আবদুর রাজ্জাক – বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও জ্ঞানতাপস। রাষ্ট্র, অর্থনীতি, ইতিহাস, রাজনীতি, শিক্ষা – প্রভৃতি বিষয়ে ছিল তাঁর অসাধারণ পাণ্ডিত্য। আজীবন ব্যাপৃত ছিলেন জ্ঞান অন্বেষায়, জ্ঞান সাধনায়। আর তা অনুরাগীদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতেও ছিলেন সদা সচেষ্ট। আজ এই জ্ঞান তাপসের ১৯তম মৃত্যুবার্ষিকী।
আবদুর রাজ্জাকের জন্ম ১৯১৪ সালে ঢাকা জেলার পারা গ্রামে। ১৯৩৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাজনৈতিক অর্থনীতি বিভাগে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়ে এম.এ পাস করে একই বিভাগে প্রভাষক পদে যোগ দেন। পরবর্তী সময়ে অর্থনীতি ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান আলাদা বিভাগ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হলে আবদুর রাজ্জাক রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক হন। শিক্ষক হিসেবেই পেশাগত জীবন থেকে অবসর নেন তিনি। তাঁর জ্ঞানের পরিধি ছিল অত্যন্ত গভীর ও বিস্তৃত। জ্ঞান অন্বেষণের জন্য অনেকেই তাঁর সান্নিধ্যে এসেছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সহ অনেক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, বুদ্ধিজীবী তাঁর অনুগামী ছিলেন। এদের দৃষ্টিতে আবদুর রাজ্জাক ছিলেন ‘শিক্ষকের শিক্ষক’।
ষাটের দশকে আইয়ুব বিরোধিতার কারণে ‘শিক্ষকতায় অমনোযোগিতা’র অভিযোগ এনে পাকিস্তান সরকার তাঁকে চাকরিচ্যুত করার উদ্যোগ নেয়। ব্যাপারটি আদালত পর্যন্ত গড়ায় এবং আদালতে সরকার অভিযোগ প্রমাণে ব্যর্থ হলে আবদুর রাজ্জাককে চাকরিচ্যুত করা সম্ভব হয় না। তাঁর লেখালেখির সংখ্যা নেহাতই অল্প। প্রকাশিত কোনো গ্রন্থও নেই। তবে অসাধারণ পাণ্ডিত্য ও জ্ঞান বিতরণে বিশেষ অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার ১৯৭৫ সালে তাঁকে ‘জাতীয় অধ্যাপক’ হিসেবে সম্মানিত করে। ১৯৯৯ সালের ২৮ নভেম্বর এই মহান মনীষী প্রয়াত হন।