রাজপথে আন্দোলনের পাশাপাশি উচ্চ আদালতে আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) ‘অন্যায্য’ গৃহকর বন্ধে চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে চট্টগ্রাম করদাতা সুরক্ষা পরিষদ। গতকাল চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘোষণা দেয় সংগঠনটির নেতারা। পরবর্তী কার্যক্রম সফল করতে ৪১ ওয়ার্ডে ‘সংগ্রাম কমিটি’ গঠনেরও ঘোষণা দেয়া হয়।
এছাড়া গত বুধবার সুরক্ষা পরিষদের নগর ভবন ঘেরাও কর্মসূচিতে পুলিশের বাধা ও ‘মেয়র অনুসারীদের হামলা’ ও আন্দোলনকারীদের সম্পর্কে স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি হিসেবে ‘অপপ্রচার’ করা হয়েছে দাবি করে এর নিন্দা জানানো হয় সংবাদ সম্মেলন থেকে। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সহ–সাধারণ সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদাউস পপি। উপস্থিত ছিলেন পরিষদের সভাপতি নুরুল আবছার, সিনিয়র সহ সভাপতি আব্দুল মালেক, সহ–সভাপতি ইসমাইল মনু, মুখপাত্র কাজী শহীদুল হক স্বপন, আরশাদ হোসেন, মুজিবুল হক, অলি আহমদ, আবদুর রহিম, আব্দুর রাজ্জাক ও আবুল কাশেম।
জান্নাতুল ফেরদাউস পপি বলেন, হোল্ডিং ট্যাঙ আদায়ে মেয়রের কাছে চট্টগ্রামবাসীর থেকেও ব্যক্তিস্বার্থ অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ গণস্বার্থবিরোধী এই ধরনের মানসিকতার লালন করে তিনি নগরপিতা হিসেবে থাকার নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন। গণমাধ্যমে দেওয়া মেয়রের বক্তব্যে এটা সুস্পষ্ট হয়েছে যে, তিনি যতক্ষণ দায়িত্বে রয়েছেন ততক্ষণ তিনি নগরবাসীর গৃহকরের এই ন্যায্য দাবি মেনে নিবেন না। তাই আমরা আগামী কর্মসূচি হিসেবে নগরীর ৪১ ওয়ার্ডে সংগ্রাম কমিটি গঠন এবং উচ্চ আদালতে আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে এই অন্যায্য গৃহকর আদায় বন্ধে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবো।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, পূর্বঘোষিত কর্মসূচি নগরভবন ঘেরাও চলাকালে নিরীহ নগরবাসীর ওপর সিটি মেয়রের লোকজন পুলিশের উপস্থিতিতে ইট পাথর দিয়ে আক্রমণ করে। এতে সাধারণ পথচারীসহ ৩০ জন আহত হয়।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, মেয়রকে স্মারকলিপি প্রদানের কথা জানালে পুলিশ সংগঠনের সভাপতি মো. নুরুল আবছার ব্যতীত যে কোনও চারজনকে যাওয়ার অনুরোধ করেন। এতে আমরা কিছুটা অবাক হলেও বাধ্য হয়ে চার প্রতিনিধি নগর ভবনে যাই। প্রতিনিধিদের দেখা মাত্রই মেয়রের পক্ষে আগে থেকে অবস্থান নেওয়া উনার কিছু ব্যক্তিগত অনুসারী নানা ধরনের স্লোগান দিয়ে বিব্রত করতে থাকে।
পপি বলেন, আমাদের দীর্ঘ আন্দোলন কর্মসূচিতে কোনোদিন ছাত্রলীগ বা যুবলীগ বাধা দেয়নি। কারণ তারা জানে এটি তাদের বাবা চাচাদের আন্দোলন। কিন্তু আমরা আশ্চার্যজনকভাবে লক্ষ্য করলাম মেয়র সাহেব আমাদের সন্তানদের আমাদের অপদস্ত করার জন্য ব্যবহার করলেন। মেয়রের নিজ নগরবাসীর প্রতি এমন আচরণ প্রত্যাশা করিনি, আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।
তিনি বলেন, মেয়র নগরভবনে অবস্থান করার পরও স্বয়ং উনার নিজ নাগরিকদের কাছ থেকে স্মারকলিপিটি গ্রহণে অনাগ্রহ প্রকাশ করেন। যা দুঃখজনক।