বিশ্বাসের স্থান নড়বড়ে হয়ে যখন অবিশ্বাস নামক ঘুণপোকা মনের মধ্যে আশ্রয় নিয়ে চরম যন্ত্রণা ও কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়ায় তখন বুঝতে হবে মনে সন্দেহের জন্ম হয়েছে। এটি মানুষকে যন্ত্রণার চরম পর্যায়ে নিয়ে জীবনে সুন্দর চলার পথকে বিষিয়ে তোলে। এটা একটা মানসিক রোগ। সন্দেহের এই ঘুণপোকা যার মস্তিষ্কে ধারণ করবে তার কথায় ও আচরণে অস্বাভাবিকতা, অসংলগ্নতা দেখা দেয়। এই ধরনের ব্যক্তিরা কোনো কারণ ছাড়াই যে কোনো বিষয়ে উত্তেজিত হয়ে ওঠে। যখন বিশ্বাস অবিশ্বাসের দোটানায় এর বসবাস হয় তখন তার মাঝে কোনো যুক্তি বা প্রমাণের প্রয়োজন হয় না। সে অনড় থাকে তার ভ্রান্ত ধারণা ও ভ্রান্ত বিশ্বাস নিয়ে। এটা পুরুষ বা নারী উভয়ের ক্ষেত্রে দেখা যায়। এই অবিশ্বাসের দাবানলে জ্বলে অনেকে নিজেকে যেমন শেষ করে দেয়, তেমনি যার উপর সন্দেহ তাকেও চরম অশান্তি তে থাকতে হয়। আবার দেখা যায় অনেকে আত্মহত্যা এবং খুন করতেও দ্বিধা করে না। আমরা অনেকে এই সমস্যাকে গুরুত্ব দিতে চাই না। যদিও এটা সিজোফ্রেনিয়া নামক মানসিক রোগ, এবং তার যথাযথ চিকিৎসা না নিলে অনেক ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে। এই ধরনের রোগী বিপরীত লিঙ্গের সাথে প্রতিনিয়ত খারাপ আচরণ করে। আবার দেখা যায় অলস মস্তিষ্কে শয়তানের কারখানা হয়।এসব লোকের মনে বেশি ভর করে। অনেকে আছেন কর্মস্থলে একটু ফিটফাট হয়ে গেলে, অফিস থেকে দেরিতে ফিরলে, ফেসবুক এ বন্ধু- বান্ধবী বেশি এড থাকলে, বেশি রাত অনলাইনে থাকলে, বিপরীত লিঙ্গের প্রশংসা করলে আরও অনেক কারণে সন্দেহের বশীভূত হয়ে স্বামী-স্ত্রী উভয়ই অশান্তির সৃষ্টি করে। এটা কারোরই জন্য কাম্য নয়। একটা ব্যাপার ঠিক যে, সন্দেহ মনে থেকে দূর করে যদি বিশ্বাসের ভিত্তিটা মজবুত করে একে অপরের নিজস্বতা কে সুন্দর চোখে দেখা বা শ্রদ্ধা রাখলে ভুলবোঝাবুঝি অনেকটা মন থেকে দূরে চলে যাবে। বিশেষ করে অনেক স্বামী রা আছেন তার স্ত্রীর নিজস্বতাকে সম্মান করে না বরং এটা করা যাবে না, ওটা করা যাবে না এমন একটা মানসিক চাপে রাখে। মনে রাখা উচিত স্বাধীনতাকে চাপের মুখে ফেলা মানে নিজের উপর সম্মান ও শ্রদ্ধাবোধ কমে যাওয়া তাছাড়া দূরত্বের সৃষ্টি হয়। অহেতুক সন্দেহের সৃষ্টি মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত করে ফেলে। প্রত্যেকের উচিত মিথ্যা সন্দেহের দ্বারা অবিশ্বাসের ডালপালা সৃষ্টি না করে মনকে সুন্দর ও পবিত্র করে সুস্থ, সুন্দর ও স্বাভাবিক জীবন যাপনে একে অপরকে সাহায্য করা। কারণ এমন সংঘাতের ভয়াবহতার প্রভাব আপনার সন্তানের উপর পড়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। তাই অসুন্দর দৃষ্টিকে পরিহার করে সুদূরপ্রসারী সুন্দর চিন্তাধারার মাধ্যমে একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ রেখে যেকোনো বিষয়াদি দুজনের আলোচনার মাধ্যমে মিথ্যা সন্দেহ দূর করা উচিত। এতে একটি সংসার সুন্দর হবে আবার সেই সংসারের সন্তানাদিও ভালো ভাবে গড়ে উঠবে।