অবশেষে মায়ের কোল ফিরে পেল শিশুটি

১৬ মাস আগে দুই লাখ টাকায় বিক্রি করে দিয়েছিল মামী

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ২৪ নভেম্বর, ২০২২ at ৬:০৮ পূর্বাহ্ণ

ষোল মাস আগের কথা। রাঙ্গুনিয়ায় টাকার বিনিময়ে দেড় বছরের শিশু সন্তানকে বিক্রি করে দেন তারই আপন মামী। পেটের তাগিদে তখন শিশুর মা রুমা আক্তার চট্টগ্রাম নগরীতে ছিলেন। পাঁচদিন পর ফিরে গিয়ে দেখেন মামীর কাছে তার আদরের শিশু সন্তান নেই। বিভিন্নভাবে খোঁজ নেয়ার রুমা জানতে পারেন, শিশুর মামী (ভাইয়ের স্ত্রী শিরিন আক্তার) তার সন্তানকে দুই লাখ টাকার বিনিময়ে তারই খালাতো বোনের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন। পরবর্তীতে জনপ্রতিনিধি, থানা পুলিশ, এমনকি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের স্মরণাপন্ন হয়েও সন্তানকে উদ্ধার করতে পারেননি। এক পর্যায়ে রিভিশন মামলা দায়ের করলে গতকাল বুধবার জেলা ও দায়রা জজ আজিজ আহমেদ ভূঁইয়া শিশু সন্তান মিনহাজকে তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেন। এ সময় আদালত কক্ষে হৃদয়বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। ঘটনার সময় দেড় বছর থাকলেও বর্তমানে শিশুটির বয়স তিন বছর।

জেলা পিপি শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী আজাদীকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, শিশু সন্তানকে ফিরে পেতে আবেদন করলে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এক পর্যায়ে আদালত মায়ের কাছে শিশুকে ফেরত দিতে নির্দেশ দেন। তিনি জানান, ১৬ মাস নানা জায়গায় ঘুরেছেন, কিন্তু শিশুকে কোলে নিতে পারেননি মা।

আদালতের নির্দেশের পর অবশেষে তিনি তা করতে পেরেছেন। রুমার সন্তানকে যারা আটকে রেখেছিলেন বা যিনি হস্তান্তর করেছিলেন তাদের বিরুদ্ধে আদালত কোনো নির্দেশনা দিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে জেলা পিপি শেখ ইফতেখার সাইমুল বলেন, শুধু ছেলেকে ফিরে পাওয়ার বিষয়ে আবেদন করা হয়েছিল।

আদালতসূত্র জানায়, গত বছরের ২৫ জুলাই রাঙ্গুনিয়ার সরফভাটা ইউনিয়নে শিশু সন্তান বিক্রির ঘটনাটি ঘটে। সেদিন মা রুমা আক্তার তার শিশুকে মামী শিরিন আক্তারের কাছে রেখে চট্টগ্রাম নগরীতে কাজের সন্ধানে যান। কিছুদিন পর তিনি ফিরে গিয়ে দেখেন মামীর কাছে শিশু নেই।

পরে খোঁজাখুঁজির পর তিনি জানতে পারেন, তছলিমা বেগম নামের একজনের কাছে তার শিশু সন্তানকে বিক্রি করে দিয়েছেন শিরিন। এক পর্যায়ে থানা, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালত হয়ে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে রিভিশন মামলাটি দায়ের করেন ভুক্তভোগী রুমা আক্তার।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান চট্টগ্রামের নতুন জেলা প্রশাসক
পরবর্তী নিবন্ধএলসি ছাড়াই এলো ৭৬৯টি গাড়ি