চট্টগ্রাম মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের ব্যয় বাড়ার পর এবার এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এবং কালুরঘাট সেতু থেকে চাক্তাই খাল পর্যন্ত বেড়িবাঁধ কাম সড়ক নির্মাণ কাজ এই দুই মেগাপ্রকল্পের ব্যয়ও বাড়লো। এই দুইটি প্রকল্পে প্রায় ৮৮০ কোটি টাকা ব্যয় বেড়ে গেছে। গতকাল বাড়তি ব্যয় অনুমোদন করা হয়েছে। এই দুইটি প্রকল্পের মেয়াদ শেষে ব্যয় আরো বাড়বে বলেও মন্তব্য করা হয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, চট্টগ্রাম মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে গৃহীত চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের মেগাপ্রকল্পের ব্যয় প্রায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা বেড়েছে। ২০১৭ সালে ৫ হাজার ৬১৬ কোটি ৪৯ লাখ ৯০ হাজার টাকার ওই প্রকল্পটির ব্যয় ইতোমধ্যে সাড়ে নয় হাজার কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। ভূমি অধিগ্রহণ খরচের পাশাপাশি নির্মাণ সামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন কারণে প্রকল্প ব্যয়ও বৃদ্ধি পেয়েছে।
একই কারণে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের আরেক মেগাপ্রকল্প এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ব্যয়ও বেশ বড় অংকে বৃদ্ধি পেয়েছে। নগরীর লালখান বাজার থেকে শাহ্-আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত নির্মাণাধীন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ব্যয় প্রায় সাড়ে ৬শ’ কোটি টাকা বেড়ে গেছে। ২০১৭ সালে অনুমোদন পাওয়া সাড়ে ১৬ কিলোমিটার লম্বা চার লেনের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছিল ৩ হাজার ৭২০ কোটি ৪ লাখ ৬৭ হাজার ৭২৮ টাকা।
কিন্তু প্রকল্প বাস্তবায়নকালে ডিজাইন পরিবর্তন, ভূমি অধিগ্রহণ এবং নির্মাণ সামগ্রীর ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় প্রকল্পের ব্যয়ও ৬৪৯ কোটি ২ লাখ ৪৩ হাজার ৯১ টাকা ব্যয় বৃদ্ধি পায়। বর্তমানে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের মোট ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৩শ ৬৯ কোটি ৭ লাখ ১০ হাজার ৮শ ১৯ টাকা। তবে প্রকল্প শেষ হতে এই ব্যয় আরো বাড়বে বলেও সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো মন্তব্য করেছে।
এদিকে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প ‘কর্ণফুলী নদীর তীর বরাবর কালুরঘাট সেতু থেকে চাক্তাই খাল পর্যন্ত বাঁধ কাম সড়ক নির্মাণ’ প্রকল্পের ব্যয় ২৩০ কোটি ৫ লাখ ১ হাজার ১১৬ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি বাঁধ কাম আউটার রিং রোড নির্মাণ করা হচ্ছে। ২ হাজার ৩১০ কোটি টাকা ব্যয়ে গৃহীত প্রকল্পটির পূর্ত কাজের ব্যয় নির্ধারণ করা ছিল ৭৮৯ কোটি ২৪ লাখ ৩৯ হাজার ৭৭৮ টাকা। বর্তমানে এই ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ১৯ কোটি ২৯ লাখ ৪০ হাজার ৮৯৪ টাকা। এর বাইরে ১২টি স্লুইচ গেটসহ আরো বিভিন্ন কাজ রয়েছে। যেগুলোর ব্যয়ও বাড়বে বলে সূত্র মন্তব্য করেছে।
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস দৈনিক আজাদীকে বলেন, সরকারের ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি প্রকল্প দুইটির বাড়তি ব্যয় অনুমোদন দিয়েছে। এতে এই দুইটি প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ অনেক বেশি সহজ এবং গতিশীল হবে বলেও সিডিএ চিফ ইঞ্জিনিয়ার মন্তব্য করেন।
ঢাকা থেকে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, গতকাল দুপুরে ভার্চুয়ালি যুক্ত হওয়া অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে পৃথক দুইটি প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে উপরোক্ত দুইটি প্রকল্পের বাড়তি ব্যয় অনুমোদন দেয়া হয়।