সবুজ পাহাড়ে দুর্বৃত্তের আগুন

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ১৬ জানুয়ারি, ২০২১ at ৫:৪৮ পূর্বাহ্ণ

বিকেল সাড়ে চারটা। কালো ধোঁয়ার ঢেকে গেছে নগরীর আকবর শাহ এলাকার আকাশ। দুর্বৃত্তের দেওয়া আগুনে পুড়ে বিরাণ হচ্ছে ওখানকার সবুজ পাহাড়। পাহাড়খেকোরা শুষ্ক মৌসুমে আগুন দিয়ে সবুজ গাছ-গাছালি পুঁড়িয়ে দেয়। পরবর্তী বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টিতে ধসে পড়ে এসব পাহাড়। এতে পাহাড়খেকোরা একদিকে মাটি বিক্রি করে। অন্যদিকে বসতি বানিয়ে শুরু করে প্লট বাণিজ্য।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদশীরা জানিয়েছেন, আকবরশাহ এলাকার রেলওয়ের ওই পাহাড়ে চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীরা মাদক সেবন করে। অনেক সময় তারাই আগুন লাগিয়ে দেয়। আবার পাহাড়খেকোরা দখল করার কৌশল হিসেবে শীত মৌসুমে প্রথমে সবুজ পাহাড়ে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়। পরে আগুন পুরো পাহাড়ে ছড়িয়ে পড়ে। দিনরাত জ্বলে আগুন নিভে যাওয়ার পর পুরো পাহাড় ন্যাড়া হয়ে যায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, ‘এখানকার পাহাড়ে বড় কোন গাছ নেই। আগুনে পাহাড়ের ছোট ছোট গাছপালা, আগাছা পুড়ে যাওয়ার পর দখলকারীরা কলাগাছ লাগিয়ে দেয়। কলাগাছের গোড়ালি নরম হওয়ায় বর্ষা আসলে আস্তে আস্তে পাহাড় ধসে পড়ে। পরে পাহাড়ের মাটি বিক্রি করে দেয়। পাহাড়গুলোতে টিনের ছাউনি দিয়ে বসতি নির্মাণ করে। এরপর কম আয়ের মানুষের কাছে পাহাড়ি প্লটগুলো বিক্রি করে দেয়। এভাবে সরকারি পাহাড় অবৈধভাবে দখল হয়ে যায়।’ নগরী কাট্টলী সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. তৌহিদুল ইসলাম দৈনিক আজাদীকে বলেন, ‘আকবরশাহে সরকারি প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন অনেক পাহাড় রয়েছে। বেশিরভাগ মালিকানা রয়েছে রেলওয়ের। ওখানে শিপিং কর্পোরেশনের মালিকানাধীন পাহাড়ও রয়েছে। সরকারি মালিকানাধীন ওইসব পাহাড় দখল হয়ে গেছে। আকবরশাহ এলাকার যে অংশের পাহাড়ে আগুন দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে সেখানে আমরা তদন্ত তদন্ত করে জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসব।’
পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগরের উপপরিচালক মিয়া মাহমুদুল হক দৈনিক আজাদীকে বলেন, ‘পরিবেশ আইনে পাহাড় কর্তন ও মোচনের বিষয়ে উল্লেখ থাকলেও পাহাড় পুড়িয়ে দেওয়ার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো বিষয় উল্লেখ নেই। তবে আগুন দিয়ে পোড়ানোর মাধ্যমে যদি পাহাড় মোচনের চেষ্টা থাকে তাহলে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেবো।’

পূর্ববর্তী নিবন্ধএরশাদের নাম বাদ দিয়ে সম্পূরক অভিযোগপত্র
পরবর্তী নিবন্ধসরকারি নিয়মেই বেসরকারিভাবে টিকা আমদানি করতে হবে