দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে থাকায় দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ফের ২১ শ ছাড়িয়ে গেছে, দৈনিক শনাক্তের হার পেরিয়ে গেছে ১০ শতাংশ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ২ হাজার ১৮৭ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এ পর্যন্ত শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর মোট সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৫ লাখ ৬৪ হাজার ৯৩৯ জন। এর আগে সর্বশেষ ৮ ডিসেম্বর স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এক দিনে এর চেয়ে বেশি রোগী শনাক্তের তথ্য দিয়েছিল, সেদিন ২ হাজার ২০২ জনের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছিল। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত একদিনে পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ছিল ১০ দশমিক ৪৫ শতাংশ। খবর বিডিনিউজের।
দৈনিক শনাক্তের হার সর্বশেষ এর চেয়ে বেশি ছিল গতবছরের ২৭ ডিসেম্বর। সেদিন পরীক্ষার তুলনায় রোগী শনাক্তের হার ছিল ১০ দশমিক ৫৩ শতাংশ। এরপর কমতে কমতে তা ৩ শতাংশের নিচেও নেমেছিল। তবে মার্চের শুরু থেকে সংক্রমণ বাড়তে থাকায় শনাক্তের হারও বাড়তে থাকে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত এক দিনে আরও ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। সব মিলিয়ে মৃতের মোট সংখ্যা পৌঁছেছে ৮ হাজার ৬২৪ জনে। বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ১ হাজার ৫৩৪ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন গত এক দিনে। তাতে এ পর্যন্ত সুস্থ রোগীর মোট সংখ্যা বেড়ে ৫ লাখ ১৭ হাজার ৫২৩ জন হয়েছে। বাংলাদেশে গত বছর ৮ মার্চ করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ার এক বছর পর গত ৭ মার্চ শনাক্ত রোগীর সংখ্যা সাড়ে ৫ লাখ ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে গত বছরের ২ জুলাই ৪ হাজার ১৯ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ শনাক্ত। প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বিশ্বে শনাক্তের দিক থেকে ৩৩ তম স্থানে আছে বাংলাদেশ, আর মৃতের সংখ্যায় রয়েছে ৪১তম অবস্থানে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশের সরকারি-বেসরকারি ২১৯টি ল্যাবে ২০ হাজার ৯২৫টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৪৩ লাখ ৪৯ হাজার ১৯৪টি নমুনা। এ পর্যন্ত সরকারি ব্যবস্থাপনায় নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৩৩ লাখ ১৯ হাজার ৮৭২টি। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হয়েছে ১০ লাখ ২৯ হাজার ৩২২টি। গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার আরও বেড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ছিল ১০ দশমিক ৪৫ শতাংশ। এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১২ দশমিক ৯৯ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯১ দশমিক ৬১ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৩ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত এক দিনে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ১২ জন পুরুষ আর নারী ৪ জন। তাদের প্রত্যেকেই হাসপাতালে মারা গেছেন। ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ে মারা যাওয়া ১৬ জনের মধ্যে ১২ জনেরই বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। এছাড়া ১ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে এবং ৩ জনের বয়স ছিল ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে। মৃতদের মধ্যে ১৩ জন ঢাকা বিভাগের, ১ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ১ জন খুলনা বিভাগের, ১ জন রাজশাহী বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।