অনলাইন রেজিস্ট্রেশন (নিবন্ধন) ছাড়া কেউ করোনা (কোভিড-১৯) টিকা পাবে না বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম। গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে কোভিড-১৯ ভ্যাঙিনেশন অনলাইন রেজিস্ট্রেশন বিষয়ক এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ডিজিটাল ভ্যাকসিন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ‘সুরক্ষা’তে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন ছাড়া টিকা দেওয়া হবে না। রেজিস্ট্রেশনের বাইরে টিকা দেওয়াকে আমরা নিরুৎসাহিত করছি। আমাদের এ ডাটাগুলোকে সংরক্ষণ করতে হবে, অ্যানালাইসিস করতে হবে। অনলাইনের এ তথ্যগুলোকে পরবর্তীতে অনেকগুলো কাজে আমাদের লাগাতে হবে। কেন্দ্র পরিবর্তন করে টিকা দেওয়ার সুযোগ থাকছে না জানিয়ে স্বাস্থ্যের ডিজি বলেন, রেজিস্ট্রেশন অনুযায়ী আমরা কেন্দ্রে টিকা পাঠাব। সেক্ষেত্রে কেন্দ্র পরিবর্তন করে টিকার সুযোগ দিলে অনেক টিকা নষ্ট হবে। নির্ধারিত তারিখ ও কেন্দ্র অনুযায়ী টিকা নেওয়ার জন্য সবাইকে অনুরোধ করেন অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ২৭ জানুয়ারি কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন বলে ব্রিফিংয়ে জানান তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমদ পলক।
যেভাবে করতে হবে অনলাইনে নিবন্ধন : টিকা পেতে আগ্রহীরা সুরক্ষা প্ল্যাটফর্মের ওয়েব অ্যাপ্লিকেশনে গিয়ে অথবা মোবাইলে অ্যাপ ডাউনলোড করে নিবন্ধন করতে পারবেন। অ্যাপটি ফ্রি ডাউনলোড করা যাবে। নিবন্ধনের পর সেখান থেকেই জানা যাবে, কবে কখন টিকা নিতে হবে।
১৮ বছরের কম বয়সীরা টিকার জন্য নিবন্ধন করতে পারবেন না। কারণ, অপ্রাপ্তবয়স্কদের ওপর অঙফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল হয়নি। এই অ্যাপ্লিকেশনে পরিচয় যাচাইয়ে ১৮টি শ্রেণি করা হয়েছে। এরমধ্যে একটি শ্রেণি সিলেক্ট করার পর জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর ও জন্মতারিখ দিয়ে নিবন্ধন শুরু করতে হবে। স্বয়ংক্রিয়ভাবে জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর যাচাই হবে। সব ঠিক থাকলে স্ক্রিনে নিবন্ধনকারীর নাম দেখানো হবে বাংলা ও ইংরেজিতে। সেখানে একটি ঘরে মোবাইল ফোন নম্বর চাওয়া হবে। পরবর্তীতে ওই নম্বরেই নিবন্ধনকারীকে টিকাদান সংক্রান্ত তথ্য এসএমএস করা হবে। মোবাইল নম্বর দেওয়ার পর একটি ঘর পূরণ করতে হবে, যেখানে জানাতে হবে নিবন্ধনকারীর দীর্ঘমেয়াদি রোগ বা কোনো মরবিডিটি আছে কিনা, থাকলে কোনো কোনো রোগ আছে।
আরেকটি ঘরে নিবন্ধনকারীর পেশা জানাতে হবে এবং তিনি কোভিড-১৯ সংক্রান্ত কাজে সরাসরি জড়িত কি না তাও জানাতে হবে। এরপর বর্তমান ঠিকানা ও কোনো কেন্দ্র থেকে টিকা নিতে ইচ্ছুক তা সিলেক্ট করতে হবে। সব শেষে ফরম সেইভ করলে নিবন্ধনকারীর দেওয়া মোবাইল নম্বরে পাঠানো হবে ওটিপি। সেই ওটিপি কোড দিয়ে ‘স্ট্যাটাস যাচাই’ বাটনে ক্লিক করলে নিবন্ধনের কাজ শেষ হবে। নিবন্ধন সম্পন্ন হলে টিকার প্রথম ডোজের তারিখ ও কেন্দ্রের নাম এসএমএস এর মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে। এরপর জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর, জন্ম তারিখ দিয়ে লগ ইন করে এসএমএস এর মাধ্যমে পাওয়া ওটিপি কোড দিয়ে টিকা কার্ড ডাউনলোড করতে হবে। এসএমএসে জানিয়ে দেওয়া তারিখে টিকা কার্ড ও জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে নির্ধারিত টিকাদান কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে কোভিড-১৯ এর টিকা নিতে হবে। এভাবে দুটি ডোজ নিতে হবে। তারপর সুরক্ষা প্ল্যাটফর্মের ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন থেকে ভ্যাকসিন প্রাপ্তির সনদ সংগ্রহ করা যাবে।