অফিস সরিয়ে ক্যান্টিন

সিআরবির ‘ঝুঁকিপূর্ণ ভবন’ দেয়া হল ভাড়া

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ৪ ডিসেম্বর, ২০২০ at ৫:৪৬ পূর্বাহ্ণ

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সদর দপ্তর সিআরবিতে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠায় একটি ভবন থেকে অফিস সরিয়ে নেয়ার পর সেটি আবার ক্যান্টিন হিসাবে ভাড়া দেয়া হয়েছে। সিআরবি মূল ভবনের সামনে অবস্থিত তিন তলা এ ভবনটিতে রেলওয়ের পরিসংখ্যান এবং দাবি শাখার অফিস ছিল।
জানা গেছে, প্রায় ৭-৮ বছর আগে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ সকল অফিস সিআরবি সদর দপ্তরে স্থানান্তর করে নিয়ে আসে। তখন সেটিতে ‘ঝুঁকিপূর্ণ ভবন’ লেখা সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো- যেই ভবনকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, সেই ভবনটিকেই বহিরাগত লোকের কাছে পাবলিক ক্যান্টিন হিসাবে ভাড়া দেয়া হয়েছে। গতকাল দুপুরে সিআরবি ক্যান্টিনে গিয়ে দেখা যায়-ভেতরে কেউ ভাত, কেউ চা-নাস্তা খাচ্ছেন। ক্যান্টিনে প্রবেশের বাম পাশেই লেখা আছে ‘সাবধান। এই ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ।’ রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগের এক কর্মকর্তা গতকাল এই প্রতিবেদককে জানান, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সাবেক জিএম নুরুল আমিনের নির্দেশে এই ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ ভবনটি আবার পাবলিকের কাছে ক্যান্টিন হিসেবে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
সিআরবি রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সদর দপ্তরের নিরাপত্তা বেষ্টনীর ভেতরে রেলওয়ের নিজস্ব বিল্ডিংয়ে কীভাবে পাবলিক ক্যান্টিন দেয়া যায় জানতে চাইলে চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার (পূর্ব) নাজমুল আহসান
আজাদীকে বলেন, ‘এটা আমার দপ্তর থেকে দেয়া হয়নি। এবং আমার দপ্তরের অধীনও নয়। এখানে একবার আগুন লেগেছিল। তখন জানতে পেরেছি এটা এস্টেট অফিস বরাদ্দ দিয়েছে।’
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের চিফ এস্টেট অফিসার কংকন চাকমার অফিসে গিয়ে এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি অনেকটা উত্তেজিত হয়ে বলেন, ‘এটা যখন বরাদ্দ দিয়েছে তখন আমি এখানে (চিফ এস্টেট অফিসার পদে) ছিলাম না। কখন কীভাবে এটি ক্যান্টিনের নামে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে আমি তো হার্ড ডিক্স না এখন চাইলেই বলতে পারবো।’
রেলওয়ের অফিস তুলে দিয়ে ব্যক্তি মালিকানায় ক্যান্টিন বরাদ্দ দেয়া যায় কিনা জানতে চাইলে চিফ এস্টেট অফিসার কংকন চাকমা বলেন, ‘যায় কি যায় না এই ব্যাপারে আমি কিছু জানি না, বলতে পারবো না।’
সিআরবি ক্যান্টিনে গিয়ে ক্যাশিয়ার মো. ইমাম হোসেনের সাথে কথা হলে তিনি এই প্রতিবেদককে জানান, ক্যান্টিনের পরিচালক তার ছোট ভাই মো, ইউসুফ। তিনি এখন এখানে নেই, বাইরে আছেন। ক্যান্টিনে খাবার কারা খায় জানতে চাইলে মো. ইমাম হোসেন বলেন, ‘এখানে কোনো হিসাব নেই। রেলের স্টাফসহ বাইরের সকলেই খাবার খেতে আসেন।’
মোবাইল নম্বর নিয়ে ক্যান্টিনের পরিচালক মো. ইউসুফের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি আজাদীকে বলেন, ‘আমি যে অংশে ক্যান্টিন চালাই ওই অংশ ঝুঁকিপূর্ণ না। আমার দক্ষিণ পাশের অংশটি ঝুঁকিপূর্ণ। আমি মাসিক ভাড়ায় ভবনের এই অংশটিতে ক্যান্টিন চালাচ্ছি।’
একটি ভবনের অর্ধেক ঝুঁকিপূর্ণ হলে আর অর্ধেক ঝুঁকিমুক্ত এটা আপনি কীভাবে অনুমান করলেন এমন প্রশ্নের উত্তরে ইউসুফ বলেন, ‘আমার ক্যান্টিনে প্রবেশের দক্ষিণ পাশে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন হিসেবে সাইনবোর্ড দিয়েছে। আমার অংশে দেয়নি।’

পূর্ববর্তী নিবন্ধব্যানারে নাম না দেয়ায় যুবদল নেতার হামলা!
পরবর্তী নিবন্ধসাতকানিয়ায় ছুরিকাঘাতে আহত দুই