সুবীর নন্দী : সংগীতশিল্পী

| মঙ্গলবার , ৭ মে, ২০২৪ at ৮:২১ পূর্বাহ্ণ

সুবীর নন্দী (১৯৫৩২০১৯)। সংগীতশিল্পী। তিনি মূলত চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দিয়ে খ্যাতি অর্জন করেন। সুবীর নন্দীর জন্ম হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং থানায় নন্দী পাড়া নামক মহল্লায়। ১৯৫৩ সলের ১৯শে নভেন্বর তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা সুধাংশু নন্দী ছিলেন একজন চিকিৎসক ও সংগীতপ্রেমী। তার মা পুতুল রানীও ছিলেন সঙ্গীতজ্ঞ। ছোটবেলা থেকেই তিনি ভাইবোনদের সঙ্গে শাস্ত্রীয় সংগীতে তালিম নিতে শুরু করেন ওস্তাদ বাবর আলী খানের কাছে। তবে সংগীতে তার হাতেখড়ি মায়ের কাছেই। খ্রিস্টান মিশনারিদের একটি বিদ্যালয়ে হয় প্রাথমিক শিক্ষা। মাধ্যমিক শেষ করেন হবিগঞ্জ হাইস্কুলে। তারপর হবিগঞ্জ বৃন্দাবন কলেজ। ১৯৬৭ খ্রিষ্টাব্দে তিনি সিলেট বেতারের মাধ্যমে আসেন গানের জগতে। সুবীর নন্দী ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দে গান রেকর্ডিং করেন ঢাকা রেডিওতে। প্রথম গান যদি কেউ ধূপ জ্বেলে দেয়‘ –এর গীত রচনা করেন মোহাম্মদ মুজাক্কের এবং সুরারোপ করেন ওস্তাদ মীর কাসেম। তাঁর সুদীর্ঘ সঙ্গীত ক্যারিয়ারে গেয়েছেন আড়াই হাজারেরও বেশি গান। বেতার থেকে টেলিভিশন, তারপর চলচ্চিত্রে গেয়েছেন অসংখ্য জনপ্রিয় গান। তাঁর চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় ১৯৭৬ খ্রিষ্টাব্দে আব্দুস সামাদ পরিচালিত সূর্যগ্রহণ চলচ্চিত্রে। ১৯৭৮ খ্রিষ্টাব্দে আজিজুর রহমান পরিচালিত অশিক্ষিত চলচ্চিত্রে রাজ্জাকের ঠোঁটে তার গাওয়া মাস্টার সাব আমি নাম দস্তখত শিখতে চাইগানটি তাঁকে জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছে দেয়। ১৯৮১ খ্রিষ্টাব্দে তার একক অ্যালবাম সুবীর নন্দীর গান ডিসকো রেকর্ডিংয়ের ব্যানারে বাজারে আসে। তিনি গানের পাশাপাশি দীর্ঘদিন ব্যাংকে চাকরি করেছেন। চল্লিশ বছর ব্যাংকিং সেবা দিয়ে ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে জনতা ব্যাংক থেকে তিনি অবসর গ্রহণ করেন। ‘দিন যায় কথা থাকে’, ‘আমার এ দুটি চোখ পাথর তো নয়’, ‘পৃথিবীতে প্রেম বলে কিছু নেই’, ‘আমি বৃষ্টির কাছ থেকে কাঁদতে শিখেছি’, ‘হাজার মনের কাছে প্রশ্ন রেখে’, ‘তুমি এমনই জাল পেতেছ’, ‘বন্ধু হতে চেয়ে তোমার’, ‘কতো যে তোমাকে বেসেছি ভালো’, ‘পাহাড়ের কান্না দেখে’, ‘কেন ভালোবাসা হারিয়ে যায়’, ‘একটা ছিল সোনার কন্যা’, ‘ও আমার উড়াল পঙ্খীরে’। এসব গানের জন্য তিনি আমাদের মাঝে অমর হয়ে থাকবেন। পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ছাড়াও তিনি ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে রাষ্ট্রীয় পুরস্কার ‘একুশে পদক’ ভূষিত হন। ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের ৭ই মে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএই দিনে
পরবর্তী নিবন্ধসরকার কর্তৃক প্রদত্ত বীর নিবাসের যথাযথ বাস্তবায়ন চাই