‘আওয়ামী লীগ নয়, আওয়ামী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে নির্বাচন হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন শেষে সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন। নাসিমন ভবন দলীয় কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন।
ফল প্রত্যাখ্যান করবেন কিনা জানতে চাইলে খসরু বলেন, আমাদের নির্বাচন আওয়ামী লীগের সঙ্গে হয়নি, হয়েছে আওয়ামী প্রশাসন, আওয়ামী আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং আওয়ামী সন্ত্রাসীদের সঙ্গে। যেটা নির্বাচনই হয় নাই সেটা প্রত্যাখ্যানের কী আছে। চট্টগ্রামে কোনো নির্বাচন হয়নি তা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আওয়ামী আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসন তাদের দায়িত্ব অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছে। অবৈধ সরকারের অধীনে, অবৈধ নির্বাচন কমিশনের অধীনে বিএনপির নির্বাচন করার একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল, আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। আমাদের কমিটমেন্ট গণতন্ত্রের প্রতি। এজন্য সব জেনেশুনে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিয়েছে।
বিএনপির প্রার্থী শাহাদাত হোসেন জয়ী হয়ে গেলে কী করবেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, তোমার মুখে ফুল চন্দন পড়ুক। এজেন্ট বের করে দেওয়ার মূল কাজটি করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলায় বিএনপির ২০০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। কাউন্সিলর প্রার্থীদের ওপরও হামলা হয়েছে। ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীর হাত ভেঙে দিয়েছে। অনেক প্রার্থীকে মারধর করেছে। ভোট ডাকাতির সঙ্গে চরম নির্যাতন-নিপীড়ন করেছে। আর নির্বাচন কমিশন (ইসি) সরকারের তাঁবেদার হিসেবে কাজ করেছে।
তিনি বলেন, নির্বাচনকে ঘিরে আওয়ামী লীগ চট্টগ্রাম নগরীতে ‘সন্ত্রাসীদের মিলনমেলা’ তৈরি করেছে। চট্টগ্রামের উত্তর-দক্ষিণের বিভিন্ন এলাকা থেকে নিয়ে এসেছে। খোলামেলাভাবে তারা অস্ত্রের মহড়া দিয়েছে। নির্বাচনে প্রত্যেকটি কেন্দ্রে ছিল বহিরাগতদের আনাগোনা। তারা চট্টগ্রাম সিটির নির্বাচনে পাঁচশর বেশি কেন্দ্র দখল করেছে। কেন্দ্র দখলের পাশাপাশি আমাদের দলীয় কর্মী, এজেন্টদের মারধর করেছে এবং বের করে দিয়েছে। সিটি নির্বাচনকে ঘিরে কমপক্ষে বিশটি মামলায় বিএনপির কয়েক হাজার নেতাকর্মীকে আসামি করেছে।
তিনি বলেন, এ সরকারের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না, এটি আর প্রমাণ করার কিছু নাই। অনির্বাচিত সরকার হওয়ার পরও জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে বিএনপি নির্বাচন করেছে। এ অবৈধ সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
আমীর খসরু বলেন, নির্বাচনী প্রচার শুরুর পর ২০টি মামলা দিয়ে কয়েক হাজার নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দেওয়া হয়েছে। এখনো বাড়ি ফিরতে পারছেন না নেতাকর্মীরা। ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডে হালিশহরের ওসি নিজে সব কেন্দ্র থেকে এজেন্ট বের করে দিয়েছে।
তিনি বলেন, নির্বাচনের আগে মক (পরীক্ষামূলক ভোট) ভোটের নামে ইভিএমে জালিয়াতি করা হয়েছে। আগের রাতে ব্যালটের ভোট চুরি করেছে। এবার ইভিএমেও রাতে ভোট চুরি করেছে। কয়েকটি কেন্দ্রে আগের রাতে ইভিএম চালু করে ভোট দেওয়া হয়েছে। কোনো কোনো কেন্দ্রে ইভিএমে ধানের শীষ প্রতীকের বোতাম ছিল না। কোনো কেন্দ্রে ধানের শীষে ভোট দিলে আম প্রতীকে চলে গেছে।