তীব্র এই শীতে মা তার সন্তানকে উষ্ণতায় জড়িয়ে ধরে ওম দিবে কিংবা স্ত্রী তার স্বামীকে উষ্ণ চাদরে জড়িয়ে কাঁপুনির তীব্রতা বুঝতে দিবে না । যারা ভালো আছে তাদের জন্য শীত মানে নতুন কিছু নয় ঋতুর পরিবর্তন মাত্র কিংবা বিনোদন ও উৎসব পর্ব । কিন্তু বাংলাদেশের যারা ভালো থাকে না তাদের জন্য ঋতুর এই পরিবর্তন শীত হচ্ছে ঠাণ্ডার সাথে যুদ্ধ করা । যাদের কাছে ক্ষুধা নিবারণের জন্য খাদ্য জোগাড় করাই মূল বেঁচে থাকা সেখানে শীত থেকে বাঁচার কোন অস্ত্র তাদের নেই । গরম কাপড়ের অভাবে চরম শীতকষ্টে ভুগছে দরিদ্র পরিবারের শিশু ও বৃদ্ধরা। বিশেষ করে কৃষি শ্রমিকরা সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে। কনকনে ঠাণ্ডা উপেক্ষা করে সময়মতাে কাজে বের হতে পারছেন না অনেক শ্রমিক। কমে গেছে তাদের আয়-রাজগারও। অনেকেই খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে। প্রতিদিন। হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে রোগীর ভিড়। ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হতে হচ্ছে শিশু ও বৃদ্ধদের। এ ছাড়া শ্বাসকষ্টসহ শীতজনিত রােগে আক্রান্ত রােগীর সংখ্যাও বাড়ছে। এর সঙ্গে দেখা দিয়েছে শীতকালীন নানা রাগব্যাধি । বিশেষ করে ঠাণ্ডাজনিত নানা অসুখে কাবু হয়ে পড়েছেন বৃদ্ধ ও শিশুরা। দুর্ভোগে পড়েছে ছিন্নমূল ও নিম্ন আয়ের মানুষ। করােনা মহামারী আরও সংকটে ফেলেছে মানুষজনকে। শীত পড়ার আগে যদি তাদের মাঝে শীতবস্ত্র দেওয়া হতো তা হলে অনেকেই শীতের হাত থেকে রক্ষা পেত। দুস্থ ও ছিন্নমূল মানুষদের পক্ষে একদিকে শীতবস্ত্র ও লেপ-কম্বল কিনে শীত নিবারণকরা যেমন দুরূহ, অন্যদিকে পুষ্টিহীনতার কারণে রােগ প্রতিরােধের ক্ষমতাও তাদের কম। ফলে শীতজনিত বিভিন্ন রােগে তারাই আক্রান্ত হয় বেশি। তাই আমরা বলব, হতদরিদ্র মানুষকে শীতবস্ত্র সরবরাহ সরকারের সামর্থ্যেরে বাইরে নয়। আমাদের প্রত্যেকের বাড়ির আলমারীতেই এমন একটা অংশ আছে যা বেশ কিছু পুরোনো কিন‘ ব্যবহারযোগ্য জামাকাপড়ে ভরে রয়েছে । কিন্তু সেগুলি জামাকাপড় ব্যবহার না করায় আমাদের কোনো কাজে আসে না । তাই আমরা সেই ধরনের জামাকাপড় গুলো সংগ্রহ করে অথবা অর্থ সংগ্রহ করে সেগুলি শীতে কষ্ট পাওয়া মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারি। অথবা আপনারা নিজ সাধ্যমতো পুরোনো বস্ত্র কিংবা মন চাইলে নতুন শীত বস্ত্র দিয়ে, নগদ টাকা সংগ্রহ করে ব্যবহার উপযোগী কম্বল লেপ বিতরণ করে সকলের সহযোগিতা শীতার্তদের পাশে দাঁড়ান।
ইমরান হোসাইন
শিক্ষার্থী : গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়।