রাগ কলাবতীর সুরে সদারঙ্গের ২৭ তম উচ্চাঙ্গ সংগীত সম্মেলনের সূচনা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নগরীর থিয়েটার ইনস্টিটিউটে শুরু হওয়া সদারঙ্গের তিনদিনব্যাপী জাতীয় উচ্চাঙ্গ সংগীত সম্মেলন উৎসর্গ করা হয় উস্তাদ রশিদ খানকে। সম্মেলন উদ্বোধন করেন সুর সম্রাট আলাউদ্দিন খাঁ’র ভ্রাতুষ্পুত্র ও উস্তাদ আঁয়েত আলী খাঁ’র আত্মজ, বরেণ্য সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক শেখ সাদী খান। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, যারা উচ্চাঙ্গ সংগীত চর্চা করেন তারা অনন্য ব্যক্তিত্বের অধিকারী হন। তারা কখনও খারাপ হতে পারেন না। আমরা যারা গানবাজনা করি, তারা সকলে সদারঙ্গের কাছে ঋণী ২৭ বছর ধারাবাহিকভাবে এরকম অনন্য আয়োজন করার জন্য।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাব্বির ইকবাল বলেন, উচ্চাঙ্গ সংগীতের শ্রোতা তুলনামূলক কম হলেও তাদের মান উচ্চমার্গীয়, ঠিক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উপন্যাস ‘শেষের কবিতা’র মতো। এর মূল রস সকলে আস্বাদন করতে পারেন না। যদিও এ উপন্যাসটি নীলক্ষেতসহ সকল জায়গায়ই সহজলভ্য।
তিনদিনব্যাপী সম্মেলনের উদ্বোধন পর্বে সভাপতিত্ব করেন প্রফেসর ড. মুস্তাফিজুর ছিদ্দিকি। উদ্বোধন পর্বের পর শুরু হয় সদারঙ্গের শিক্ষার্থীদের সমবেত পরিবেশনা। পন্ডিত স্বর্ণময় চক্রবর্ত্তীর রচনা এবং সুরে রাগ কলাবতী রাগে নিবদ্ধ ‘মিতবা মোরা আঈ রে…’ বন্দিশটি পরিবেশন করেন শিক্ষার্থীবৃন্দ।
দ্বিতীয় পর্ব শুরু হয় রাজশাহীর আলমগীর পারভেজ সুমনের পটদীপ রাগ পরিবেশনার মধ্য দিয়ে। তার হৃদয়গ্রাহী আলাপ ও পুকারে ঋদ্ধ হন শ্রোতারা। তারপর তিনি খাম্বাজ রাগে একটি ঠুমরী পরিবেশন করেন। যন্ত্রানুষঙ্গে ছিলেন– তবলায় রাজীব চক্রবর্তী, হারমোনিয়ামে বিটু শীল, তানপুরায় মীর মোহাম্মদ এনায়েতুল্লাহ সানী এবং পল্লবী বড়ুয়া।
বাঁশীতে রাগ চারুকেশীতে মাতিয়ে রাখেন চট্টগ্রামের রণধীর দাশ। পরে তিনি একটি ধুন পরিবেশন করেন। তবলায় ছিলেন অমিত চৌধুরী দীপ্ত। রাগ মালকোষ এবং জয়জয়ন্তীতে আসর জমিয়ে তোলেন বর্ষীয়ান সঙ্গীতজ্ঞ পন্ডিত অসিত কুমার দে। তার দরদী আলাপ, তান, সরগম উপস্থিত দর্শক শ্রোতাদের মুগ্ধ করেন।