দুই মাস আগে শ্বাসের সঙ্গে দুর্ঘটনাবশত ভার্সা সাহুর নাকফুলের একটি স্ক্রু ভেতরে চলে যায়। বিষয়টি নিয়ে মাথা ঘামাননি তিনি। ভেবেছিলেন স্ক্রুটি পেটের মধ্যে গেছে। স্বাভাবিক নিয়মেই সেটি বের হয়ে যাবে। কিন্তু না। স্ক্রুটি আসলে পেটে যায়নি। এটি চলে গিয়েছিল ফুসফুসে। সেখানেই এটি গেঁথে ছিল। এতে কয়েকসপ্তাহ ধরে অস্বস্তি এবং শ্বাসকষ্টে ভুগেছেন ভার্সা। অবশেষে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সেটি বের করে এনেছেন চিকিৎসকরা।এমন ঘটনা ‘অত্যন্ত বিরল’ বলেই ভাষ্য চিকিৎসকদের। ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায়। খবর বিডিনিউজের।
নিজের বাড়ি থেকে ফোনে বিবিসি–কে ঘটনাটি বর্ণনা করেছেন ভার্সা সাহু। ৩৫ বছর বয়সী এই নারী অন্য নারীদের মতোই বিয়ের প্রতীক হিসেবে নাকফুল পরতেন। বিবিসি–কে ভার্সা জানান, নাকফুলটি ১৬–১৭ বছর আগে বিয়ের সময় থেকেই পরে ছিলেন তিনি। তার কথায়, ‘বুঝতে পারিনি, স্ক্রু ঢিল হয়ে গেছে। আমি গল্প করতে করতে গভীর শ্বাস নিতেই বুঝতে পারলাম, স্ক্রু ঢুকে গেল। ভাবতে পারিনি, স্ক্রুটি আমার শ্বাসনালীতে ঢুকে যাবে। আমি ভেবেছিলাম, হয়ত পেটে চলে গেছে।’ ভার্সার এ ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে, যখন স্ক্রুটি ফুসফুসে যাওয়ার এক মাস পর তিনি অবিরাম কাশি, ঠাণ্ডা এবং নিউমোনিয়া নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যান। প্রাথমিকভাবে তিনি চিকিৎসকের কাছে শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে বলে জানান। সিটি স্ক্যানে দেখা যায়, ফুসফুসে গেঁথে আছে একটি বস্তু। পরে বুকের এক্সরে করে দেখা যায় জিনিসটি কী। প্রথমে ফাইব্রিওপটিক ব্রঙ্কোস্কোপ (ছোট্ট ক্যামেরা লাগানো সাঁড়াশি) শ্বাসনালীর ভেতর দিয়ে ঢুকিয়ে স্ক্রুটি বের করার চেষ্টা করেন চিকিৎসক। কিন্তু এই সাঁড়াশি দিয়ে স্ক্রুটি ধরতে পারা যায়নি। এরপর ভার্সাকে পাঠানো হয় আরেক চিকিৎসক দেবরাজ জশের কাছে। তিনি মেডিকা সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালের একজন ফুসফুস বিশেষজ্ঞ। তিনি ফাইব্রিওপটিক ব্রঙ্কোস্কোপ দিয়েই স্ক্রুটি বের করতে চেষ্টা করার সিদ্ধান্ত নেন। শেষ পর্যন্ত ৩০ মিনিটের ওই অপারেশন সফল হয়েছে এবং ভার্সাকে চারদিন পর হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়।