মেয়র ও সিডিএ চেয়ারম্যানের পদত্যাগ করা উচিত

জলাবদ্ধতা নিয়ে শাহাদাত ও বক্করের বিবৃতি

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ৯ আগস্ট, ২০২৩ at ৫:২৪ পূর্বাহ্ণ

জলাবদ্ধতা নিরসনে ব্যর্থতার দায় স্বীকার সিটি মেয়র ও সিডিএ চেয়ারম্যানকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন ও সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর। গতকাল এক বিবৃতিতে তারা এই আহ্বান জানান।

এতে বলা হয়, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) ও সিডিএর ব্যর্থতার কারণে নগরবাসী জলাবদ্ধতায় সীমাহীন কষ্ট পাচ্ছে। এ সময় সিডিএচসিক পরস্পরকে দোষারোপ করে তাদের ব্যর্থতা ঢাকার চেষ্টা করছে, যা ৭০ লক্ষ নগরবাসীর সাথে মশকরা করার শামিল। পরস্পরকে দোষারোপ করায় স্পষ্ট হয়, তাদের মধ্যে কোনো সমন্বয় নেই। তাই ব্যর্থতা স্বীকার করে সিটি মেয়র ও সিডিএ চেয়ারম্যানের উচিত পদত্যাগ করা।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে মেগা প্রকল্পসহ দুটি প্রকল্প চলমান আছে সিডিএর। নির্দিষ্ট সময়ে প্রকল্প দুটির কাজ শেষ না করে ব্যর্থ হয়েছে সিডিএ। আবার সিটি কর্পোরেশন দীর্ঘ ৯ বছরেও বারইপাড়া থেকে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত একটি নতুন খাল খননের কাজ শেষ করতে পারেনি। স্থানীয় সরকার আইন অনুযায়ীও এ সংস্থাটি ঠিকমতো নালানর্দমা পরিষ্কার করেনি। তাই মানুষ কষ্ট পাচ্ছে।

নেতৃবৃন্দ বলেন, অপরিকল্পিত নগরায়ন ও সমন্বয়হীনতার কারণে ক্রমান্বয়ে চট্টগ্রাম শহর ভারসাম্যহীন হয়ে উঠেছে। নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে ১১ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। ২০১৭ সালে সিডিএ ৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকার কাজ শুরু করেছিল। ২০২০ সালে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রকল্পের কাজ শেষ করতে না পারলেও উল্টো পুনর্মূল্যায়ন করে বরাদ্দ বাড়িয়ে ১১ হাজার কোটি টাকা করা হয়। এই সময়ে এসে বিপুল টাকা খরচ হলেও চট্টগ্রামবাসী এই প্রকল্পের কোনো সুফল পায়নি। বরং জলাবদ্ধতা আরো প্রকট আকার ধারণ করেছে। সমন্বিত পরিকল্পনার অভাবে এসব উন্নয়ন প্রকল্প আরো দুর্ভোগ তৈরি করছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, মাত্র কয়েকদিনের বৃষ্টিতেই নগরীর দুই তৃতীয়াংশ এলাকা হাঁটু থেকে কোমর পানি, এমনকি গলা পানিতে ডুবে গেছে। বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ফ্লাইওভারগুলোও পানিতে সয়লাব হয়ে গেছে। এতে দুর্ভোগের শিকার হন নগরবাসী। সিটি কর্পোরেশন ও সিডিএসহ অন্য সংস্থাগুলোর সমন্বয়হীনতার কারণেই এই দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। চট্টগ্রাম এখন বসবাসের অযোগ্য নগরী হয়ে উঠেছে।

নেতৃবৃন্দ বলেন, চসিক ঠিকমতো নালানর্দমাগুলো পরিষ্কার করছে না। তারা নতুন কোনো খাল খনন করতে পারেনি। এ কারণে নগরের ড্রেনেজ ব্যবস্থা অকার্যকর হয়ে পড়েছে। ফলে জলাবদ্ধতা বেশি হচ্ছে। এখন আরো নতুন নতুন এলাকা প্লবিত হচ্ছে। ভারী বৃষ্টিতে বছরে অন্তত ১০ বার শহর পানিতে ডুবেছে। খালগুলোর মুখে জলকপাট এখনো চালু করতে পারেনি। আবার সংস্থাগুলো যে যার মতো করে কাজ করে যাচ্ছে। এর খেসারত দিচ্ছেন নগরবাসী।

তারা বলেন, শহরের ৫৬টি খাল দখল করে গড়ে উঠেছে কয়েক হাজার অবৈধ স্থাপনা। কিন্তু এসব বিষয়ে সরকার এবং চট্টগ্রামের সেবা সংস্থাগুলোর কার্যকর কোনো প্রক্ষেপ নেই। মেগা প্রকল্পের নামে মেগা দুর্নীতির কারণে আজ নগরীর এই বেহাল দশা। এই সরকারের মন্ত্রীএমপিরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়। তারা আজ জনগণের পাশে নেই। তারা আগামী সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দুর্নীতি ও লুটপাটে ব্যস্ত।

বিবৃতিতে বলা হয়, মেয়র দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে কোনো কাজেই সফল হতে পারেননি। বিশেষ করে ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়াসহ যে হারে মশার উৎপাত বেড়েছে তাতে নগরবাসী আতঙ্কিত।

পূর্ববর্তী নিবন্ধভারী বর্ষণে প্রতিরাতেই কাটা হচ্ছে পাহাড়
পরবর্তী নিবন্ধচার জেলায় আজ ও কাল বন্ধ সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান