার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। এখানে কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা সহ্য করা হবে না। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কোভিড–১৯ এর দ্বিতীয় তরঙ্গের আভাস স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমাদের এখন থেকে প্রস্তুতি নিতে হবে। সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে। বাইরে মাস্ক ছাড়া কোনভাবেই চলাফেরা করা যাবে না। করোনাকালের ইতি ঘটেনি। যতদিন ভ্যাকসিন আবিষ্কার হবে না ততদিন আমরা বলতে পারি না এ ভাইরাস থেকে মুক্তি পেয়েছি।












