জোসেফ লিস্টার – খ্যাতনামা চিকিৎসাবিজ্ঞানী। ক্ষতস্থানে পচনরোধী ওষুধের আবিষ্কারক হিসেবে বিশ্বজুড়ে খ্যাতি লাভ করেন তিনি। তাঁর এই যুগান্তকারী আবিষ্কার আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানকে, বিশেষ করে শল্য চিকিৎসাকে এগিয়ে নিয়ে গেছে কয়েক ধাপ, জীবন রক্ষা করেছে অসংখ্য মানুষের। আজ তাঁর ১৯৩তম জন্মবার্ষিকী। জোসেফ লিস্টারের জন্ম ১৮২৭ সালের ৫ এপ্রিল লন্ডনে। ১৮৫২ সালে তিনি ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন থেকে চিকিৎসাবিজ্ঞানে গ্র্যাজুয়েট হন। পরবর্তী সময়ে গ্লাসগো, এডিনবার্গ এবং লন্ডনের কিংস কলেজ হাসপাতালে শল্য বিদ্যায় শিক্ষকতা শেষে রানির চিকিৎসক হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন। লিস্টার ছিলেন অত্যন্ত মেধাবি, ধীর-স্থির ও দক্ষ চিকিৎসক। সর্বোপরী ছিলেন নিঃস্বার্থ ও মানবতাবাদী। চিকিৎসক জীবনের শুরুতেই রোগীর ক্ষতস্থান পচে গ্যাংগ্রিনের মতো মারাত্মক রোগের বিভীষিকা তাঁকে পীড়িত করতো। সে সময় বিজ্ঞানী লুই পাস্তুর আবিষ্কার করেন যে, ক্ষতস্থানে জীবাণু সংক্রমণের জন্য দায়ী মূলত ব্যাকটেরিয়া। পাস্তুরের জীবাণুতত্ত্বের ওপর ভিত্তি করেই লিস্টার ব্রতী হন জীবাণুনাশক আবিষ্কারে। এই পর্যায়ে তিনি পরীক্ষামূলকভাবে কর্বোলিক অ্যাসিড আবিষ্কার করেন এবং জীবাণুনাশক হিসেবে তা অত্যন্ত সফল হয়। লিস্টার অনুধাবন করেন, ক্ষতস্থানে জীবাণু সংক্রমণ হতে পারে অস্ত্রোপচারে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি এবং ব্যবহারকারীদের হাতের স্পর্শেও। লিস্টার অস্ত্রোপচারের যন্ত্রপাতি, গজ, ব্যান্ডেজ, স্পঞ্জ প্রভৃতি নির্বীজন এবং সংশ্লিষ্টদের হাতে ব্যবহারের জন্য অ্যান্টিসেপটিক উদ্ভাবন করেন। এ ধরনের আবিষ্কারের আগে অস্ত্রোপচারজনিত সংক্রমণে মৃত্যুর হার ছিল অনেক বেশি। ১৮৮৩ সালে ‘ব্যারন’ উপাধি লাভ করেন মানবতাবাদী এই চিকিৎসক। লন্ডনের লিস্টার ইনস্টিটিউট অব প্রিভেনটিভ মেডিসিনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা তিনি। ১৯১২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি জোসেফ লিস্টার প্রয়াত হন।