মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, চট্টগ্রামের আয়োজনে গতকাল রোববার ‘মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস’ উপলক্ষে আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। হোটেল সৈকত বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন, চট্টগ্রাম এর ব্যাঙ্কুয়েট হলে আয়োজিত উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বিভাগীয় কমিশনারের প্রতিনিধি হয়ে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার আনোয়ার পাশা। বিশেষ অতিথি ছিলেন সিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) ফয়সাল মাহমুদ, পুলিশ সুপার সলি ইসলাম, এসএম শফিউল্লাহ, চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর বিভাগীয় কার্যালয় চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পরিচালক মো. জাফরুল্ল্যাহ কাজল, বিজিবির দক্ষিণ–পূর্ব রিজিয়ন চট্টগ্রামের উপ–মহাপরিচালক কর্নেল এস এম আবুল এহসান। আরো উপস্থিত ছিলেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর বিভাগীয় গোয়েন্দা কার্যালয়ের উপপরিচালক আবুল হোসেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মেট্রো উত্তর ও দক্ষিণ কার্যালয়ের উপরিচালক মুকুল জ্যোতি চাকমা। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম মেট্রোর (উত্তর) উপপরিচালক হুমায়ুন কবির খন্দকার।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, মানবসৃষ্ট যে সকল সমস্যা বিশ্ব মানবতার বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে মাদক সমস্যা তার মধ্যে অন্যতম। মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও পাচার রোধে বিশ্ব সমপ্রদায়ের সাথে বাংলাদেশও একাত্মতা ঘোষণা করে ঐক্যবদ্ধ ও সমন্বিত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। দেশের যুব সমাজকে মাদকাসক্তি থেকে মুক্ত রাখার প্রত্যয়ে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরসহ অন্যান্য আইন–শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর বিভাগীয় কার্যালয়, চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পরিচালক মো. জাফরুল্যাহ কাজল তার বক্তব্যে বলেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ২০১৬ সাল থেকে সারাদেশ তথা চট্টগ্রামে ধারাবাহিকভাবে ব্যাপক পরিসরে মাদকবিরোধী জনসচেতনতামূলক প্রচার কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এ দিবস উপলক্ষে নানা ধরনের কর্মসূচির সঙ্গে মাদকবিরোধী গোলটেবিল বৈঠক, রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, ফুটবল প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছাড়াও সরকারি–বেসরকারি নিরাময় কেন্দ্রগুলো ফ্রি কাউন্সেলিং করে থাকে। পাশাপাশি মাদকের সরবরাহ হ্রাসে মাদক অপরাধীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা, মামলা রুজু, মামলা তদন্ত, আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল, মোবাইল কোর্ট পরিচালনা ইত্যাদি কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। ২০২২ সালে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম ২৪ হাজার ৩১৮টি অভিযান, ৩ হাজার ৮৭৩টি মামলা পরিচালনা করে। এর মধ্যে ৪ হাজার ৬২১ জন গ্রেপ্তার ও ৩২৭ জন আসামি সাজাপ্রাপ্ত হয়। এদিকে দিবসটি উপলক্ষে চট্টগ্রাম থেকে পৃথক তিনটি ক্যাটাগরিতে রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় মোট ১৯ জন ছাত্র–ছাত্রীর মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। প্রধান অতিথি বিজয়ী ছাত্র–ছাত্রীদের ক্রেস্ট ও সনদ বিতরণ করেন।
প্রসঙ্গত, ১৯৮৮ সাল থেকে বাংলাদেশে ২৬ জুন জাতিসংঘ ঘোষিত মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস পালিত হয়ে আসছে। এ বছর ২৬ জুন ঈদুল আযহার ছুটি থাকায় সরকার দিবসটিকে ৩০ জুলাই পালনের সিদ্ধান্ত নেয়। দিবসটি উপলক্ষে ইউএনওডিসি এ বছরের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করে– ‘মানুষই মুখ্য। মাদককে না বলুন, শক্তিশালী প্রতিরোধ গড়ে তুলুন’। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।