মন ফুরফুরে করা ফুরোমন পাহাড়

যেখানে দেখা মেলে মেঘের লুকোচুরি খেলা

বিজয় ধর, রাঙামাটি | শনিবার , ৬ জানুয়ারি, ২০২৪ at ৯:১৮ পূর্বাহ্ণ

পাহাড় আর অরণ্যের শহর পার্বত্য রাঙামাটি। যেখানে প্রকৃতি সারা বছর ভিন্ন ভিন্ন ঋতুতে ভিন্ন রূপ ধারণ করে। পাহাড়ের এমন প্রকৃতি যেন স্বর্গীয় সৌন্দর্যের প্রতিচ্ছবি। প্রকৃতির এমন নৈসর্গিক সৌন্দর্য সবচেয়ে কাছ থেকে দেখা যায় ‘ফুরোমন’ পাহাড়ে উঠে। এটির অবস্থান রাঙামাটি সদরের সাপছড়ি এলাকায়। পাহাড়টির উচ্চতা ১ হাজার ৫১৮ ফুট। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে যা প্রায় ২ হাজার ৬০০ ফুট উঁচুতে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পাহাড়ে উঠতে হলে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়। তবে একবার উঠে গেলে মন ফুরফুরে হয়ে যায়। এর সৌন্দর্য দেখে বিমোহিত হবে না এমন লোক পাওয়া দুষ্কর। পাহাড়ে ওঠা যায় দুই দিক দিয়ে। একটি হচ্ছে চট্টগ্রামরাঙামাটি সড়কের সাপছড়ি শালবাগান এলাকা দিয়ে, অন্যটি রাঙামাটি সদরের শুকরছড়ি এলাকার সুউচ্চ পাহাড় পাড়ি দিয়ে।

ফটিকছড়ি থেকে রাঙামাটির ফুরোমন পাহাড়ে ভ্রমণে আসা মো. সেলিম বলেন, এর আগেও আমরা পাহাড়ে উঠেছি কিন্তু এবারের অনুভূতিটা আগের চেয়ে ভিন্ন। তিনি বলেন, আমরা বন্ধুরা সবাই মিলে প্রায় দুই ঘণ্টার চেষ্টায় পাহাড়ে উঠতে পেরেছি। উঠার সময় যে কষ্টটা হয়েছিল এখানে এসে প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখে সব কষ্ট দূর হয়ে গেছে। এখানে এসে নিজেকে হারিয়ে ফেলেছি অন্যকোনো গ্রহে। বর্তমানে ফুরোমন পাহাড়টি স্থানীয়দের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থানের পর্যটকদের কাছে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। পাহাড়ে উঠলে দেখা মেলে চারিদিকে সবুজের সমারোহ। শীতল বাতাসে উপভোগ করা যায় সূর্যাস্ত এবং সূর্যোদয়ের অপরূপ দৃশ্য। পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে অজানা অসংখ্য ফোটা ফুল মনে দেয় অন্যরকম পুলক।

রাঙামাটি শহরের বাসিন্দা শুভ মন্ডল বলেন, সত্যি বলতে কি ফুরোমন পাহাড় আগে তেমন আকর্ষণীয় ছিল না। কিন্তু এখন ফেসবুকের কারণে অনেকটা পরিচিত লাভ করেছে। তিনি বলেন, বর্তমানে এখানেও সাজেকের মতো মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন নীল আকাশ ও মেঘের ছোঁয়া নিতে। যারা পাহাড় ভালোবাসেন এবং অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় তারা একবার এসে ঘুরে যেতে পারেন।

স্থানীয় পর্যটক অনুজ চৌধুরী বলেন, ভারতের মেঘালয়ে মেঘের যে রাজত্ব তা আমরা এই ফুরোমন পাহাড়ে এসে উপলব্ধি করতে পারছি। চট্টগ্রাম থেকে রাঙামাটি বেড়াতে আসা শিক্ষার্থী দিপা চৌধুরী বলেন, এখানে এসে মেঘের ছোঁয়া পেয়ে খুবই ভালো লাগছে। রাঙামাটি শহরের স্থানীয় পর্যটক দ্বীপ ভৌমিক জানান, জীবনে প্রথমবার এই ফুরোমন পাহাড়ে উঠলাম। সেই খুব ভোর বেলায় বাসা থেকে রওনা হয়েছি। এখানে এসে প্রকৃতির অপরূপ যে লীলাখেলা দেখলাম তা নিজ চোখে না দেখলে কখনো বিশ্বাস করতে পারতাম না।

কাপ্তাই সুইডেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী প্রথম বড়ুয়া বলেন, ভোর ৩টায় বের হয়েছি। এখানে এসে যখন পৌঁছাই তখনও অন্ধকার ছিল। আস্তে আস্তে যখন সূর্যোদয় হলো তখন মনে হচ্ছে স্বর্গীয় রূপ দর্শন করছি। নিজ হাত দিয়ে আকাশের মেঘকে ছোঁয়া যায় এই পাহাড়ে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআনোয়ারায় ৩৩ ভোট কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ
পরবর্তী নিবন্ধকক্সবাজারে নৌবাহিনীর কন্টিনজেন্ট পরিদর্শনে নৌ প্রধান