লিবিয়ার দক্ষিণপূর্বাঞ্চলের একটি শহরে বন্দি হয়ে থাকা ১০৭ জন অভিবাসন প্রত্যাশীকে মুক্ত করেছে দেশটির সিআইডি পুলিশ। তাদের মধ্যে নারী ও শিশু রয়েছে। সোমবার বেনগাজির অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) মুখপাত্র ওয়ালিদ আলোরাফি জানান, কিছু অভিবাসন প্রত্যাশীর বক্তব্য অনুযায়ী তাদের সাত মাস ধরে বন্দি করে রাখা হয়েছিল আর তারা ইউরোপে যেতে চায়। খবর বিডিনিউজের।
এসব অভিবাসন প্রত্যাশী আফ্রিকার সাহারা মরুভূমি সংলগ্ন বিভিন্ন দেশের নাগরিক হলেও তাদের বড় একটি অংশ সোমালিয়ার। আলোরাফি বলেন, গত রাতে কুফরা শহরের কেন্দ্রস্থলে একটি গোপন আস্তানায় অভিযান চালাই আমরা। সেখানে নারী, শিশু ও বৃদ্ধসহ এসব অবৈধ অভিবাসীকে পাই। তাদের কারও কারও শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন ও গুলির দাগ আছে। কিছু প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য অভিবাসীদের সবাইকে অভিবাসন সংস্থার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। যে বাড়িতে অভিবাসন প্রত্যাশীদের বন্দি করে রাখা হয়েছিল সেই বাড়িটি সিআইডির বাহিনী গুড়িয়ে দিচ্ছে, সংস্থাটি সামাজিক মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও পোস্ট করেছে বলে রয়টার্স জানিয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে আসা অন্য ভিডিও ফুটেজগুলোতে অভিবাসন প্রত্যাশীদের শরীরে গুলির দাগসহ নির্যাতনের চিহ্ন দেখা গেছে। জরুরি বিভাগের কর্মীদের কিছু অভিবাসন প্রত্যাশীকে অ্যাম্বুলেন্সে তুলে নিয়ে যেতে দেখা গেছে। আলোরাফি জানিয়েছেন, কিছু অভিবাসন প্রত্যাশীর শারীরিক অবস্থা বেশ খারাপ। কুফরা শহরটি লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলি থেকে ১৭১২ কিলোমিটার দক্ষিণপূর্বে। ২০১১ সালে ন্যাটোর সমর্থনে সংঘটিত এক অভ্যুত্থানে লিবিয়ার নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফি ক্ষমতাচ্যুত ও নিহত হওয়ার পর থেকে দেশটি ইউরোপ গমনেচ্ছু অভিবাসন প্রত্যাশীদের প্রধান ট্র্যানজিট রুট হয়ে উঠেছে। দ্রারিদ্র ও সংঘাতময় পরিস্থিতি এড়াতে এসব অভিবাসন প্রত্যাশীরা দেশ ছেড়ে মরুভূমির কঠিন পথ পাড়ি দিয়ে লিবিয়ায় হাজির হচ্ছেন। সেখান থেকে ভূমধ্যসাগরের বিপজ্জনক জলপথ পাড়ি দিয়ে ইউরোপে পৌঁছানোর চেষ্টা করেন তারা। তবে তেল সমৃদ্ধ লিবিয়ায় কাজের জন্যও অনেক অভিবাসন প্রত্যাশী দেশটিতে গিয়ে জড়ো হচ্ছেন। জাতিসংঘের দেওয়া তথ্যে দেখা গেছে, ২০২৩ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত লিবিয়ায় ৪৩টি দেশের ৭ লাখ ৪ হাজার ৩৬৯ জন অভিবাসী বসবাস করছিল।