সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের মতো স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে আয় বাড়ানোর দিকে নজর দিতে বলেছেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম। গতকাল রোববার ঢাকার কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ‘কার্যকর স্থানীয় সরকার জাতীয় কনভেনশনে’ তিনি একথা বলে আয় থেকে ব্যয় করার আহ্বান জানান। খবর বিডিনিউজের।
তাজুল বলেন, স্থানীয় সরকারের ‘মূল স্পিরিট’ হচ্ছে আয় করে ব্যয় করা। আয় বাড়াতে নানা পথ খুঁজতে জনপ্রতিনিধিদের পরামর্শ দেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, আপনি তো মানুষকে পিঠাইয়া টাকা নিতে পারবেন না। আপনি তো মানুষের সরকার, ভাগ্যের পরিবর্তনের অঙ্গীকার নিয়ে ক্ষমতায় এসেছেন। আয় কীভাবে বাড়াবেন সেই চিন্তা করবেন। প্রতিটি এলাকার আয়ের পথ আলাদা হতে পারে। কর বাড়িয়ে আবার সেবার মান বাড়ালে জনগণের বিরাগভাজন হতে হবে না। আপনি রাজস্ব নিলে ভোট কমে যাবে, সেটা ঠিক না। জনগণের সাথে সম্পৃক্ততা বাড়লে আপনার আয় বাড়বে, সম্পৃক্ততা বাড়লে ভোট বাড়বে বলে মনে করেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী। স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধিদেরকে নিয়মিত অফিস করার পাশাপাশি সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে সমন্বয় করে দায়িত্ব পালনের পরামর্শও দেন মন্ত্রী তাজুল।
এদিকে নিজের এলাকার ইউনিয়ন পরিষদের ভোটে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ায় ‘কাউকে চাপ দেওয়া হয়নি’ বলে দাবি করেছেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। তার ভাষ্য, যোগ্য প্রার্থীদের দল মনোনয়ন দেওয়ার পাশাপাশি বিএনপি নির্বাচনে না থাকায় লাকসামের ইউনিয়নগুলোতে সবাই বিনা ভোটে পার হয়ে গেছে।
মন্ত্রী তাজুল বলেন, কেউ কেউ মনে করে কী করে সকল মেম্বার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পাস হয়ে গেল? তো আমি জানলাম দুই/একজনের প্রথম দিকে উৎসাহ ছিল, শেষের দিকে কেউ করেনি যেহেতু, তারাও করেনি। এটা তো ‘এ সোর্স অব দ্যা ফেইলর’, এই ‘ ফেইলরের’ জন্য আমার দায়-দায়িত্ব কী আছে? এখন কেউ কেউ যখন প্রশ্ন করছে, তখন আমি বললাম, এটা নিয়ে তদন্ত করতে পারেন, এখানে কাউকে প্রেসার দেওয়া হয়নি।
১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে ৮৪৬টি ইউপির মধ্যে ৩১টিতে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়। এর মধ্যে লাকসামে কান্দিরপাড়, গোবিন্দপুর, উত্তরদা, আজগরা ও লাকসাম পূর্ব ইউনিয়ন রয়েছে। লাকসামে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যানের সঙ্গে সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত সদস্য পদেরও ৬৫ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়।
এর সমালোচনা করে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেছিলেন, নির্বাচন না করেই চেয়ারম্যান পদে অভিষিক্ত হওয়া এই নির্বাচনকে ম্লান করে দিয়েছে। নির্বাচন যেহেতু অনেকের মধ্যে বাছাই, সেহেতু বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পদে আসীন হওয়াকে নির্বাচিত হওয়া বলা যায় কি? স্থানীয় রাজনীতিতে পেশি শক্তি ব্যবহার করেন না বলে দাবি করেন তিনি।