রাউজানের পাহাড়তলীর মহামুনিতে বর্ষবরণ, চিকিৎসা শিবির, ওষুধ বিতরণ ও শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেছেন, লায়ন রূপম কিশোর বড়ুয়া এক পুত্র অনিরুদ্ধ বড়ুয়াকে হারিয়ে হাজার পুত্র লাভ করেছেন। তিনি নিজের পুত্র শোককে শক্তিকে পরিণত করে সমাজের অবহেলিত এবং সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার দায়িত্ব নিয়ে এক অনন্য নজির স্থাপন করেছেন। লায়ন রূপম কিশোর বড়ুয়াকে দিয়ে সমাজের এতগুলো ভালো কাজ করাবেন বলেই হয়তো বিধাতা তার একমাত্র পুত্রকে অকালে তুলে নিয়েছেন।
লায়ন রূপম কিশোর বড়ুয়ার অকাল প্রয়াত পুত্র অনিরুদ্ধ বড়ুয়ার স্মৃতি রক্ষার্থে গঠিত অনিরুদ্ধ বড়ুয়া অনি মেমোরিয়াল ট্রাস্ট ও লায়ন্স ক্লাব অব চিটাগাং কর্ণফুলীর যৌথ উদ্যোগে মহামুনির ফণীতটি মঞ্চে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি। অনুষ্ঠানে উদ্বোধক ছিলেন দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক। অনিরুদ্ধ বড়ুয়া অনি মেমোরিয়াল ট্রাস্টের চেয়ারম্যান, শিল্পপতি লায়ন রূপম কিশোর বড়ুয়ার সভাপতিত্বে ও সরোজ বড়ুয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন লায়ন কহিনুর কামাল, লায়ন মুসলেহ উদ্দিন অপু, লায়ন সুপ্রভা বড়ুয়া, লায়ন পারভিন মাহমুদ প্রমুখ। সম্মনিত অতিথি ছিলেন পাহাড়তলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রোকন উদ্দীন।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করতে গিয়ে দৈনিক আজাদী সম্পাদক লায়ন এম এ মালেক বলেন, লায়ন রূপম কিশোর বড়ুয়া শোককে শক্তিতে পরিণত করে সেবার জগতে এক অনন্য নজির স্থাপন করেছেন। সৃষ্টিকর্তা তাকে দিয়ে এভাবে সমাজের কাজ করাবেন বলেই হয়তো তার একমাত্র পুত্রকে অকালে নিয়ে গেছেন। পুত্রশোক কখনো ভোলা যায় না, সম্ভব নয়। তবে সেই শোককে শক্তিতে পরিণত করে ভিন্ন একটি মাত্রা দেয়া কোনো সাধারণ কাজ নয়। লায়ন রূপম কিশোর বড়ুয়া সেই অসাধারণ কাজটিই অসাধারণভাবে করতে সমর্থ হয়েছেন।
অনিরুদ্ধ বড়ুয়া অনি মেমোরিয়াল ট্রাস্টের কর্মকাণ্ডের চিত্র তুলে ধরে এম এ মালেক বলেন, গত ২৪ বছর ধরে তিনি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে হাজার হাজার ছাত্রছাত্রীর পাশে যেভাবে দাঁড়াচ্ছেন, যে পরিমাণে সহায়তা করছেন তা এক কথায় অনন্য। এক অনিরুদ্ধকে হারিয়ে আমার ভাই রূপম আজ হাজারো সন্তানকে অনিরুদ্ধের মতো মমতায় মানুষ করছে। আমি তার এই কর্মকাণ্ডকে শ্রদ্ধা জানাই।
দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক বলেন, নববর্ষ উদযাপন করতে এলে আমরা আমাদের সমাজ সংস্কৃতির চেতনার কথা বলি। এই চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়েই আমাদের সমাজকে বদলাতে হবে। সমাজের মানুষকে প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলে সবার বাসযোগ্য একটি আলোকিত সমাজ গড়তে হবে। আর এটি করতে পারলেই নববর্ষের যে চেতনা তার বাস্তবরূপ দেখা যাবে। তিনি বলেন, আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শিক্ষা ও সমাজ ব্যবস্থার উন্নয়নে অনেক কিছু করেছেন। প্রযুক্তির বিকাশ ঘটিয়েছেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান জানিয়েছেন। আমাদেরকে এই সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। এটি করতে পারলেই আমাদের হাতেই গড়ে উঠবে স্মার্ট বাংলাদেশ।
প্রধান অতিথির বক্তব্য সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি বলেন, বর্তমান সরকার শিক্ষার উন্নয়নে অনেক কিছু করছেন। তবে অনেক শিশু টাকা পয়সার অভাবে লেখাপড়া থেকে ঝরে পড়ছে। তিনি সমাজের বিত্তবানদের উদ্দেশে বলেন, বড় বড় মেজবান না দিয়ে জাতিকে শিক্ষিত করার কাজে আত্মনিয়োগ করুন। যারা টাকা পয়সার অভাবে পড়তে পারছে না তাদের পাশে দাঁড়ান। এটি করতে পারলে যুগে যুগে মানুষ মনে রাখবে। তিনি লায়ন রূপম কিশোর বড়ুয়ার মানবিক কর্মকাণ্ডের প্রসংশা করে বলেন অনিরুদ্ধ বড়ুয়া অনি মেমোরিয়াল ট্রাস্ট ও লায়ন্স ক্লাবের মাধ্যমে লায়ন রূপম কিশোর বডুয়া গত ২৪ বছর ধরে সমাজে যেই পরিবর্তন এনেছেন তা আমাদের জন্য অনুকরণীয় হতে পারে। এমন চমৎকার একটি আয়োজনের জন্য তিনি লায়ন রূপম কিশোর বড়ুয়ার প্রশংসা করেন।