২৯ মে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দুই প্রার্থীর পাল্টাপাল্টি হুমকি–ধমকির অভিযোগে সরগরম হয়ে উঠেছে পটিয়ায় নির্বাচনী মাঠ। প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ভোট কেন্দ্র দখল করে ভোট নেওয়ার পরিকল্পনা ও হুমকি–ধমকি এবং পোস্টার ব্যানার ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ করেছেন আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ। অন্যদিকে হুমকির অভিযোগ অস্বীকার করে দোয়াত–কলম প্রতীকের প্রার্থী দিদারুল আলমও প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে তার নেতাকর্মীদের নানাভাবে হুমকি–ধমকির অভিযোগ করেন। গতকাল রোববার রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দায়েরের পর বেলা সাড়ে ১১টায় খাসমহলস্থ আনারস প্রতীকের প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী দলীয় এমপি, মন্ত্রীদের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ না করতে বিভিন্ন সভা–সমাবেশে ও নীতি নির্ধারণী বৈঠকে বলেছেন। পটিয়ায় উৎসবমুখর পরিবেশের ভোটকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে আমার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী দোয়াত–কলম প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী দিদারুল আলম নানা বিতর্কিতমূলক কর্মকাণ্ড করে যাচ্ছেন। তিনি এবং তার কর্মী সমর্থকরা আমার ভোটার ও সমর্থকদের বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখানো ছাড়াও বহিরাগত লোক এনে ভোট কেন্দ্র দখল করে ভোট নেওয়ার পরিকল্পনাও নিচ্ছেন। চট্টগ্রাম শহরে বসে পরিকল্পনা নেওয়ার বিষয়টি ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচারও হয়েছে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও তার সমর্থকরা আমার নির্বাচনী ব্যানার, পোস্টার ছিঁড়ে ফেলেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্যে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ.ক.ম শামসুজ্জমানান চৌধুরী বলেন, স্থানীয় সাংসদের এ নির্বাচন নিয়ে নীরব থাকার কথা থাকলেও, তিনি গত কয়েকদিন ধরে ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি–সাধারণ সম্পাদককে ফোন দিয়ে প্রতিপক্ষ প্রার্থী দিদারের পক্ষে কাজ করার জন্য চাপ প্রয়োগ করছেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পটিয়া উপজেলা আ.লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আ.ক.ম শামসুজ্জামান চৌধুরী, মহানগর যুবলীগের সদস্য মোক্তার আহমদ আরিফ, সমাজকর্মী জসিম উদ্দিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু তাহের, পৌর আ.লীগ নেতা মো: আলমগীর, পৌরসভা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এন এ নাছির, উপজেলা আ.লীগের সহ সভাপতি আবদুল খালেক, পৌরসভার কাউন্সিলর গোফরান রানা, আবদুল মাবুদ বাবুল, সামশুল আরেফিন পিন্টু, এটিএম শাহজাহান, মো. ইছহাক, লোকমান সিকদার, শাহাদাত হোসেন রানা, মো. আবছার, ওয়ার্ড আ’লীগের সভাপতি জসিম উদ্দিন, কিশোর দাশ, জাহেদুল হক, জেলা ছাত্রলীগ নেতা মো. তারেক, অভি, ইবলু, ছাত্রনেতা রণি, আ.লীগ নেতা মো. নাছির উদ্দিন প্রমুখ।
এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে দোয়াত–কলম প্রতীকের প্রার্থী দিদারুল আলম বলেন, ‘এসব মিথ্যা অভিযোগ। মূলত তিনিই আমার নেতাকর্মীদের নানানভাবে হুমকি ধমকি দিচ্ছেন। গত কিছুদিন আগে পটিয়া থানার ওসির উপস্থিতিতে তিনি আমার হাত কেটে ফেলার হুমকি দেন। ওইসময় আমি হেসে বললাম হাত কেটে ফেললে ভোটাররা ভোট দিবে কিভাবে? আমি নাকি অতিথি পাখি। অতিথি পাখি উনি নিজেই। আমি ছাত্রজীবন থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। উনি ছাত্রজীবনে ছাত্র শিবিরের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন।’
পটিয়া থানার ওসি জসিম উদ্দিন তার উপস্থিতিতে হাত কাটা প্রসঙ্গে বলেন, ‘এ ধরনের তেমন কোনো ঘটনা আমার চোখের সামনে হয় নাই। এমনিতে উচ্চবাক্য হয়েছে। সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। তার জন্য যা যা করার দরকার আমরা সব করছি।’
আগামী ২৯ মে পটিয়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দুইজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। একজন আনারস প্রতীকের প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র অধ্যাপক হারুনুর রশিদ। অন্যজন দোয়াত কলম প্রতীকের প্রার্থী ও চট্টগ্রাম নগর যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক দিদারুল আলম।